শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
মাধবদীতে লোডশেডিং ও গরমে ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে চার্জার ফ্যানের বৃষ্টি প্রার্থনায় অঝোরে কাঁদলেন বরিশালের মুসল্লিরা আদিতমারীতে গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মশালা নওগাঁয় বোরো ধানের সোনালী শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন ছড়ার পানিই ভরসা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর চকরিয়ায় একাধিক অভিযানেও অপ্রতিরোধ্য বালুখেকো সিন্ডিকেট রবি মওসুমে নওগাঁ জেলায় ৮৮ হাজার ১১০ মেট্রিকটন ভূট্টা উৎপাদনের প্রত্যাশা কটিয়াদীতে প্রচন্ড তাপ প্রবাহ, বৃষ্টির জন্য সালাতুল ইসস্তিকা বরিশালে দাপদাহে স্বাস্থ্য সুরক্ষার্থে শেবাচিম হাসপাতালে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা শুরু কালীগঞ্জে রাতের অন্ধকারে কৃষি জমির মাটি লুট

ঢাকা মহানগরীকে বসবাসের উপযোগী রাখতে হবে

খবরপত্র ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৩

বসবাস উপযোগিতার জন্য মধ্যযুগে ঢাকা, বাংলা অঞ্চলের শাসনের কেন্দ্রে আসে। বিভিন্ন সময় শাসকরা এর প্রাকৃতিক পরিবেশের আরো উন্নতি করেছে, কেউ অবনতি ঘটায়নি। দুর্ভাগ্য, সবচেয়ে আধুনিক শাসকদের আমলে ঢাকা পানিশূন্য ও গাছশূন্য হয়ে গেছে। এই ধ্বংসলীলা অব্যাহত থাকলে নিশ্চিত বিপর্যয় হবে। এ আশঙ্কায় পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো জলাভূমি উদ্ধার ও সবুজায়নের দাবি তুলছে। একটি সংগঠন ঢাকায় আবাসন প্রকল্পে ২৫ শতাংশ সবুজায়ন নিশ্চিত করার দাবি তুলেছে। আবাসিক এলাকা নির্মিত হলে সেখানে একটি নির্দিষ্ট অংশ অবশ্যই সবুজ গাছ রাখার আইনি বাধ্যবাধকতার কথা বলেছে তারা। মূলত বায়ুদূষণ রোধে তাদের এই তাগিদ। গত বছর ঢাকা সারা বিশ্বে বায়ুদূষণের শীর্ষে অবস্থানে উঠে আসে। বলা হচ্ছে, ঢাকার বাতাসে কার্বন মনোঅক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড ও ওজোন গ্যাসের মতো মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর উপাদানের পরিমাণ পরিমিত মাত্রার চেয়ে আশঙ্কাজনক বেশি। শীতকালে বায়ুদূষণ ভয়াবহ হয়ে ওঠে। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণাধীন স্থাপনা, বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের এখনো কোনো পদক্ষেপ নেই।
গত শনিবার ‘সবুজ আন্দোলন’ নামে সংগঠনটি তাদের আলোচনায় আরো জানায়, প্রতি বছর একজন সুস্থ ব্যক্তির নিঃশ্বাস নিতে ৭৮৬ গ্রাম অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। এ জন্য প্রতি কাঠায় সাত থেকে আটটি গাছ থাকা প্রয়োজন। তারা জানাচ্ছে, প্রয়োজনের তুলনায় গাছ কিংবা সবুজ এলাকা একেবারে নগণ্য। এ জন্য তারা নদী ও খাল দখলমুক্ত করা এমনকি এগুলোর পাড় উদ্ধারের পরামর্শ দিয়েছে। একইভাবে শহরের ফুটপাথ উদ্ধার করে তার একটি অংশ এবং দোকান ও বাসার সামনে টবে গাছ লাগিয়ে শহরে ২ শতাংশ পর্যন্ত সবুজায়ন বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে তারা মত দিয়েছে। এ ব্যাপারে জোরালো প্রচার চালানো দরকার। কারণ ঢাকার পরিবেশের আশঙ্কাজনক অবনতি ঘটেছে। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে বায়ু, মাটি ও পানির মান বিবেচনায় শহরটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এ অঞ্চলে মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণ দূষণ। এ অবস্থায় ঢাকায় বসবাসযোগ্যতা বাড়ানোর প্রসঙ্গ আলোচনায় আসছে। শহরে জলাধার সংরক্ষণ, নির্মাণ কর্মকা-ে নিয়মকানুন অনুসরণ ও সবুজ বেষ্টনী তৈরি করার কথা বলা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশে সব মিলিয়ে প্রায় তিন কোটি মানুষ বসবাস করে। জনস্বাস্থ্যের দিকটি বিবেচনায় নির্মল বসবাসের উপযোগী ঢাকা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেয়া উচিত। রাজধানী ও আশপাশ এলাকায় পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়েছে মাত্র কয়েক দশকের মধ্যে। দেশ স্বাধীন হওয়ার সময়েও এখানে পর্যাপ্ত জলাধার ও সবুজ এলাকা ছিল। ঢাকা ও এর আশপাশ জালের মতো নদী-নালা ও বহু বিচিত্র জলাধার ছড়ানো ছিটানো ছিল। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের সাথে এর বিশেষ পার্থক্য ছিল না। এখনো সারা ঢাকায় এর চিহ্ন দেখা যায়।
কর্তৃপক্ষ ঢাকায় বিপুল উন্নয়ন কর্মকা- হাতে নিয়েছে। এতে পরিবেশ উপযুক্ত গুরুত্ব পায়নি। ফলে সামনে রাজধানীর পরিবেশ দূষণের আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। মানুষই যদি সুস্থ বসবাস করতে না পারে তাহলে এত উন্নয়ন দিয়ে কী হবে? পরিবেশ আন্দোলনকারী, নগর বিশেষজ্ঞ সবাই একই ধরনের প্রস্তাব করছে। সরকার এসব ব্যাপারে অবগত থাকলেও বাস্তবতা মেনে অগ্রসর হয়নি। তারা পরিবেশ দূষণ রোধে এখনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ অবস্থায় আবাসিক এলাকায় ২৫ শতাংশ সবুজায়ন রাখার প্রস্তাবটি তারা গ্রহণ করতে পারে। এ ব্যাপারে আবাসন ব্যবসায়ী ও বাড়িঘর নির্মাতাদের সম্মতি নিয়ে আইন তৈরি করতে পারে। তাহলে অন্তত দূষণ রোধে কিছুটা হলেও অগ্রসর হওয়ার পথ রচিত হবে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, আামদের নিজেদের স্বার্থেই ঢাকা মহানগরীকে বসবাসের উপযোগী রাখতে হবে। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বে সাতে বিবেচনা করবেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com