সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন

শান্তিরক্ষা মিশন থেকে আয় কমেছে পুলিশের

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩

আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনের কন্টিনজেন্ট কমে যাওয়ায় পুলিশের বার্ষিক আয় কমেছে। আসন্ন বাজেটকে সামনে রেখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া এক প্রতিবেদনে পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে এমন তথ্যই জানানো হয়েছে। তবে কী কারণে শান্তি মিশনে পুলিশের কন্টিনজেন্ট কমেছে সেটা জানা যায়নি। এদিকে আয়ের নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে এই বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি মিতব্যয়ী হওয়ার কথাও বলা হয়েছে। পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশের আন্তর্জাতিক শান্তি মিশনের কন্টিনজেন্ট কমে গেছে। যে কারণে রাজস্ব আয়ের পরিমাণও কম হচ্ছে। তবে নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সিলিং অর্জনের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, পুলিশের রাজস্ব আয়ের একটি বড় মাধ্যম শান্তিরক্ষা মিশন। গত প্রায় ৩৪ বছরে শান্তিরক্ষা মিশন থেকে পুলিশ চার হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যেকোনও বাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বাহিনী ও দেশের সুনাম অর্জনের বিষয়টিই থাকে মুখ্য। সে লক্ষ্য নিয়ে ১৯৮৮ সালে ইরাক-ইরান শান্তি মিশনে সেনাবাহিনীর ১৫ জন সদস্যের যোগদানের মাধ্যমে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেয় বাংলাদেশ। এর পরের বছর ১৯৮৯ সালে নামিবিয়া মিশনের মাধ্যমে শান্তিরক্ষা মিশনে যোগ দেয় বাংলাদেশ পুলিশ।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী শান্তি মিশনে যোগ দেয় ১৯৯৩ সালে। এসব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও একটি আকাঙ্ক্ষা থাকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করার। মিশনে কাজ করার সুযোগকে অনেকেই সৎভাবে অতিরিক্ত উপার্জনের একটি মাধ্যম মনে করেন। পাশাপাশি সরকারও এ থেকে পায় মোটা অঙ্কের রাজস্ব। মিশনে গিয়েছেন এমন পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিশনে গেলে তারা দেশে যে বেতন ভাতা পেতেন সেটাও পেয়ে থাকেন। সঙ্গে মিশনে কাজ করার জন্য জাতিসংঘ থেকে আলাদা ভাতা পেয়ে থাকেন। সেই ভাতার ২০ শতাংশ মিশনে থাকা অবস্থায় তাদের দেওয়া হয়। দেশে ফিরে আসার পর বাকি অর্থ পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হয়। জাতিসংঘ থেকে পাওয়া এই অর্থের ১০ ভাগ পেয়ে থাকে সরকার।
পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এক বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান সবাইকে মিতব্যয়ী হয়ে চলার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, চলমান আর্থিক অবস্থাসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনায় রেখে মিতব্যয়িতার সঙ্গে দক্ষতা ও ফলপ্রসূ কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করতে হবে। অর্থ বিভাগের দেওয়া ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও সবাইকে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। স্ব-স্ব ক্ষেত্রের রাজস্ব আয় বাড়াতে ক্ষেত্র চিহ্নিত করে সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর পরিকল্পনা নিতেও অনুরোধ জানান তিনি। বাহিনীগুলোকে আয় বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়ে অর্থ বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলারও অনুরোধ জানানো হয়।
কন্টিনজেন্ট কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া অ্যান্ড পিআর বিভাগের এআইজি মো. মনজুর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তার বিস্তারিত জানা নেই। তবে পুলিশ সদর দফতরের অপর একজন কর্মকর্তা বলেন, শুধু বাংলাদেশ পুলিশের কন্টিনজেন্ট কমেনি। বিশ্বমন্দার কারণে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনের কন্টিনজেন্ট বিভিন্ন দেশের কমেছে। বিশ্বের যেসব দেশ শান্তি মিশনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পাঠাতো, তাদের সবারই কন্টিনজেন্ট কমেছে।
পুলিশ সদর দফতরের ইউএন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের ছয়টি মিশন নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমানে এসব মিশনে ৫০২ জন পুলিশ সদস্য কর্মরত রয়েছেন। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৩ মিশনে পুলিশের ২১ হাজার ২৮৩ জন সদস্য কাজ করেছেন। মিশনে নিয়োজিত জনবল ও সরঞ্জামের ভাতা বাবদ পুলিশ চার হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব অর্জন করেছে। বাংলাদেশ পুলিশের শান্তিরক্ষী সদস্যরা মিশন এলাকার স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা দেওয়া, দাঙ্গা দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সার্বক্ষণিক সহায়তা দিয়ে আসছে।- বাংলা ট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com