জেলার আখাউড়া উপজেলায় কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে গম চাষ হয়েছে। গম চাষে আগ্রহ বাড়াতে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের প্রণোদনা ও প্রকল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এ মৌসুমে গমের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি অফিস জানান চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু গম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ৫ হেক্টর জমিতে বেশী আবাদ হয়েছে। একাধিক কৃষক জানায়, ধান চাষের চেয়ে গম চাষে খরচ তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। ফলনসহ বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়া যাওয়ায় গম চাষে তাদের আগ্রহ বেড়েছে।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি অফিস আরও জানান আধুনিক পদ্ধতিতে গম চাষ, উৎপাদিত ফসল সঠিক মূল্যে বিক্রি করতে স্থানীয় পর্যায়ে কৃষক নতুন জাতের গমের প্রদর্শনী, সুষম সারের ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান ও বালাই দমনে কোয়ালিটি সমৃদ্ধ বালাইনাশক এবং হাইব্রিড জাতের বীজ সরবরাহ নিশ্চিতকরণে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। এছাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কর্মকর্তারা নিয়মিত ভাবে মাঠ পরিদর্শন করছেন।
গম চাষি লিয়াকত মিয়া জানান, সরকারি প্রণোদনা পেয়ে তিন বিঘা জমিতে গম আবাদ করছেন তিনি। ধানের চেয়ে গম চাষে খরচ কম। পাশাপাশি উৎপাদন দ্বিগুণ হয় বলে জানান তিনি। কৃষক হারুন মিয়া জানান, তিনি গত ৫ বছর ধরে গম আবাদ করছেন। এ মৌসুমে তিনি ৩৩ শতাংশ জমিতে গম চাষ করেছেন। নিয়মিত জমির পরিচর্যার পাশাপাশি ছত্রাকসহ নানা ধরনের রোগবালাই থেকে বাঁচতে বালাইনাশক স্প্রে করছেন।
মনিয়ন্দ এলাকার কৃষক আব্দুল গফুর মিয়া বলেন, চলতি মৌসুমে তিনি কৃষি বিভাগের পরামর্শে জমিতে বারি-৩৩ জাতের গম চাষ করেছেন। ধানের চেয়ে গম চাষে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এজন্য গত দুই বছর ধরে তিনি গম চাষে করছেন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার গমের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত মাঠে কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে আসছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম গত বছরের তুলনায় এবার গমের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। গম চাষের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো তাও ছাড়িয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুশান্ত সাহা বলেন স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল গম উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের সার্বিক ভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষকদের প্রণোদনা ও প্রকল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে ।