শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৩৮৭তম সভা অনুষ্ঠিত অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে দ্রুত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে -আমান শ্রীমঙ্গলে নারী চা শ্রমিক-কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য নিয়ে সংলাপ কালীগঞ্জে সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম : আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বগুড়ার শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত-নিহতদের স্মরণসভা দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে-রেজাউল করিম বাদশা দুর্গাপুরে আইনজীবীদের মানববন্ধন কয়রায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ সভা ও সাংস্কৃতিক ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মুন্সীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে জলঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ দুর্গাপুরে শেষ হলো দুইদিন ব্যাপি কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণ

কোম্পানীগঞ্জেও হারিয়ে যাচ্ছে শীতের সুস্বাদু খাদ্য খেঁজুরের রস

সিরাজ উল্লাহ (কোম্পানীগঞ্জ) নোয়াখালী :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৩

নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জে শীতের সকালে এক যোগেরও সময়ের আগে চোখে পড়তো রসের হাড়ি ও খেজুর গাছ কাটার সরঞ্জাম সহ গাছির গ্রাম অঞ্চলের আঁকা বাঁকা পথে ব্যস্ততার দৃশ্য। সাত সকালে খেজুরের রস নিয়ে গাছিরা বাড়ি বাড়ি হাকডাক দিতেন। শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই বাড়ি বাড়ি চলতো খেজুরের রস কিংবা রসের পাটালি গুড় দিয়ে মজাদার পিঠাপুলির আয়োজন। তবে গ্রামবাংলার এ দৃশ্য এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। তার প্রধান কারণ বিভিন্ন অজুহাতের কারনে খেজুর গাছ নিধন হাওয়া। এতে দিনে দিনে কোম্পানীগঞ্জেও কমছে খেজুরের গাছ। দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে খেজুরের রসও। শীত মৌসুম ঘনিয়ে আসতেই কোম্পানীগঞ্জ বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছের রস আহরণের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখতো এক সময়ের গাছিরা। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক এই মধুবৃক্ষ (খেজুর গাছ) ঘিরে গ্রামীণ জনপদে শুরু হতো বাড়িতে বাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশ। বর্তমানে তুলনামূলক ভাবে কোম্পানীগঞ্জ বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে খেজুর গাছ অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। কিছু বড় ছোট গাছ থাকলেও গাছির অভাবে ডাল কেটে রস আহরন করা সম্ভব হয়না।ফলে গ্রাম অন্ঞলের আর মেঠোপথের ধারে কিছু গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এই খেজুর গাছ আজ অস্তিত্ব সঙ্কটে। মনে হচ্ছে আগামী এক যোগের পর নতুন প্রজন্মকে বই দেখে খেজুর গাছের মিষ্টি রসের কবিতা শুনা ছাড়ায় আর উপায় থাকবেনা। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আবুল কাশেম জানান, এইতো কয়েক বছর আগে এক হাড়ি খেজুর রস বিক্রি করতো ১০০থেকে ২০০ টাকা দরে। এখন খেজুর গাছ না থাকায় এবং গাছির অভাবে সে রসের দাম বেড়ে হয়েছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে।উপজেলার রামপুর, মুসাপুর, চরহাজারী ইউনিয়নের দুরবর্তী গ্রামে কিছু সংখ্যক গাছের রস গাছিরা পেলেও তা চাহিদার তুলনায় অতি নগন্য বলা যায় ৫ শতাংশেরও কম হারে। উপজেলার গ্রামের বাসিন্দাদের অভিমত শুনে জানা গেছে, ইটের ভাটায় ব্যাপক ভাবে খেজুর গাছ ব্যবহার করায় এবং বসতবাড়ী তৈরি করতে গিয়ে গাছ কেটে ফেলায় খেজুর গাছ কমে যায়। ফলে দিন দিন খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুর গাছের রস। শীত মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে রস সংগ্রহের প্রস্ততিতে ব্যস্ত থাকেন গাছিরা। যে গাছের রসের বাহাদুরি থাকতো পুরা শীতকাল জুঁড়ে। রসের হরেক রকম বাহাদুরিতে চাউলের সেমাই, রাব (রসকে আগুনে সিদ্ধ লাল করে) দিয়ে রুটি খাওয়া, গুড় তৈরি, ভাপা পিঠা দিয়ে সকাল বিকাল কনকনে শীতের সকালে সুস্বাদু খেজুরের রসের নানান আয়োজন। বলা যায় সেই রসের আনন্দ অনেকটাই বিলুপ্তীর পথে এগুচ্ছে। সকালে গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটিকে বলা যায় এক ধরনের আমাদের বাংলার রস শিল্প। তার জন্য দরকার হয় বিশেষ দক্ষতা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য থেকে যায় অলৌকিক রহস্য। খেজুরের রস থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে হরেক রকমের গুড় তৈরি করে থাকেন গাছিরা। দিন দিন এই শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। এই শিল্প পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ প্রশিক্ষন প্রাপ্ত গাছি তৈরি করে এবং পরিকল্পিত ভাবে পথে পথে খেজুরের গাছ রোপন করতে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ প্রয়োজন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com