যাত্রী সংকটে বন্ধ হওয়ার সাত মাসের মাথায় আবারও বরিশাল-ঢাকা রুটে যাত্রীসেবা দিতে যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) নৌযান। তবে সেটিও পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে। যেখানে ঈদের আগে ও পরে ঢাকা থেকে চারদিনের জন্য এবং বরিশাল থেকেও চারদিনের জন্য যাত্রীসেবায় নিয়োজিত থাকবে এমভি মধুমতি নামে একটি জাহাজ। বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, জনসাধারণের সুবিধার্থে অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় রুটে নিয়মিত যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিসের সহিত অতিরিক্ত বিশেষ যাত্রীবাহী সার্ভিস পরিচালনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ সেবা দেওয়া হবে। তবে যাত্রী সংকটের কারণে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা-মোড়লগঞ্জ-ঢাকা রুটে সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে বরিশাল থেকেও এ সার্ভিস ওইদিন থেকেই বন্ধ হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসি বরিশালের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জসিম উদ্দিন সিকদার। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে যে সার্ভিস চালু করা হচ্ছে সেখানে শুধুমাত্র মধুমতি জাহাজটি চলাচল করবে। তবে তাও বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ পর্যন্ত নয়, ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে পিরোজপুরের বড়মাছুয়া পর্যন্ত যাত্রীসেবা দেবে এমভি মধুমতি। যেখানে ঈদের আগে ১৮ ও ২১ এপ্রিল ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে বড়মাছুয়া এবং ১৯ ও ২৩ এপ্রিল বড়মাছুয়া থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকা। আবার ঈদের পরে ২৭ ও ৩০ এপ্রিল ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে বড়মাছুয়া এবং ২৯ ও ৩১ এপ্রিল বড়মাছুয়া থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকা পর্যন্ত জাহাজটি যাত্রীসেবা দেবে। জসিম উদ্দিন বলেন, ঢাকা থেকে ১৬১ কিলোমিটার দূর বরিশাল পর্যন্ত সর্বনিম্ন ভাড়া (তৃতীয় বা সুলভ শ্রেণির যাত্রী ভাড়া) ২০৫ টাকা ও ঢাকা থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূর বড়মাছুয়া পর্যন্ত সর্বনিম্ন ভাড়া ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও এ সুলভ বা ডেক শ্রেণির ভাড়া বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী বেসরকারি লঞ্চের জন্য নয় জানিয়ে বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াদ হোসেন বলেন, এ রুটে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি লঞ্চগুলোর ডেক শ্রেণির ভাড়া ৪৩১ টাকা। তবে যাত্রী কম হওয়ার কারণে এ রুটে এবারে সর্বোচ্চ ১৩-১৪টি লঞ্চ যাত্রীসেবা দিতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক মো. কবির হোসেন জানান, এ রুটে ২০টি লঞ্চের মধ্যে এমভি কালাম খান, কালাম, টিপু লঞ্চ আগে থেকেই নেই। তার ওপর আরও একটি কোম্পানির একটি লঞ্চ বিক্রি হয়ে গেছে। এ চারটি বাদ দিলে ১৬টির মতো লঞ্চ থাকে বরিশাল-ঢাকা রুটে। যার মধ্যে এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চটি পটুয়াখালী রুটে চলতে পারে। এছাড়া ভায়া দুটি লঞ্চ বাদ দিলে ১৩টি লঞ্চ বরিশাল-ঢাকা রুটে সরাসরি যাত্রীসেবা দেবে। এদিকে গতবারের মতো যাত্রীর চাপ কম থাকার শঙ্কায় ডাবল ট্রিপের কথা ভাবছে না কোনো লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে ঈদের পরে মানামী লঞ্চটি প্রতিদিন ট্রিপ দিতে পারে বলে জানান এ কর্মকর্তা। সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানির কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মো. শাকিল জানান, প্রতিবছর ঢাকা থেকে আসা যাত্রীদের চাপ থাকলেও এবারে এখন পর্যন্ত যা দেখছি তাতে চাপ কমই মনে হচ্ছে। পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে মানুষ এখন বাসমুখী হয়েছে। আর এ কারণে স্পেশাল ট্রিপের কথা ভাবা হচ্ছে না।