‘বাদাম বাদাম দাদা কাঁচা বাদাম, আমার কাছে নাই গো বুবু ভাজা বাদাম’ পশ্চিমবঙ্গের ভুবন বাদ্যকরের এ গান শোনেননি এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল! গানটি তাকে খ্যাতি এনে দেয়। তার আর্থিক অবস্থারও পরিবর্তন হয়। আর তা দিয়ে নিজের একটি বাড়ির কাজ শুরু করেন। যদিও এখনো তা শেষ করতে পারেননি। কিন্তু তার আগেই সেই বাড়ি ছাড়তে হলো তাকে। কয়েক দিন আগে ভুবন বাদ্যকর অভিযোগ করেন তার ‘কাঁচা বাদাম’ গানটির কপিরাইট চুরি হয়ে গেছে। ফলে তার আয়-রোজগারও কমে গেছে। এর মাঝে ‘চাঁদাবাজি’-এর অত্যাচারে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ভুবন বাদ্যকর। এ যেন ষোলআনাই খ্যাতির বিড়ম্বনা!
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আজতাক ডটকমকে ভুবন বাধ্যকর বলেন ‘আমার কাছে অনেক টাকা আছে ভেবে বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন আসছে টাকা চাইতে। কেউ মেলার নামে টাকা চাইছে, কারো ছেলের শরীর খারাপ, কারো মেয়ের বিয়ে তাই টাকা চাই। তা-ও ১০০-২০০ নয়, হাজার হাজার টাকা।’
চাহিদা মতো চাঁদা না দিলে ভুবন বাধ্যকরকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তা জানিয়ে এই গায়ক বলেন, ‘আমার গানের কপিরাইট আছে। কিন্তু টাকা পাই না। আবার যেখানে সেখানে গান আর গাইতেও পারি না। কিন্ত গ্রামের লোকের ধারণা, গান গেয়ে প্রচুর টাকা উপার্জন করেছি। তাই যেকোনো কাজে তাদের চাহিদা মতো টাকা দিতে হবে। শুধু গ্রাম নয়, আশেপাশের নানা ক্লাব, নানা সংগঠন টাকা না দিলে হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু গান ছাড়া আমি বেকার। কোথা থেকে টাকা দেব। বাধ্য হয়ে সপরিবারে দুবরাজপুরে ভাড়া বাড়ি নিয়ে আছি। দুবরাজপুর পাকুড়তলার ভাড়া বাড়ি আমার এখন ঠিকানা।’
লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম কুড়ালজুড়ির বাসিন্দা ভুবন বাদ্যকর। শুরুতে বাদামের বস্তা পেছনে নিয়ে বীরভূম থেকে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন গ্রামে কাঁচা বাদাম বিক্রি করতেন। তারপর মোটরসাইকেলে কাজটি করেন তিনি। আর গাইতে থাকেন, ‘বাদাম বাদাম দাদা কাঁচা বাদাম, আমার কাছে নাই গো বুবু ভাজা বাদাম’। তার গাওয়া এই গানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পরের গল্প কারো অজানা নয়। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভুবন বাদ্যকরের সংসার।