প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার ব্যবস্থা করেছি। ন্যূনতম ভাতা ২০ হাজার টাকা করেছি। অনেক মুক্তিযোদ্ধার ঘরবাড়ি নেই, মানবেতর জীবন যাপন করছে, এটা আমাদের জন্য লজ্জার। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিক্ষা করবে বা রিকশা চালাবে, আমি জাতির পিতার কন্যা যখন ক্ষমতায়, তখন এটা হতে পারে না।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঘরবাড়ি তৈরি করেছি, জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করেছি, তাদের জন্য বৈশাখী ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
গতকাল বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) গণভবন থেকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অংশ নিয়ে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ‘বীর নিবাস’ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছে। দল-মতনির্বিশেষে সব মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এই সম্মানের ব্যবস্থা আমরা করেছি। ১৯৭১ সালে যারা জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ করেছে, বিজয় এনেছে, তাদের সম্মান দেখানো আমাদের কর্তব্য।’
মুক্তিযোদ্ধারা মারা গেলে যেন সম্মান পান, সেই ব্যবস্থা আমরা করেছি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন, নির্যাতিত মা-বোনদের জন্য কোটা সিস্টেম চালু করেছিলেন, আমরা সরকারে আসার পর শুধু মুক্তিযোদ্ধা নয়, তাদের সন্তান ও বংশপরম্পরায় যারা আসবে, তারাও যেন প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রায়, সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি, সেটা মানুষ ভুলে গিয়েছিল। কারণ ’৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর ইনডেমনিটি জারি করে হত্যাকারীদের বিচার থেকে রেহাই দিয়ে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ দিয়ে পুরস্কৃত করেছে। অন্যদিকে যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ছিল, হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যারা ছিল, তাদের ক্ষমতায় বসায়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই তারাই প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপদেষ্টা হয়ে ক্ষমতায় বসেন। আর মুক্তিযোদ্ধারা হয়ে পড়েন কোণঠাসা। এমনকি চাকরির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযোদ্ধার পরিবার হলে তাদের দেওয়া হতো না। এই ধরনের দুর্ভাগ্য চলে ২১ বছর পর্যন্ত।’