কৃষ্ণ সাগরে রুশ যুদ্ধবিমানের ধাক্কায় যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন নিমজ্জিত হওয়ার ঘটনাকে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক আচরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন মার্কিন সেনাপ্রধান। আর ক্রিমিয়ার কাছে মার্কিন ড্রোন পরিচালনার বিষয়ে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করেছে মস্কো। বুধবার (১৫ মার্চ) টেলিফোনে দেশ দুটির সেনাপ্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে বিরল মতবিনিময় হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশ দুটির সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তাই দুই দেশের সেনাপ্রধান ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের টেলিফোনে মতবিনিময় বিরল ঘটনা।
ক্রিমিয়া উপদ্বীপে মার্কিন ড্রোন পরিচালনাকে যুক্তরাষ্ট্রের উসকানিমূলক আচরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকে উদ্দেশ করে এ কথা বলেন তিনি। ২০১৪ সালে মস্কো জোরপূর্বক ক্রিমিয়া দখলের আগে উপদ্বীপটি ইউক্রেনের অংশ ছিল। বিবৃতিতে মস্কো বলে, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডে রাশিয়ার কোনও স্বার্থ নেই। তবে ভবিষ্যতে এমন কিছু ঘটলে রাশিয়া উপযুক্ত জবাব দেবে।’ দেশ দুটির মধ্যে চলমান সংকটপূর্ণ অবস্থায় সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে যেকোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান শোইগু।
ফোনালাপের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি অস্টিন। তবে পেন্টাগনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আছে এমন যেকোনও সীমানায় মার্কিন আকাশযান পরিচালনা করা হবে। রুশ সামরিক যুদ্ধবিমানগুলোকে আরও নিরাপদ ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরিচালনা করতে বলেছেন তিনি।
মার্কিন সেনাপ্রধান মার্ক মিলে আলাদা একটি ফোন কলে রুশ সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ’র সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ: মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, তাদের এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনটি এসইউ-২৭ নামক দুটি রুশ যুদ্ধবিমানের ধাক্কায় কৃষ্ণ সাগরের আন্তর্জাতিক সীমানায় নিমজ্জিত হয়। বিধ্বস্তের আগে ড্রোনটির ওপর জ্বালানি ছিটিয়ে দেয় যুদ্ধবিমান দুটি। এদিকে রাশিয়া বলছে ভিন্ন কথা। রাশিয়ার মতে, মার্কিন ড্রোনের সংস্পর্শেই যায়নি তাদের যুদ্ধবিমান। মস্কো বলছে, উসকানিমূলকভাবে ইচ্ছাকৃত রুশ আকাশসীমার দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় বিধ্বস্ত হয় মার্কিন ড্রোনটি।
সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন সেনাপ্রধান মার্ক মিলে বলেন, ‘সম্প্রতি রুশ আচরণ আগের চেয়ে আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে।’ তবে রুশ পাইলটদের দ্বারা মার্কিন ড্রোন বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়টিকে স্পষ্টত ইচ্ছাকৃত বলতে নারাজ তিনি। এছাড়া, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইসও এই ঘটনাটিকে রাশিয়ার অনিচ্ছাকৃতভুল হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। রাশিয়ার দাবি, মার্কিন ড্রোনটি ইউক্রেনকে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে ক্রিমিয়ার উপদ্বীপে চালানো হয়েছিল। ক্রেমলিনের নিরাপত্তা পরিষদের সচিব নিকোলাই পাত্রুশেভ বলেন, ‘মার্কিনিরা বলছে তাদের ড্রোন সামরিক অভিযানে অংশ নেয় না। তবে সর্বশেষ এই ঘটনা সামরিক অভিযানে তাদের সরাসরি অংশগ্রহণের প্রমাণ।’