সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন

নির্দিষ্ট মেয়াদে নিশ্চিত হচ্ছে না টেলিটকের ফাইভ-জি সেবা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

নির্দিষ্ট মেয়াদে নিশ্চিত করা যাচ্ছে না টেলিটকের ফাইভ-জি সেবা। গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ফাইভ-জি সেবা দিতে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। ২০২১ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। আগামী ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজ সেভাবে এগোয়নি। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ৪৩টি প্যাকেজের মধ্যে মাত্র ৮টি প্যাকেজের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি প্যাকেজের কাজ শেষ করতে আরও সময় চেয়েছে প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি) থেকে জানা গেছে, প্রকল্পের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে— নতুন তিন হাজার বিটিএস সাইট তৈরি করা। এতে রুম, টাওয়ার, লক ইত্যাদি থাকছে। টেলিটকের নিজস্ব ৫০০ টাওয়ার এবং ২ হাজার ৫০০ টাওয়ার শেয়ারিং সাইট প্রস্তুত করা হবে। সেবা সক্ষমতা বাড়াতে ৩-জি ও ৪-জি’র বিদ্যমান দুই হাজার সাইটের যন্ত্রপাতির ধারণক্ষমতা বাড়ানো হবে। ফিক্সড ওয়্যারলেস এক্সেজ (এফডব্লিউএ) প্রযুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে ঢাকার বাইরে হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিস-আদালতে ইন্টারনেট সেবা বাড়াতে পাঁচ হাজার এফডব্লিউএ ডিভাইস স্থাপন করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে আধুনিক প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। ৪-জি প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক টেলিযোগাযোগ সেবা দেওয়াসহ ৫-জি প্রযুক্তিনির্ভর মোবাইল নেটওয়ার্কের প্রস্তুতি শুরু হবে। এতে বিদ্যমান ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক আধুনিক এবং শক্তিশালী হবে। নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে ৫-জি প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক কম বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে দ্রুতগতির মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ৩-জি ও ৪-জি প্রযুক্তিতে বেতার তরঙ্গ ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেসব দুর্বলতা রয়েছে, ৫-জি তা থেকে মুক্ত থাকবে।
জানা গেছে, গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ফাইভ-জি সেবা দিতে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার শর্ত দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।
আইএমইডি’র দেওয়া শর্তে আরও রয়েছে— বর্ধিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। আর সময় বাড়ানো যাবে না। প্রাক্কলিত ৪৩টি প্যাকেজের মধ্যে ৮টি প্যাকেজের কাজ শেষ হয়েছে, অবশিষ্ট প্যাকেজের দরপত্র প্রক্রিয়া যথাসময়ে সম্পন্ন করে সাইট হস্তান্তর নিশ্চিত করতে হবে। এলসি খোলার জন্য প্রয়োজনীয় যোগাযোগ ও তাগাদা উপযুক্ত পর্যায়ে নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের এমটিবিএফ বরাদ্দ থেকে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ ও ছাড় নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচিত সাইটগুলোর চলমান আলোচনা শেষ করে যথাসময়ে সাইট মালিকদের সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, প্রকল্প কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কয়েকটি কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন পিছিয়ে রয়েছে। ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির যৌক্তিকতা আছে। বর্ধিত সময়ের কর্মপরিকল্পনা ও ক্রয় পরিকল্পনা পেশ করা হয়েছে এবং এই সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে— এই মর্মে প্রকল্প পরিচালক প্রত্যায়ন দিয়েছেন। এ কারণে আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য সম্মতি দিয়েছে আইএমইডি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রামা লসহ দেশের সব মানুষের জন্য সাশ্রয়ী দামে টেলিযোগাযোগ সেবা নিশ্চিত করা এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করার ফলে চিকিৎসা ও শিক্ষায় টেলি-ক্লাসরুমের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা পাওয়া সবার জন্য সহজ ও সাশ্রয়ী হবে। এমন লক্ষ্য নিয়ে ২০২১ সালের ১০ আগস্ট গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ফাইভ-জি সেবা দিতে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ২০৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের প্রায় পুরো অর্থ জোগান দেবে সরকার। মাত্র ৬০ কোটি টাকা দেবে টেলিটক।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সময় বাড়ানো হয়েছে। সরকার চায় প্রকল্পটি শতভাগ বাস্তবায়ন হোক। এ কারণেই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আরও দুই বছর।’ তিনি বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গ্রামা লসহ দেশের সব মানুষের জন্য সাশ্রয়ী দামে টেলিযোগাযোগ সেবা নিশ্চিত করা এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা সহজ হবে। এর ফলে চিকিৎসা ও শিক্ষায় টেলি-ক্লাসরুমের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা পাওয়া সবার জন্য সহজ ও সাশ্রয়ী হবে।’-বাংলাট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com