শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:২৫ পূর্বাহ্ন

গোদাগাড়ীতে পুরোদমে চলছে বোরো চাষবাদ

আশ্রাফুল আলম (গোদাগাড়ী) রাজশাহী :
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৩

এরই মধ্যে সরিষা ফসল ঘরে তুলে বোরো ধান আবাদে মাঠে নেমেছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষকরা। চলতি মৌসুমে ৮৯ হাজার ১০০ টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বোরো ধানের চারা রোপণ চলছে জোরেসোরে। ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে বোরো ধানের ক্ষেত প্রস্তুত ও চারা রোপন করছেন শ্রমিকরা। তবে এবার শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বেশি, সেই সঙ্গে সার ও জ্বালানির মূল্য বাড়ায় গত বছরের তুলনাই এবার বোরো চাষাবাদে উৎপাদন খরচ বেশি পড়বে। তারপরও এ অঞ্চলের কৃষকেরা বোরো চাষ করছে। এখন কৃষি উপকরণের সহজলভ্যতা প্রাপ্তি নিশ্চিত হলে এবং চাষাবাদের পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবারও বোরোতে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন কৃষকরা। গোদাগাড়ী কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন, প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৫ হাজার ৩০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক বিনামূল্যে উফশী ও হাইব্রিড জাতের বোরো বীজসহ রাসায়নিক সার পেয়েছেন। যার মধ্যে হাইব্রিড ১০ হাজার ২০০ জন শুধু ২ কেজী করে হাইব্রিড বীজ ও ৫ হাজার ১০০ জনকে ৫ কেজী করে উফশী বীজ, ডিএপি ১০ কেজী, এমওপি ১০ কেজী করে রাসায়নীক সার দেওয়া হয়েছে। গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ৮শ” ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মৌসুমে এ উপজেলায় বোরো আবাদ হয়েছিল ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে। তবে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গত মৌসুমের সমান চাষবাদ হতে পারে বলেন জানান কৃষি অফিস। গোপালপুর গ্রামের কৃষক নয়ন বলেন, এবার ১৪ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছি। তার মধ্যে ১০ বিঘা জমিতে ধান লাগানো হয়ে গেছে। বাকী ৪ বিঘা জমি ধান লাগানোর জন্য তৈরী করছি। ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে এ জমিতেও ধান লাগা হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, ৫ বিঘা জমিতে সরিষা ছিলো। সরিষা তুলার পর ওই জমিতে ধান লাগাচ্ছি। পিরিজপুর গ্রামের কৃষক মো. সানোয়ার জানান, জমিতে বোরোর আবাদ করার জন্য পানি ছেড়েছি। ধান লাগানোর জন্য হ্যারো দিয়ে জমি তৈরীর কাজ করছি। ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে জমিতে ধানের চারা লাগানোর কাজ শুরু হবে। হাইব্রিড জাতের ধান বেশি করেছেন। শ্রমিকের পারিশ্রমিক বেশি, সেচ, সার ও কীটনাশকের দাম বেশি। অন্য বছরের তুলনায় এবার বোরো ধানের উৎপাদন খরচ বেশী হবে। বোগদাদারীর কৃষক লালু এ প্রতিবেদককে জানান, বোরোর আগে বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষার আবাদ করেছেন। বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৬ মণ করে ফলন পাওয়া গেছে। ওই ফসল বিক্রি করে বোরো চাষাবাদে অনেকটা সহায়ক হবে। পাশাপাশি তার সারা বছর ভোজ্য তেলের চাহিদা মিটবে। হ্যারো চালক মুক্তার বলে, এখন আমাদের সিজিন। দম ফেলার সময় নাই। পুরো দমে কৃষকের জমি চাষ করছি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে হ্যারো দিয়ে হাল দিচ্ছি। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ বিঘা জমি হ্যারো দিয়ে চাষ করি। বিঘা প্রতি ৩৫০ টাকা করে নিচ্ছি। গত বছর ৩০০ টাকা বিঘা চাষ করেছি। এবার তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ৩৫০ টাকা করে নিচ্ছি। স্থানীয় বর্গাচাষীরা বলেন, ইতোমধ্যে অনেক কৃষক বোরোর চারা রোপন শেষ করেছেন। আগামী সপ্তাহ খানেকের মধ্যে বোরোর চারা রোপন সম্পন্ন হবে। তবে এবার শ্রমিকের পারিশ্রমিক, সেচ ও রোপন খরচ বেশি হয়েছে। গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমেদ বলেন, চলতি মৌসুমে ১৪ হাজার ৮শ” ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ মাত্র ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩ হাজার ৪ শ” ২০ হেক্টর বোরোর চারা রোপণ শেষ হয়েছে। কৃষকরা সরিষা ফসল তোলার পর সেখানে বোরো চাষাবাদ করছেন। ফলে বোরোর চারা রোপণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে পুরোদমে বোরোর চাষাবাদ চলছে। পতিত জমিগুলোকে চাষাবাদের আওতায় আনতে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়াসহ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন ও কৃষি বিভাগ থেকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া ও পরিবেশ অনূকুলে থাকলে এবারও বোরোতে বাম্পার ফলন হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com