পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মুজিব শতবর্ষে ক শ্রেণীভূক্ত গৃহহীন পরিবারের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া জমিসহ স্বপ্নের ঘর উপহার হিসেবে গড়ে তোলা আবাসনের পরিবারগুলোর জীবন জীবিকায় আসছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। উপজেলার ১১ ইউনিয়নে নদী তীরবর্তী সাপলেজা, মাছুয়া,তুষখালী ও আমড়াগাছিয়া গ্রামে গড়ে তোলা ক শ্রেণীভূক্ত ৮৩০ ভূমিহীন পরিবারের মাঝে সমাজভিত্তিক আশ্রয়ণ গড়ে তোলা হয়েছে। আগামী ২১ মার্চ মঠবাড়িয়াকে ক শ্রেণীভূক্ত ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণার জন্য প্রশাসনিক প্রস্তুতি চলছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার নদী তীরবর্তী সাপলেজা ও তুষখালীসহ একাধিক আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ভূমিহীন প্রতি পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ একক গৃহ প্রদান করে ৮৩০ পরিবারের মাঝে সমাজভিত্তিক আশ্রয়ণ গড়ে তোলা হয়েছে। এসব আশ্রায়নে গত পাঁচ মাস আগে পরিবার বসবাস শুরু করেন। এসব ভূমিহীন পরিবারগুলো দুই শতাংশ জমিতে সেমি পাকা ঘর পেয়ে তাদের জীবনযাত্রা বদলে যেতে শুরু করেছে। উপজেলা প্রসাশনের সহায়তা নিয়ে কৃষিকাজ, হস্তশিল্প, সেলাই কাজ, হাস-মুরগী প্রতিপালন করে এ পরিবারগুলোর সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরতে শুরু করেছে। আশ্রিত শিশুরা স্কুলে লেখাপড়ার সুবিধা পেয়েছে। সুপেয় পানি ও বিদ্যুত সুবিধাও মিলেছে তাদের। তুষখালী আবাসনে আশ্রিত মো. সগীর মিয়া জানান, সে একসময় পরের জমিতে শ্রম দিয়ে কোনো মতে সংসার চালাতেন। ভূমিহীন জীবনে পরের জমিতে খুপড়ি ঘরে বসতি ছিলো তার। এখন আশ্রয়ণে তার নিজের ঘর। নতুন ঘরে উঠে তিনি বাঁশের হস্তশিল্পের কাজ শুরু করেন। স্থানীয় হাট-বাজারে বাঁশের সামগ্রী বিক্রয় করেন। এতে তার মাসে ৭/৮ হাজার টাকা রোজগার হয়। এছাড়া তার স্ত্রী মহিমা আক্তার সেলাই মেশিনে কাজ করেও মাসে অন্তত তিন হাজার টাকা আয় করেন। সেই সাথে বসতির আঙিনায় মৌসুমী সবজির চাষ করে প্রাত্যহিক জীবনে পুষ্টি পূরণ করছেন। এ দম্পতি তাদের দুই শিশু সন্তানকে স্কুলেও ভর্তি করতে পেরেছেন। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষে মঠবাড়িয়ার ১১ ইউনিয়নে গৃহহীন,ভূমিহীন পরিবারের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ঘর নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এ যাবৎ ৮৩০টি পরিবারের গৃহ নির্মাণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ক শ্রেণীভূক্ত পরিবার গুলো নতুন ঘরে বসতি শুরু করেছেন। এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊর্মী ভৌমিক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এ ঘর নির্মাণ প্রকল্প চলমান কর্মসূচি। উপজেলায় ৮৩০ ভূমিহীন পরিবারের জন্য সমাজ ভিত্তিক আশ্রয়ণ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। সেই সাথে প্রকল্প এলাকার সড়ক পাকা করণসহ পরিবেশ ও প্রতিবেশের উন্নয়নে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী ২১ মার্চ মঠবাড়িয়াকে ক শ্রেণীভূক্ত ভূমিহীন-গৃহহীন পরবিবার মুক্ত ঘোষণা করা হবে।