বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত মাইলস্টোন কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে হারিকেন

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় শনিবার, ৪ মার্চ, ২০২৩

হারিকেন গ্রামীণ ঐতিহ্যের প্রতীকগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। রাতে বিদ্যুৎবিহীন গ্রামের আলোর চাহিদা মিটানো বা অন্ধকার দূর কারার একমাত্র অবলম্বন ছিলো হারিকেন বা কুপি বাতি। সেই হারিকেন আজ বিলুপ্তির পথে। বাঙ্গালীর জীবনে রাতের অন্ধকার দূর করতে এক সময় গ্রামসহ শহরের মানুষের অন্যতম ভরসা ছিল হারিকেন। যার অন্যতম জ্বালানি উপাদান ছিল কেরোসিন। তখনকার সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে রাতে হারিকেন জ্বালিয়ে বাড়ির উঠানে কিংবা ঘরের বারান্দায় ভাই-বোন একসঙ্গে পড়তে বসতেন। অন্ধকারে বাড়ির বাইরে যেতে হলেও এই বস্তুর ব্যবহার ছিলো অপরিসীম। আর এই হারিকেনে বাতি জ্বালানোর অন্যতম উপাদান ছিলো কেরোসিনের তেল। তেল আনার জন্য ছিলো কাচের তৈরি বিশেষ বোতল। ওই বোতল দড়ি দিয়ে বেঁধে ঘরের কোনো স্থানে ঝুলিয়ে রাখতেন গৃহিনীরা। ২০০০ সালের আগে শহর-গ্রামের সব স্থানেই হারিকেনসহ কুপি বাতি, হ্যাজাক বাতির ব্যবহার সবচেয়ে বেশি ছিলো। সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ যাওয়ার আগেই গৃহিনীরা হারিকেন ও হ্যাজাক বাতির কাচ পরিষ্কার করে প্রস্তুতি নিতেন বাতি জ্বালানোর। কিন্তু বর্তমানে শহরসহ গ্রাম বাংলার রাস্তা-ঘাট বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হচ্ছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে বাড়িঘর আলোকিত হচ্ছে আইপিএস ও জেনারেটরের আলোয়। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী হারিকেন। বর্তমানে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক বাতিতে বাজার ভরপুর। বিশেষ করে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর ঘরকে কয়েক ঘণ্টা আলোকিত রাখতে পারে এমন লাইটও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণেও হারিকেন হারিয়ে যাচ্ছে। হিলির বাসিন্দা লুৎফর রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা যখন ছোট বেলায় পড়ালেখা করতাম তখন আমাদের গ্রামে কারেন্ট ছিলো না। রাস্তায় কোনো আলো জ্বলতো না। সন্ধ্যা হলেই হারিকেন কিংবা মাটির তৈরি কুপি বা হ্যাজাক জ্বালিয়ে পড়ালেখা করতে বসাতেন মা। হারিকেনের জ্বালানি ছিলো তেল। তেল ফুরিয়ে গেলে বাতি আর জ্বলতো না। কিন্তু এখন আমাদের কতো সুবিধা। এনার্জি বাল্ব থেকে শুরু করে আইপিএসের মতো প্রযুক্তি রয়েছে। ফলে কারেন্ট চলে গেলেও ঘর অন্ধকার হয় না। আইপিএস, জেনারেটরে চলে লাইট, ফ্যান ও টিভি।’ হিলির দক্ষিণপাড়ার ৮৫ বছর বয়সী জাহিদা বেগম নামের এক প্রবীণ বলেন, ‘আমারা ছোট বেলায় হারিকেন আর কুপি ব্যবহার করতাম। সন্ধ্যা হলেই রাতের খাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়তাম। চাঁদের আলোতে আমরা তখন রাতের আলো মনে করতাম। চাঁদের আলো দিয়ে পথ চলতাম। তবে আমাদের গরুর গাড়ি ছিলো, গাড়ির সামনে হারিকেন জ্বালিয়ে ঝুলানো থাকতো। দূর থেকে দেখে বোঝা যেতো কোনো গাড়ি আসছে। তিনি আরও বলেন, ‘আজও আমার ঘরে সেই ২৫ বছর আগের কেনা একটি হারিকেন আছে। কারেন্ট না থাকলে আজও আমি ঘরে হারিকেন জ্বালায়। বাড়ির ছেলে-মেয়েরা চার্জার বাতি জ্বালায়। হাতের ব্যবহারের জিনিস আর পুরনো অভ্যাস বাদ দিতে পারি না।’ হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বুলু বলেন, ‘যুগ পাল্টে গেছে, আধুনিকতার ছোঁয়ায় সব অত্যাধুনিক হয়ে গেছে। বিদ্যুতের ব্যবহার এসে সব কিছুর পরিবর্তন এসেছে। গ্রামগঞ্জের সড়ক এখন রাতের বেলাতে বিদ্যুতের আলোয় শহরের মতো আলোকিত থাকে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com