মানুষ গড়ার মহান কারিগর শিক্ষক সমাজ। জাতির দ্বিতীয় পিতাও বলা যায় নিঃসন্দেহে। অথচ পিরোজপুর জেলার মধ্যে বহু বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল সরকারি না হওয়ায় মানবতার জীবন যাপন করছে স্ব স্ব শিক্ষক সমাজ। আর সেই কারণে বাদ যায়নি স্বরূপকাঠি উপজেলার মধ্যে সোহাগদল ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগদল বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল। শত বাঁধা বিপত্তি উপেক্ষা করে আজও শত সংগ্রাম করে টিকে আছে। অথচ সেই ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পশ্চিম সোহাগদল বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল। তৎকালীন সময়ে এলাকার স্বার্থে দুইজন শিক্ষানুরাগীর সমন্বয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠা করার মহান উদ্যোগ নেন। এলাকার দুইজন মিলে মোট ৩৮ শতাংশ সম্পত্তি দান করে প্রতিষ্ঠানের নামে। দাতা হিসেবে ছিলেন মুজাফার আলী গরামী ও এনতাজ উদ্দিন গরামী। শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে জ্বলো আর সেই মিশন নিয়ে পশ্চিম সোহাগদল ইউনিয়নের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল। অথচ আজও সত্যিকার অর্থে আলোর মুখ দেখতে সক্ষম হয়নি। নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল। চলতি সময়ে ছাত্র ছাত্রী সন্তোষ জনক। সর্বমোট চলতি বছরে ১০৭ জন কোমল মতি শিক্ষার্থী রয়েছে এপ্রতিষ্ঠানে। দীর্ঘ সময় পার করে অবশেষে ২০১৭ সালে নিজ বিদ্যালয়ে সমাপনী শুরু হয়। গত বছর থেকে প্রাইমারী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।পাঠদানের অনুমতি পান গত ০৩/০৩/১৯৯৭ সালে। যার স্মারক নম্বর ৩৩২/৬ এবং দলিল নম্বর ৩৬২। ১৩/০৩/১৯৪৫ সালে৩৮ শতাংশ সম্পত্তি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়।যার দাগ নম্বর ৫৮২/৫২৭ এবং মৌজা পশ্চিম সোহাগদল। চলতি সময়ে ই এম আই এম কোর্ড ০০৫০২০৬০২১৭ এবং বিদ্যালয়ের কোর্ড ৪৬৮৩৯২ সিরিয়াল। অথচ এত কিছুর পরেও আজও নুতন দিগন্তের নব সূর্যোদয় উপভোগ করতে সক্ষম হয়নি পশ্চিম সোহাগদল বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল। সরকারি করন না হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সমাজ দারুণ বেকায়দায়। ডিজিটাল যুগে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে সর্বত্র। অথচ আজও উন্নতি হয়নি বেসরকারি প্রাইমারী স্কুলর। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষানুরাগী সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আঃ রশীদের সুনজর সবসময় ছিল। অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আঃ রশীদ নিজ উদ্যোগ নিয়ে কোমল মতি শিক্ষার্থীদের জন্য রাস্তা নির্মাণ সহ বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ আলোর ব্যাবস্থা করেন। অথচ আজও সঠিক দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়নি। আর সেই কারণে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সমাজ দারুণ বেকায়দায় রয়েছে। আর্থিক অবস্থার দৈন্যদশা ফুটে উঠেছে সর্বত্র। যদিও চক্ষু লজ্জায় মুখ খুলে কিছু বলতে চায়না জাতির দ্বিতীয় পিতা খ্যাত শিক্ষক সমাজ। এ ব্যাপারে কথা হয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মোঃ আকতার উজ্জামানের সাথে কথা হয় জেলার ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের। একান্ত আলাপ চারিতায় তিনি অকপটে বলেন, আসলে সরকারি করন না হওয়ার কারণে আমি সহ প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক বৃন্দ দারুণ সংকটময় অবস্থায় আছেন। মুখ খুলে কেহ কিছু বলতে পারে না।আসলে একটা কঠিন সময় অতিবাহিত করছি আমরা। মিডিয়ার আর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা প্রসেস অনুযায়ী সব কিছু করে যাচ্ছি যত্রতত্র ভাবে। আমি শতভাগ নিশ্চিত আমাদের বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল সরকারি করন হবে ইনশাআল্লাহ। এ ব্যাপারে জেলার প্রাইমারী শিক্ষা অফিসার গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, সরকারের সদিচ্ছার কোন ঘাটতি নেই। পর্যায়ে ক্রমে হয়েছে তবে হয়তো সময় একটু বেশি লাগছে। তিনি আশাবাদী খুব শ্রীঘ্রই আলোর মুখ দেখবে। তবে স্বরূপকাঠি উপজেলার প্রাইমারী শিক্ষা অফিসার (নাম না প্রকাশের শর্তে) গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, এত পুরনো প্রতিষ্ঠান কিন্তু এখনো সরকারি হয়নি। আসলেই এটা এক ধরনের লজ্জা বলা যায়। কি অদৃশ্য কারণে থমকে আছে তা আজও অজানাই রয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিগত সময় থেকেই জায়গা জমি সহ সব কিছু ঠিকঠাক মতো চলে আসছিল। কিন্তু কি কারণে থামকে যায় তা বলতে দারুণ অপারগ। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এলাকার বেশীরভাগ লোকজন গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন সোহাগদল ইউনিয়নের স্বার্থে পশ্চিম সোহাগদল বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল সরকারি করন হোক। পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রী সহ মাননীয় মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপির কাছে জোরালো দাবী, “ পশ্চিম সোহাগদল বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল সরকারি করনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। দলমত নির্বিশেষে এলাকার সুশীল সমাজের লোকজন গণমাধ্যম কর্মীদের জ্ঞাতার্থে আরও বলেন সরকারি করন না হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক সহ সকল স্টাফরা অর্ধাহারে অনাহারে জীবন কাটাচ্ছে।