বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত মাইলস্টোন কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

শ্রীমঙ্গলে বৃষ্টির অভাবে চা বাগানে কমছে উৎপাদন, আসছে না নতুন কুঁড়ি

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না আসায় প্রচ- দাবদাহে উপজেলার চা বাগানগুলোতে চা উৎপাদন কমে গেছে। আর চা গাছ খাদ্য তৈরি করতে না পারায় চাগাছে আসছে না নতুন কুঁড়ি। চা বাগানে নতুন পাতা কম থাকায় শ্রমিকেরা তপ্ত রোদে বাগানের বিভিন্ন সেকশন ঘুরে ঘুরে চা পাতা তুলছেন। প্রচন্ড গরমের কারণে চা বাগানে কাজ করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে শ্রমিকদের। কাজের ফাঁকে গাছের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা। শনিবার ১৩ মে দুপুরে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগানসহ বিভিন্ন চা বাগান ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ চা বাগানের পাতা সবুজতা হারাচ্ছে। বাগানে এই সময়ে নতুন কুঁড়িতে ভরে থাকার কথা থাকলেও খুব কম বাগানের গাছে সবুজ কুঁড়ি দেখা গেছে। শ্রমিকেরা প্রখর রোদের মধ্যে কাজ করছেন। কিছুক্ষণ কাজ করে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিয়ে আবার কাজ শুরু করছেন। চা গাছে পানি দিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে কৃত্রিমভাবে পাম্প ও পাইপ লাগিয়ে পানি ছিটানো হচ্ছে। তবে অনেক বাগানেই লেক, পাহাড়ি ছড়ায় পানির স্তর নেমে গেছে। শ্রীমঙ্গল ভাড়াউড়া চা বাগানের শ্রমিক মিনি হাজরা চা পাতা তুলতে তুলতে বলেন, হামরার চা বাগানে এই রকম গরম আগে হইছে না। চা গাছের পাতা শক্ত হই গেছে। গরমে বাগানে থুরা কাজ করলেই হেরান (ক্লান্ত) হই যাই। বড় গাছের ছেমায় (ছায়ায়) বইয়া পানি খাই, পরে আবার কাজ আরম্ভ করি। আগে এই সময়ে ডেইলি ৫০-৬০ কেজি চা পাতা একাই তুলছি। এখন সারা দিনে ১৫ কেজি চা পাতা তুলতে পারি না। বাগানে পাতাই নাই। চা শ্রমিক মিনির মতো অবস্থা প্রায় সব চা শ্রমিকেরই। বৃষ্টির পরিবর্তে কৃত্রিম পানি সরবরাহের যে উৎসগুলো ব্যবহার হয়, সেসব লেকের পাহাড়ি ছড়াগুলোতেও নেমে গেছে পানির স্তর। মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে লাল মাকড়সার আক্রমণসহ পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। সব মিলিয়ে মৌসুমের শুরুতে অর্ধেকের কম উৎপাদন হচ্ছে চা বাগানে। শ্রীমঙ্গলের ক্লোনেল চা বাগানের ব্যবস্থাপক রনি ভৌমিক বলেন, এই সময়ে আমাদের দৈনিক সাড়ে চার হাজার কেজি চা পাতা উত্তোলন করার কথা ছিল। কিন্তু আমরা উত্তোলন করতে পারছি প্রায় আড়াই হাজার কেজি। বৃষ্টি না হওয়ায় ও অধিক তাপমাত্রার কারণে বাগানে নতুন পাতা না আসায় উৎপাদন কমে গেছে। তা ছাড়া চা বাগানের অনেক জায়গায় লাল মাকড়সার আক্রমণ হয়েছে। রনি ভৌমিক আরো বলেন, আমরা সাধারণত লেক, ছড়া ইত্যাদি থেকে পানি উত্তোলন করে চা–বাগানে দিই। আমাদের বাগানে পানির বড় উৎস মঙ্গলচ-ী মন্দিরের পাশের পাহাড়ি ছড়া। এই ছড়ায় এখন পানি কমে গেছে। এক ঘণ্টা পাম্প চালালে পানি শেষ হয়ে যায়। আমরা বাগানে গভীর নলকূপ স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। পানির এ রকম সংকট আগে হয়নি। নতুন কুঁড়ি না আসা, পানির সংকট, লাল মাকড়সার আক্রমণ এখন প্রায় সব চা বাগানেই বিদ্যমান। ভাড়াউড়া চা বাগানের শ্রমিক সরদার উজ্জ্বল হাজরা বলেন, চা বাগানে গরমের কারণে কাজ করা অনেক কষ্ট। রোদের কারণে একটু কাজ করেই শ্রমিকেরা ক্লান্ত হয়ে যান। পানির তৃষ্ণা পায়। শ্রমিকেরা আধা ঘণ্টা কাজ করে আধা ঘণ্টা গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নেন, পানি পান করেন। এভাবে রোদ থাকলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক এ কে এম রফিকুল হক বলেন, বৃষ্টি না হওয়া ও তাপমাত্রা বেশি থাকায় চা গাছ খাদ্য তৈরি করতে পারছে না। বেশি তাপমাত্রা চা বাগানের জন্য ভালো না। এ কারণে চায়ের কুঁড়ি বের হচ্ছে না। চায়ের উৎপাদন ধরে রাখতে চা গাছে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। চা বাগানে টি শেড লাগাতে হবে। লাল মাকড়সার আক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী উপজেলায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com