বর্জ্যের দাপটে অস্তিত্ব সংকটে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার আখালি নদী। একসময় নৌকা চলাচল করতো আখালি নদীতে। উপজেলার টেংরাবাজারে প্রতি রোববার হাটের দিন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তরিতরকারীসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আসতেন মৌসুমী চাষীরা। এ নদী দিয়ে পন্যসামগ্রী নিয়ে যাতায়াত করতেন দূরদূরান্তের পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। কালের পরিক্রমায় এখন নদিটি খালে পরিনত হয়ে গেছে। বর্ষামৌসুমে নদীতে পানির প্রবাহ থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকেনা। বিভিন্ন পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। নদীটি এখন হয়ে গেছে যেন ময়লার ভাগাড়। নদীটির টেংরাবাজার অংশে অবস্থিত ব্রিজের নিচে নদীতে ফেলা হয়েছে বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির বিভিন্ন পচনশীল ও অপচনশীল ময়লা-আবর্জনা। ফলে নদীর সামান্য পানিটুকুও ধারণ করেছে কালচে রঙ। সমগ্র বাজার ও সংলগ্ন বাসাবাড়ীর বিপুল পরিমাণ বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে ভরাট হয়ে গেছে নদীটির তলদেশ। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নদীর পানিপ্রবাহ। দূষিত এসব বর্জ্য ও বজ্যের্র দূর্গন্ধে ভারী হয়ে আছে পরিবেশ। ফলে, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে পথচারী সবাই পোহাচ্ছেন ভোগান্তি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়- আখালি নদীটির উৎপত্তি হয়েছে রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়া থেকে। নদীটি লংলা, রাজনগর চাবাগান হয়ে টেংরাবাজারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হাকালুকি হাওরে গিয়ে মিশেছে। নদীতে আগে মাছ পাওয়া গেলেও এখন খুব বেশি মাছের দেখা মিলেনা। ময়লা-আবর্জনা ফেলায় এবং দীর্ঘদিন ধরে খনন ও সংস্কার না হওয়ায়, বর্ষাকালে ২/৩ মাস পানি থাকলেও পরে শুকিয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান- ময়লা আবর্জনা বাজারের নির্দিষ্ট স্থানে না ফেলে অনেকে সরাসরি নদীতে ফেলছেন। ফলে, বর্জ্যের দাপটে আখালি নদীটি এখন অস্তিত্ব সংকটে।