বরিশাল জেলার বাখেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ভেঙ্গে দেয়া আহবায়ক কমিটি পূর্ণ বহালের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন ও দলীয় কার্যলয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে বর্তমান কমিটির নেতা কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অপরদিকে জেলার গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া সদ্য ঘোষিত আহবায়ক কমিটি নেতৃবৃন্দ ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপনের অনুসারীরা বিএনপি দলীয় কার্যলয়ে শুভেচ্ছা সভা ও নগরীতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিছিল করেছে। বৃহস্পতিবার (১৬) ফেব্রয়ারী সকাল ১১টায় বরিশাল জেলার বাখেরগঞ্জ উপজেলার সাবেক আহবায়ক কমিটি নেতৃবৃন্দ অনৈতিক ও অগঠনতান্ত্রিকভাবে তাদের আহবায়ক কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া পুনরায় তাদের কমিটি বহাল রাখার দাবীতে বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাবী জানান। এসময় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বত্তব্য পাঠ করে সাবেক উপজেলা সদস্য সচিব মিজানুর রহমান চুন্নু সিকদার বলেন, গত ১৮ই জুলাই আবুল হোসেন খানের উপজেলার বাসভবনে বসে বাখেরগঞ্জের ১৪টি ইউনিয়নের নেতা কর্মীদের কর্মীসভায় সকলের উপস্থিতিতে তৎকালীন বরিশাল জেলা বিএনপি এ্যাড. মজিবুর রহমান নান্টু ও সদস্য সচিব এ্যাড. আকতার হোসেন মেবুল সহ জেলার বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ সকলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ৮ই নভেম্বর-২২ইং- আলহাজ্ব হারুন অর রসিদ সিকদারকে আহবায়ক ও মিজানুর রহমান চুন্নু সিকদারকে সদস্য সচিব করে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়। ১৫ই নভেম্বর রহস্যজনকভাবে কেন্দ্রীয় বিএনপি বরিশাল জেলার পূর্বের আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে বাখেরগঞ্জ উপজেলার সাবেক সভাপতি আবুল হোসেন খানকে আহবায়ক ও সাবেক বরিশাল জেলা সাধারন সম্পাদক এ্যাড. আবুল কালাম শাহিনকে সদস্য সচিব করে ২০ নভেম্বর নতুন জেলা আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়। ২০ই নভেম্বর বর্তমান জেলা বিএনপি আহবায়ক আবুল হোসেন খান অনৈতিকভাবে ক্ষমতা অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার বহিপ্রকাশ হিসেবে বাখেরগঞ্জ উপজেলার অঅহবায়ক কমিটির সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষনা করে। অপরদিকে গত ৬ই ফেব্রয়ারী বাখেরগঞ্জ উপজেলা ও পৌর কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করে এবং একইদিন বাখেরগঞ্জ উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠন করার লক্ষে ৯ই ফেব্রয়ারী বাখেরগঞ্জ আবুল হোসেন খানের নিজ বাসভবনে বসে কমিটি গঠন করার প্রস্তুতি নেয়। এসময় উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের নেতা কর্মী আবুল হোসেন খানের বাড়িতে সমবেত হলে আবুল হোসেন খান নেতা কর্মীদের রোশানলে পড়ে বাখেরগঞ্জ ত্যাগ করে বরিশাল এসে ঐদিন বিকালে বরিশাল সদররোডস্থ জেলা ও মহানগর বিএনপি দলীয় কার্যলয়ে বসে একটি অনৈতিক আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করে। উল্লেখ্য ২০১৬ সালে আবুল হোসেন খান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের অধিকাংশ কমিটি রাতে ও ফজরের নামাজের পরে ইউনিয়নের তৃনমূল নেতা কর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে নিজ বাড়িতে বসে কমিটি গঠন করে। পরবর্তীতে তৃনমূল নেতা কর্মীদের চাপের মুখে ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পূর্বে নেতা কর্মীদের দাবীর মুখে ১৬ সালের অনৈতিক কমিটি বাতিল করতে বাধ্য হয় আবুল হোসেন খান। উল্লেখ্য সদ্য ঘোষিত আহবায়ক কমিটির আহবায়ক হারুনর রসিদ জমাদ্দার ১৫ই আগস্টের শোক সভায় যোগ দেওয়ায় এই আবু হোসন খান তাকে বহিস্কার করেছে। হারুন জমাদ্দার অদ্যবধি বিএনপিতে তাকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে যাকে সদস্য সচিব এর পরিবার জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতা। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপস্থিত ত্যাগী ও বিএনপির পরিক্ষিত নেতা কর্মীরা পূর্বের আহবায়ক কমিটি পূর্ণবহাল রাখার জোড় দাবী জানিয়ে বলেন আমরা বিএনপির নেতা কর্মী বিএনপিতে আছি থাকব প্রয়োজনে বিএনপির জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। কিন্ত আবুল হোসেন খানের অনৈতিক আহবায়ক কমিটি বাতিল করে পূর্বের কমিটি বহাল না করা পর্যন্ত আবুল হোসেন খানের ঘড়োয়া বিএনপিতে তৃনমূল নেতা কর্মীরা হাটবে না। সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিলুপ্ত কমিটির আহবায়ক আলহাজ্ব হারুন অর রসিদ সিকদার, মোফাজ্জেল হোসেন, কামরুজ্জামান মিজান মিয়া, আলহাজ্ব শওকত হোসেন হাওলাদার, আব্দুল মালেক সিকদার, আঃ শুক্কুর বাচ্চু নেগাবান, মতিউর রহমান মোল্লা, রুহুল আমিন জমাদ্দার ও মজিবর রহমান মোল্লা সহ বিভিন্ন বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিলুপ্ত কমিটির নেতৃবৃন্দ জেলা ও মহানগর বিএনপি দলীয় কার্যলয়ের সম্মুখে গেলে বরিশাল জেলা আহবায়ক আবুল হোসেন খানের বিভিন্ন এলাকার ভাড়াটিয়া হামলাকারীরা তাদের উপর হামলা করে বলে অভিযোগ করেন সাবেক সদস্য সচিব মিজানুর রহমান চুন্নু। এব্যাপারে বরিশাল জেলা আহবায়ক আবুল হোসেন খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সাবেক আহবায়ক কমিটি হয়েছিল অর্থ বানিজ্যের উপর ভর করে। তারপরেও যদি বর্মমান কমিটি নিয়ে তাদের কোন মতামত থাকে সেকথা হাউজে উত্থাপিত করতে পারে। সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে দলের এই সময় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা ছাড়া আর কিছুই তারা করছে না। তিনি আরো বলেন আজ তারা সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন লোকজনের ছত্রছায়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছে সেখানে আমার লোক হমলা করেছে তাদের এই অভিযোগ সত্য নয় ভিত্তিহীন বলে তিনি দাবী করেন। এসময় তিনি বর্তমান আহবায়ক কমিটির আহবায়ক হারুন জমাদ্দার একজন বিএনপি শুরু থেকে রাজনীতির সাথে জড়িত। এছাড়া একাধিক হামলা নির্যাতনের স্বিকার। তাছাড়া হারুন যখন ১৫ আগস্টের শোক সভায় অংশ গ্রহন করে তখন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিল তাকে চাপে পড়ে যেতে হয়েছে। এবার আমি যে কমিটি দিয়েছি সেখানে ১৪টি ইউনিয়নের নেতা কর্মীরা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে তাদেরকে গঠনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত করেছে। অন্যদিকে বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা সহ গৌরনদী পৌর বিএনপি আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও সাবেক সংসদ এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপনকে ধন্যবাদ জানিয়ে নগরীতে আনন্দ র্যালি করে। এসময় গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার আহবায়ক কিমিটির নেতৃবৃন্দের পাশে বরিশাল মহানগর সদস্য সচিব এ্যাড. মীর জাহিদুল কবির জাহিদ, বরিশাল জেলা যুবদল সাধারন সম্পাদক এ্যাড. এইচ এম তছলিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।