শেরপুরের শ্রীবরদীর কুড়িকাহনীয়া সাউথ কুরুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। তৃতীয় সিনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা এ অভিযোগ তুলেন।
অভিযোগে প্রকাশ, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কুড়িকাহনীয়া ইউনিয়নের কুড়িকাহনীয়া বাজার সংলগ্ন ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কুড়িকাহনীয়া সাউথ কুরুয়া উচ্চ বিদ্যালয়। দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের ভবন ছিল জরাজীর্ণ। গত বছর নতুন তিন তলা বিশিষ্ট একটি নতুন ভবন নির্মাণ হয়। এতে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে আসে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মাঝে। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪শ। গত বছর ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যান সাবেক প্রধান শিক্ষক মাওলানা আহমদ আলী। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিয়াউর রহমান মানিক ছিলেন দায়িত্বে। মেয়াদ শেষে শেরপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য একেএম ফজলুল হকের সুপারিশে আহবায়ক কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান। সম্প্রতি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হওয়ায় সভাপতি প্রথম সিনিয়র বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষক আব্দুল করিমকে দায়িত্ব না দিয়ে তৃতীয় সিনিয়র কম্পিউটার বিষয়ক শিক্ষক মঞ্জুরুল আলমকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। রহস্যজনক কারণে তৃতীয় সিনিয়র ব্যাক্তিকে দায়িত্ব দেয়ায় সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেন শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা।
সিনিয়র বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষক আব্দুল করিম বলেন, আমি এখানে দীর্ঘদিন থেকে চাকরি। আমি শিক্ষকদের মধ্যে সিনিয়র। অথচ আমাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব না দিয়ে রহস্যজনক কারণে তৃতীয় সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল আলমকে দায়িত্ব দেন। এটা অনেকেই মেনে নিচ্ছেন না। দ্বিতীয় সিনিয়র ব্যবসা বিষয়ক শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে থাকা সত্ত্বেও অন্যজনকে দায়িত্ব দেয়ায় সবাই প্রতিবাদ করছে। আমরা চাই নিয়ম মতো ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হোক। তিনি আরো বলেন, আমার সিনিয়র শিক্ষক না থাকলে আমি প্রাপ্য।
এ ব্যাপারে সিনিয়র কম্পিউটার বিষয়ক শিক্ষক মনজুরুল আলম বলেন, সভাপতি আমাকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমি দায়িত্ব পালন করছি। অনিয়ম দুর্নীতির অস্বীকার করে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান বলেন, তারা দু’জন দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করায় তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোশাররফ হোসেন
বলেন, সিনিয়র শিক্ষককে বাদ দিয়ে জুনিয়রকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়ার কোনো সুযোগই নেই। তবে যদি এ রকম ঘটনা ঘটে তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী তুলেছেন স্থানীয় অভিযোগকারী ও সচেতন মানুষরা।