পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মারিয়া আকতার তন্নী(১৬) নামে বাল্যবিয়ের শিকার দশম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ওই স্কুল ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত স্কুলছাত্রী উপজেলার ঘোষের টিকিকাটা গ্রামের দুবাই প্রবাসি হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে স্থানীয় কে.এম লতীফ ইনিষ্টিটিউশনে দশম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে আসছিলো। নিহত স্কুল ছাত্রীর পরিবারের দাবি শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের পর তার শ্বাসরোধ করে হত্যাকরা হয়েছে। এঘটনার পর স্কুলছাত্রী ওই গৃহবধূর স্বামী রাব্বী পলাতক রয়েছেন। তবে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তি পুলিশ নিহত গৃহবধূর স্বামী মজিবর রহমান, শ্বাশুড়ি শিরিন বেগম ও ননদ মাকসুদা আক্তারকে আটক করেছে। থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, মঠবাড়িয়ার ঘোষের টিকিকাটা গ্রামের দুবাই প্রবাসি মো. হাবিবুর রহমানের মেয়ে মারিয়া আকতার তন্নী মোবাইল ফোনে শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মজিবর রহামন এর ছেলে মিনহাজুর রহমান রাব্বির সাথে পরিচয় ঘটে। পরে তারা গত তিন মাস আগে পালিয়ে ঢাকা চলে যায়। এক পর্যায় তন্নীর পরিবারে চাপের মুখে বাড়িতে ফিরে আসে। এঘটনার পর স্থানীয় সাবেক দুই পৌর কাঊন্সিলরের মধ্যস্থতায় তাদের বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হয়। এ বিয়ের পর স্কুলছাত্রী তন্নী শহরের দক্ষিণ মিঠাখালী তিন নম্বর ওয়ার্ডে স্বামী রাব্বীর পিত্রালয়ে বসবাস শুরু করে। মেয়ে এ ভাবে চলে যাওয়ার বিষয়টি তন্নীর মা মেনে নিতে না পারায় সম্প্রতি সে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। ঘটনার দিন সোমবার সকালে স্কুলছাত্রী তন্নী তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই দিন বিকালে অসুস্থ অবস্থায় তন্নীকে শ^শুর বাড়ির লোক জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তন্নীর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে তাকে মারধরের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে বলে তন্নীর ভাই ও তার চাচা অভিযোগ করেন। তবে এ ঘটনায় তন্নীর শ্বশুর মো. মজিবর রহমান দাবি করেন, ছেলের স্ত্রী অভিমান করে নিজের হাত নিজে কেটে পরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহত স্কুল ছাত্রী তন্নীর ভাই মেহেদেী মুন্না অভিযোগ করেন, আমার বোন বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। ঘটনা দিন সকালে আমার বোন মোবাইলে কল দিয়ে আমাকে যেতে বলে । আমি যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে নিতে শুনি বোনকে হাসপাতালে ভার্তি করা হয়েছে। তাকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, হাসপাতাল হতে ওই স্কুলছাত্রী গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ হতে হত্যা মামলা দায়ের করলে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। গৃহবধূর স্বামী পলাতক রয়েছে।