সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯ অপরাহ্ন

নদীবন্দি দেড়শ পরিবার, নেই রাস্তা-ব্রিজ

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

নদীবিধৌত গ্রাম- মহিবান্দী। আঁকাবাঁকা নদীর তীরে ‘দ্বীপ’ হিসেবে পরিচিত ‘মহিষবান্দী পুর্বপাড়া’। এখানে প্রায় দেড়শ পরিবারের বসবাস। ভাঙনের থাবায় বাড়িগুলোর চারপাশে বয়ে গেছে নদী। যার ফলে নদীবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষেরা। তাদের চলাচলের নেই কোন রাস্তা। পারাপারের জন্য আছে একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো। ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকো আর অন্যের কৃষি জমির আইল দিয়ে চলাফেরা করতে হয় মানুষদের। এতে নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে তারা। সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মহিষবান্দী পুর্বপাড়া (দ্বীপ) এলাকায় দেখা যায়, মানুষের সিমাহীন ভোগান্তির চিত্র। এই স্থানের ঘাঘটের ওপর ভাঙা বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে শিশু-শিক্ষার্থীসহ নানা বয়সের মানুষেরা। ওপারে পৌঁছে নেই কোন রাস্তা। বাধ্য হয়ে কৃষকের জমির আইল দিয়ে হেঁটে ওঠতে হয় মূল সড়কে। স্থানীয়রা যায়, ওইস্থানে কয়েক যুগ ধরে শতাধিক পরিবার বসবাস করে আসছেন। এখানকার সবগুলো পরিবার দরিদ্র সীমার নিচে জীবনযাপন। সেই থেকে অন্যের জমির আইল (ঘাটা) দিয়ে প্রায় ৬০০ মিটার হেঁটে প্রধান সড়কে পৌঁছাতে হয়। তৎকালীন বাড়িগুলোর তিন পাশে নদী থাকলেও উত্তর পাশে ছিলো না কোন নদী। এরই মধ্যে বছর দুয়েক আগে অব্যাহত ভাঙনে এখন বসতভিটার চারপাশে বয়ে গেছে নদীটি। একপর্যায়ে উত্তর পাশে বিশাল খালে পরিণত হয়েছে। যার কারণে নদীবন্দি হয়ে পড়েছে দ্বীপের মানুষেরা। সময়ের ব্যবধানে সমাজ উন্নয়ন তথা দেশের পরিবর্তন ঘটলেও আজও উন্নয়নে পরিবর্তন হয়নি এই দ্বীপের করুণ অবস্থা। জনপ্রতিনিধিদেরও নজরে আসেনি ওইস্থানে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বর্ষা মৌসুম এলেই নদীর পানি কানায় কানায় ভরে গেলে বেড়ে যায় আরও দুর্গতি। এছাড়াও হঠাৎ কোন রোগী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তার জীবন নির্ভর করে সময়ের উপর। একটু দেরি হলেই রোগীর জীবন অসহ্য যন্ত্রণাসহ ওখানেই মৃত্যুর প্রহর গুণতে হয়। এছাড়া শিক্ষার আলো থেকে ঝড়ে পড়ছে সন্তানেরা। এমনভাবে রাস্তা-ব্রিজের অভাবে কয়েক বছর ধরে লেগে আছে মানুষের চরম ভোগান্তি। বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি এই স্থানে রাস্তা নির্মাণসহ খালের ওপরে ব্রিজ নির্মাণ হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এটি বাস্তবায়ন হলে মানুষ নির্বিঘেœ যাতায়াত করাসহ শিক্ষিত হতে পারবে সন্তানেরা। স্থানীয় ব্যক্তি জামিরুল ইসলাম ও ফুল মিয়া বলেন, নিত্যদিন প্রয়োজনীয় কাজে নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়। এতে করে সময় নষ্টসহ ঝূঁকিতে থাকতে হয় জীবনের ভয়ে। এখানে একটি রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণের জন্য দাবি করছি। হাফিজার রহমান নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, আমি পেশায় ভ্যানচালক। আমাদের বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা ও ব্রিজ না থাকায় ভ্যানটি অন্যের বাড়িতে রাখতে হয়। রাতের বেলায় সেখান থেকে কৃষকের মাঠ হেঁটে বাড়িতে ঢুকতে হয়। সেই সঙ্গে রাস্তা ও ব্রিজ না থাকায় আমাদের ছেলে-মেয়েদের বিয়ে করাতে কঠিন বেগ পেতে হচ্ছে। এ বিষয়ে রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্যার স্বামী আমিনুল ইসলাম জানান, মহিষবান্দী পুর্বপাড়া গ্রামের মানুষদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। এখানে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণ অত্যান্ত জরুরি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিদের কাছে লিখিত আবেদন করা হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com