লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার ফজুমিয়ারহাট বাজারে সরকারি খাল ভরাট করে দোকানঘর নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় চরকাদিরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নাকের ডগায় জনগুরুত্বপূর্ণ খালটি ভরাট করে দোকান নির্মাণ করায় স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। এলাকার বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের চরঠিকা গ্রামকে সরকার আমার শহর আমার গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নানা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। ওই গ্রামের চরঠিকা খালটি এ অঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার মানুষের জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসলেও এখন স্থানীয় ভূমি অফিসের সহায়তায় একটি চক্র খালটি ভরাট করে দোকানঘর নির্মাণ করে। এতে বর্ষাকালে খাল সংলগ্ন ফজুমিয়ারহাট বাজার ও ফজুমিয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয় সহ আশেপাশের স্থাপনাগুলো সামান্য বৃষ্টিতে মারাত্মক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। খালটি সরকারের এক নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় দখলবাজরা প্রশাসনের সহায়তায় এই দখলবাজিতে মেতে উঠেন। দখলবাজদের কব্জা থেকে ফজুমিয়ারহাটের জনগুরুত্বপূর্ণ এ খালটি উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসন ও উপজেলা ভূমি অফিসের কোন তৎপরতা নেই। স্থানীয়রা জানান, ফজুমিয়ারহাট এলাকার সফিক, মাস্টার আব্দুর রহিম ও আবুল বাসার সহ ১২ জন দখলবাজ খালটি ভরাট করে দোকানঘর নির্মান করেন। অনেকেই আবার ইট দিয়ে পাকা করতে দেখা গেছে। দখলবাজদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, এখানে কোন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নেই। যার যে ভাবে মন চায়, সে ভাবে দখল করে নিচ্ছে তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, খালটি ভরাট করার কারনে এ অঞ্চলের ২০ হাজার মানুষ জলাবদ্ধতার মধ্যে পড়েন। ভুমি অফিস বা প্রশাসন থেকে কোন বাধা দেওয়া হয়নি। এখন কয়েকদিন ধরে তাঁরা মাটি ভরাট শুরু করেন। অনেকেই পাকাও করছেন। খালটি উদ্ধার করা সময়ের দাবী। অভিযুক্ত সফিক, আব্দুর রহিম ও আবুল বাসার জানান, যেহুতো এটি সরকারী খাল। তাই সরকার চাইলে আমরা ঘর সরিয়ে নিবো। এখন পর্যন্ত কেউ আমাদেরকে কিছু বলেনি। এ বিষয়ে ফজুমিয়ারহাট বাজার কমিটির প্রচার সম্পাদক মোখলেছুর রহমান ধনু মিয়া জানান, চরঠিকা খালটি দখলমুক্ত করতে তাঁরা অনেক চেষ্টা করেছেন। প্রশাসন ও ভূমি অফিস থেকে কোন সাড়া পাচ্ছিনা। সকলে মিলে উদ্যোগ নিলে খালটি দখলমুক্ত করা সম্ভব। ১২ জন লোকের জন্য ২০ হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খালের পাশেই ফজুমিয়ারহাট বাজার ও ফজুমিয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। বাজারের ক্রেতা-বিক্রিতা ও স্কুলের ছাত্র শিক্ষক সবাই কষ্ট পাচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি উঠে যায়। খাল না থাকায় পানি নিষ্কাশন হয়না। চরকাদিরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তানিম চৌধুরী জানান,লোকজন থেকে শুনার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এটি সরকারের এক নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত চরঠিকা খাল। জনগুরুত্বপূর্ণ খালটি দখলমুক্ত করতে উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফেরদৌস আরা বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশক্রমে আমি সরেজমিনে গিয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ এই খালটি দখল মুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই খালটি উদ্ধারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।