বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর গ্রীষ্মমন্ডলীয় উদ্ভিদের মধ্যে একটি হল কৃষ্ণচূড়া গাছ । কৃষ্ণচূড় গাছ একটি বড়, প্রস্ফুটিত, পর্ণমোচী উদ্ভিদ। গাছটি আকর্ষণীয় এবং হালকা সুগন্ধযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। কৃষ্ণচূড়া গাছটি একটি বিস্তৃত মুকুট সহ একটি বিশাল আলংকারিক পর্ণমোচী গাছ । গ্রীষ্মমন্ডলীয় পরিবেশের সবচেয়ে দুর্দান্ত ফুলের গাছগুলির মধ্যে একটি, এর সৌন্দর্য ফুলের মৌসুমে প্রতিফলিত হয়। এছাড়াও, এটি পার্ক, বাগান এবং রাস্তা ও মহাসড়কের পাশে চাষ করা হয়। বাংলাদেশে এটি ব্যাপকভাবে রোপণ করা হয়। এর আদি দেশ মাদাগাস্কার। ধনবাড়ী উপজেলায় লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার ফুল। রঙিন করে তুলেছে ধনবাড়ী উপজেলার প্রকৃতি। স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে গরম এসেছে। কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মের অতি পরিচিত ফুল। বাঙালির কবিতা, সাহিত্য, গান ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা নানা ভঙ্গিমায় এসেছে। শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষটি দেশের গ্রাম-বাংলার পাশাপাশি এখনও তার নড়বড়ে অস্তিত্ব নিয়ে কোনোক্রমে টিকে আছে শহরের পথে-প্রান্তরে। কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কার। ভিনদেশি এ ফুলের বৃক্ষগুলো আমাদের দেশে এসে নতুন নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। ধারণা করা হয়, রাধা ও কৃষ্ণের নাম মিলিয়ে এ বৃক্ষের নাম হয়েছে কৃষ্ণচূড়া। এর বড় খ্যাতি হলো গ্রীষ্মে যখন এই ফুল ফোটে, এর রূপে মুগ্ধ হয়ে পথচারীরাও থমকে তাকাতে বাধ্য হন। কৃষ্ণচূড়া গাছ উচ্চতায় খুব বেশি হয় না। সর্বোচ্চ ১২ মিটার পর্যন্ত উপরে উঠে। তবে এর শাখা পল্লব অনেক দূর পর্যন্ত ছড়ানো থাকে। বছরের অন্য সময় গাছগুলো চোখে খুব একটা পড়ে না। এপ্রিলে প্রকৃতির সবুজ পেছনে ফেলে মানুষের দৃষ্টিতে আসে অত্যন্ত আকর্ষণীয় এই ফুল। তখন আর খুঁজে নিতে হয় না। পথচারীদের সহজেই চোখে পড়ে কৃষ্ণচূড়ার লাল টুকটুকে ফুল। বহুদূর থেকে দেখলে মনে হয় ওই দূরে আগুন লেগেছে। কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম ফুলে প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সাজে। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, এই ফুল বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে ফোটে থাকে। বাংলাদেশে এই কৃষ্ণচূড়ার ফুল ফোটে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত। প্রথম মুকুল ধরার কিছুদিনের মধ্যেই পুরো গাছ ফুলে ফুলে ভরে যায়। ফুলের প্রধান বৈশিষ্ট হলো উজ্জ্বল রং। তরুরাজ্যে এত উজ্জ্বল রং সত্যি দুর্লভ। ফুলের পাপড়ির রং গাঢ় লাল, লাল, কমলা, হলুদ, হালকা হলুদ হয়ে থাকে। ফুলের ভেতরের অংশও রক্তিম। কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়িযুক্ত। কৃষ্ণচূড়ার ফুলের বর্ণনা লেখায় দেওয়া সম্ভব নয়। সত্যিকার সৌন্দর্য কৃষ্ণচূড়ার ফুলের কাছে গেলে কিছুটা হলেও উপলব্ধি করা সম্ভব। ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নে, ধনবাড়ী সরকারি কলেজে, ধনবাড়ী রাজ বাড়িতে, উপজেলা পরিষদে, প্রভৃতি স্থানে রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার ফুল পথচারীদের মন ভুলিয়ে ও চোখ জুড়িয়ে যায়।