লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই দরবার শরীফের ফালগুন মাসের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। বাদ জোহর চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের উদ্বোধনী বয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াজ মাহফিল শুরু হয়। এবারের মাহফিলে আগত দেশি-বিদেশী শ্রোতাদের জন্য তিন’শ একর জমিতে ছয়টি মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশ-বিদেশ থেকে আগত শ্রোতাদের মাহফিল শুনতে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য টানানো হয়েছে সামিয়ানা। লাগানো হয়েছে প্রয়োজনীয় লাইট ও মাইক। ব্যবস্থা করা হয়েছে বাথরুমের। সড়কপথে গাড়ি রিজার্ভ করে যারা আসবেন তাদের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত যায়গা প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। সূত্রমতে, নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে নেককার ও আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে ১৯২৪ সাল থেকে চরমোনাই মাহফিলে মুসল্লিদের আগমণ শুরু হয়। তিন দিনের মাহফিলে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই ও নায়েবে আমীরুল মুজাহিদিন মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়েখ চরমোনাই সাতটি বয়ান করবেন। এছাড়াও দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য ওলামা মাশায়েখগণ আগত শ্রোতাদের দ্বীনের পথে চলার উৎসাহ যোগাতে বয়ান করবেন। মাহফিলের দ্বিতীয়দিনে আগত ওলামা মাশায়েখ ও বুদ্ধিজীবীদেরকে নিয়ে ওলামা মাশায়েখ বুদ্ধিজীবী সম্মেলন এবং তৃতীয়দিন ছাত্রদের নিয়ে ছাত্র সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও মঞ্চের বাহিরে সুবিধাজনকস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম সমাবেশ, শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষক সমাবেশ, যুবকদের নিয়ে যুব সমাবেশ, শ্রমজীবী মানুষের অংশগ্রহণে শ্রমিক সমাবেশ এবং মুয়াল্লালিমদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাহফিলে আগত শ্রোতাদের কয়েক হাজার ভাগে ভাগ করে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন মাদরাসা সমূহের মোয়াল্লিমদের মাধ্যমে তিনদিনে হাতে কলমে নামাজসহ জরুরি মাসআলা মাসায়েল প্রশিক্ষণ, সুরা ক্বেরাত প্রশিক্ষণসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি মাহফিলে আগত শ্রোতাদের জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য ১০০ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া ও ফ্রি ওষুধ দেয়া হবে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে বয়ান শেষে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী মাহফিলের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।