বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে : ডা.তাহের

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ তাহের।
তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার অবৈধ সরকার। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করে তারা দেশকে গভীর সঙ্কটে নিমজ্জিত করেছে। এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। এজন্য এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায়।
গতকাল শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত সহযোগী সদস্য সম্মেলন-২০২৩-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাহের বলেন, আজ তুরস্ক ও সিরিয়ায় যে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছে, তাতে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। আল্লাহ বলেছেন, আমি যখন প্রকম্পন সৃষ্টি করি, তা কি তোমরা লক্ষ্য করো না? এরপরও এক শ্রেণির মানুষ আল্লাহকে বিশ্বাস করে না। কুরআন মানে না। কিন্তু মৃত্যুবরণ করতে হবে, তা প্রত্যেক ব্যক্তিই অকপটে স্বীকার করে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা মানুষ হিসেবে খুবই দুর্বল। সুতরাং মৃত্যুর পূর্বেই আল্লাহর বিধানের কাছে আত্মসমর্পণ করে আমাদের পরিপূর্ণ মুমিন হতে হবে।’
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের তাকওয়া অর্জনের কথা বলেছেন। পৃথিবীতে মানুষ ব্যবসায় লাভ বুঝে। এজন্যই আল্লাহ তায়ালা কুরআনে প্রিয় বান্দাদের উত্তম ব্যবসার কথা বলেছেন। কারণ, ইসলামের আদর্শিক ব্যবসাই হচ্ছে পরকালীন মুক্তির নিশ্চয়তা।
‘মানব জাতির ইতিহাসে দু’টি ধারা রয়েছে, সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়, শাসক-শোষিত। আমরা ন্যায়ের সাথে আছি। ইতিবাচক ধারার সাথে আছি। আমরা নবী ও রাসূলদের উত্তরসূরী, হযরত আবু বকর, ওমর, উসমান ও আলীর উত্তরসূরী। তারা যুগে যুগে জীবন বিলিয়ে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিয়েছেন। পৃথিবীর বাঁকে বাঁকে আজকে মুসলিমরা নির্যাতনের শিকার। ন্যায় ও সত্যের জন্য তারা নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় আমাদেরকে বিপ্লবী চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। আমাদের মূল পরিচয় মু’মিন, মুসলমান।’ কুরআনের উদ্বৃতি দিয়ে ডা. তাহের বলেন, যারা সৎ কাজের আদেশ দেয়, অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার কথা বলে তারাই সফলকাম। জামায়াত সেই দল, যারা এই কাজটিই করে। ফলে আমরা সফলকাম। মুমিনদের ভয়ের কারণ নেই।
তিনি বলেন, রাসূল সা. যেমন আরবের মানুষের দ্বারে দ্বারে ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছিলেন, আমাদেরও মানুষের কাছে এই দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। এটা নবীওয়ালা দায়িত্ব, এটা ফরজিয়াত। তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামীর মতো আন্দোলন না থাকলে আল্লাহর পথে দানের ফরজিয়াত কিভাবে পালন করতাম। পৃথিবীর অনেক দেশে মানুষ এ ধরনের আন্দোলন সন্ধান করে। এই আন্দোলন একটা রহমত। আমাদের ইসলামের সঠিক ধারণা ও ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। উত্তম জিহাদ হচ্ছে জালেম শাসকের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলা। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ঈমানী দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো: ইজ্জত উল্লাহ ও মোবারক হোসাইন। আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আবদুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী যথাক্রমে দেলাওয়ার হোসাইন, কামাল হোসাইন, ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবু ফাহিম প্রমুখ।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল। সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। এ সময় উপস্থিত সহযোগীদের হাতে ১৪ হাজার রিপোর্ট বইসহ অন্যান্য উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। বিভিন্ন স্পটে গ্রুপভিত্তিক উপস্থিত হয়ে অনলাইনের মাধ্যমে সহযোগীরা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে অধ্যক্ষ মো: ইজ্জত উল্লাহ বলেন, ‘আমাদেরকে দুনিয়ার জীবন উপভোগ করার জন্য সৃষ্টি করা হয়নি। খিলাফতের জিম্মাদার হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে। জামায়াত এ দেশে আল্লাহর বিধান ইসলাম প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য ইসলামের সুমহান আদর্শকে আমাদের জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে। গণমানুষের কাছে ইসলামের অর্থনৈতিক দিক, ইসলামের আদর্শিক রাজনীতি, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা তুলে ধরার মাধ্যমে সবার কাছে জামায়াতের দাওয়াত দিয়ে আগামীর ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক দেশ গড়তে সহযোগী সদস্যদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জামায়াত কর্মী মানেই সমাজ কর্মী। সামাজিক কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে হবে। মানুষের বিপদে আপদে এগিয়ে আসতে হবে। বৈশ্বিক পরিবর্তন বার্তা দিচ্ছে, আগামীর বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে মুসলিম বিশ্ব। বাংলাদেশেও নেতৃত্বের চরম সঙ্কট চলছে। তারও একদিন অবসান হবে। ইনশাআল্লাহ।’
মোবারক হোসাইন বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। সুতরাং সফলতার শেষ পরিণতি নির্ণয় করতে হবে। জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং জান্নাত প্রাপ্তি, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় সফলতা। জামায়াতের একজন সহযোগী হিসেবে প্রত্যেককে দুনিয়ার জীবনের পরিবর্তে পরকালীন মুক্তিকে প্রাধান্য দিতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামি আন্দোলন আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় নেয়ামত।’ তিনি দেশে-বিদেশে ইসলামি আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, ইসলামি আন্দোলন করার কারণে ইসলামি আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতন হয়েছে। তারা হাসতে হাসতে জীবন দিয়েছেন। বিনা অপরাধে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলেছেন। তারা কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি। আপোস প্রস্তাবে কর্ণপাত করেননি। আমরা সেই আন্দোলনের উত্তরসূরী। আল্লাহর দ্বীনকে বাস্তবায়ন করতে হলে প্রতিরোধ, জুলুম-নিযার্তন হবে। তাই ইসলামি আন্দোলনের কর্মীদের যেকোনো জুলুম-নির্যাতন সহ্য করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। সবকিছু পদানত করে ইসলামকে বিজয়ী আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সংগঠনকে শক্তিশালী ও বিজয়ী আন্দোলনে পরিণত করতে হলে নিজেদেরকে গণমুখী করতে হবে। সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভসহ সমাজের সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে জামায়াতের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। একইসাথে ন্যাচারাল লিডার হিসেবে যারা গড়ে ওঠে, তাদেরকে ইসলামি আন্দোলনে সম্পৃক্ত ও আন্দোলনের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। এজন্য শক্তিশালী ও মজবুত সংগঠন গড়ে তুলে জনগণের মাঝে সংগঠনের কাজ ছড়িয়ে দিতে হবে। সততা ও যোগ্যতার দিক দিয়ে নিজেদেরকে যোগ্যরূপে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর শহীদ শীর্ষ নেতাদের পদচারণায় মুখরিত ছিল ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। সুতরাং মহানগরীর প্রতিটি ঘরে ঘরে ইসলামের আদর্শকে পৌঁছে দিতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে ইসলামি আন্দোলনের রাজধানীতে পরিণত করতে হবে। জীবনকে নিয়ে পরিবর্তনের জন্য প্রতিজ্ঞা করতে হবে। জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম করতে নিজেদের পরিশুদ্ধ করতে হবে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, সংগঠনের কর্মী হিসেবে যে কাজগুলো করার কথা বলছি, তা মূলত একজন ঈমানদার মুসলমানেরই কাজ। দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কাজ করছি। যে নামাজ পড়ে মুসুল্লি হয়েছি, সেই নামাজের দাবিই হচ্ছে দ্বীন ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করা। তাই দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ থেকে নিজেদের দূরে রাখা যাবে না। সহযোগী থেকে কর্মী হয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আরো অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com