শিক্ষার্থীদের মধ্যে শারীরিক যোগাযোগ নিষিদ্ধ করেছে চেমসফোর্ড, এসেক্সের হাইল্যান্ডস স্কুল। তাদের দাবি শিশুদের নিরাপদ রাখতেই এই পদক্ষেপ। উচ্চবিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এবার থেকে শিক্ষার্থীরা একে অপরকে স্পর্শ করতে এবং কোনো রোমান্টিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না। স্কুলটির এই নির্দেশিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অভিভাবকদের একাংশ। তাদের দাবি এই ধরনের নিয়মের জেরে শিশুরা নিজেদের শৈশব হারিয়ে পেশাদার আচরণ শেখার দিকে এগিয়ে যাবে। প্রধান শিক্ষক মিস ক্যাথরিন ম্যাকমিলানের পাঠানো একটি চিঠিতে বলা হয়েছে যে স্কুলের কর্মীরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘কোনও শারীরিক যোগাযোগ’ অনুমোদন করবেন না।
একজন অভিভাবক ব্যাখ্যা করেছেন, তারা ৯ জানুয়ারি পাঠানো চিঠির আগে নতুন নীতি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলছেন, ‘বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। এই যুগে, এরকম কোনো নিয়ম থাকতে পারে । একদিকে স্কুল বলছে একে অপরকে স্পর্শ করতে পারবে না, এদিকে স্কুল শিক্ষার্থীদের শেখাচ্ছে না কিভাবে একটি সুস্থ সম্পর্ক রাখতে হয়। শিশুরা জানে না কোনটি উপযুক্ত বা কোনটি নয়, এই নতুন নিয়মের মাধ্যমে তাদের সহপাঠিদের সাথে সহানুভূতি দেখানোর ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আমার একটি মেয়ে আছে।
সে এবং তার বন্ধুরা একে অপরকে আলিঙ্গন করে অভিবাদন জানায়, কিন্তু তারা যদি এখন তা না করে তবে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।’চেমসফোর্ড স্কুলের প্রেরিত চিঠিতে শারীরিক যোগাযোগের ধরনগুলি ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে : ‘কোন আক্রমণাত্মক শারীরিক যোগাযোগ, আলিঙ্গন, হাত ধরা, কাউকে চড় মারা ইত্যাদি এই নিয়মের আওতায় পড়বে ।আপনার সন্তানকে সুরক্ষিত রাখার জন্য এটি করা হয়েছে। যদি আপনার সন্তান অন্য কাউকে তার সম্মতি ছাড়াই স্পর্শ করে, তাহলে অনভিপ্রেত কিছু ঘটে যেতে পারে। ওপর শিশুটির আঘাত লাগতে পারে অথবা সে অস্বস্তি বোধ করতে পারে। যদিও আমরা চাই যে আপনার সন্তানরা সত্যিই ইতিবাচক বন্ধুত্ব তৈরি করুক। আমরা চাই যে আপনার সন্তান স্কুলে থাকাকালীন তাদের শেখার দিকে মনোনিবেশ করুক এবং আমরা চাই না যে তারা সম্পর্কের সমস্যাগুলির দ্বারা বিভ্রান্ত হোক। আপনার সন্তানের ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য আমরা ইতিবাচক, স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের বিষয়ে শিক্ষা দিই এবং আপনার সন্তানের যদি প্রয়োজন হয় তবে সহায়তার জন্য স্কুলে একজন বিশ্বস্ত প্রাপ্তবয়স্কের সাথে কথা বলতে পারে।”
এদিকে অভিভাবকরা বলছেন কোনো বন্ধু পড়ে গেলে তাকে সাহায্য করতে ওপর বন্ধু সাহায্যের হাত বাড়িয়েই দেবে। এটাই স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। কিন্তু এখন তারা সেসব করতে না পারলে ক্রমে একে ওপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। কারণ মহামারীর পরে এমনিতেই মানুষের মধ্যে যোগাযোগ কমে গিয়েছিলো স্কুলের এই নতুন নিয়মের নিগড়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা আবারো সেই পুরোনো দিনগুলিতে ফিরে যাবে। যার প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ।হাইল্যান্ডস স্কুলের নির্বাহী প্রধান শিক্ষক মিসেস মার্গারেট ক্যালাগান বলেছেন: ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদ এবং খুশি থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সবসময় অভিভাবকদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি।অধিকাংশ পিতামাতা এবং ছাত্ররা এই নীতিকে সমর্থন করে যা পারস্পরিক শ্রদ্ধার জন্ম দেয় এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য পেশাদার আচরণ করতে উৎসাহিত করে। ” সূত্র :metro.co.uk