শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ অপরাহ্ন

সামনের নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বিপদ ঘটবে 

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০২৩

বিশেষ সাক্ষাৎকারে ড.বদিউল আলম মজুমদার
[ড.বদিউল আলম মজুমদার। অর্থনীতিবিদ, উন্নয়নকর্মী, রাজনীতি বিশ্লেষক, স্থানীয় সরকার ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট’র বাংলাদেশি শাখার পরিচালক ও বৈশ্বিক সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি নাগরিক সংগঠন ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজনীতি ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মোট ১১টি সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে। চারটি নির্বাচন হয়েছে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থায়। এই চারটি নির্বাচনের মধ্য দিয়েই ক্ষমতাসীন দলের পরিবর্তন হয়েছে। এই চারটি নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছিল এবং নির্বাচন অধিক নিরপেক্ষ হয়েছিল বলেই প্রমাণিত।’ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের জ্যৈষ্ঠ প্রতিবেদক সায়েম সাবু। জাগো নিউজের সৌজন্যে সাক্ষাৎকারটি দৈনিক খবরপত্রের সৌজন্যে পত্রস্থ করা হলো।-বার্তা সম্পাদক।]
প্রশ্ন : আগের পর্বে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সবার মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গঠন হলো এবং এই সরকার নির্বাচনী আইন করলো।
বদিউল আলম মজুমদার: নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ত্রুটি থাকলেও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব। কিন্তু গুরুতর সমস্যা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো চরম মাত্রায় দলীয়করণ হয়ে গেছে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা ভয়াবহভাবে কমে গেছে। বড় সংকট হচ্ছে নির্বাচনী মাঠ অসমতল হয়ে গেছে। দলীয় সরকারের কারণে নির্বাচন হওয়ার কারণেই এমন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে।
প্রশ্ন : সামনের ফলাফল কী?
বদিউল আলম মজুমদার: ভোট ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে সর্বস্তরে দায়বদ্ধতা আর থাকে না। ফলাফল এটিই। মানুষ চরম কষ্টে আছে। কিন্তু মাঠে নামছে না। কোনো জবাবদিহিতাও নেই। বৈষম্য বাড়ছে, মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ সরকার এসব বিবেচনা করে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। মানে দায়বদ্ধতা কাজ করে না। যেনতেনভাবে আরেক নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চায়। ভোটের জন্য জনগণের কাছে যেতে হয় না বলেই এই অরাজকতা। পাঁচবছর পরপর প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে ভোট ভিক্ষা করার কথা এবং ভোটাররা লাল কার্ড দেখানোর সুযোগ পায়। ভোটাররা তাদের অধিকার নিয়ে দরকষাকষি করতে পারে। এখন তা পারে না। সরকারের ভোট ঠিক করে দিচ্ছে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রশ্ন : সরকার তো নির্বাচনী অপরাধের দায়ে সাজার ব্যবস্থা রেখেছে, আইন করেছে।
বদিউল আলম মজুমদার: নির্বাচনী অপরাধের দায়ে এক থেকে সাত বছর সশ্রম কারাদ- হওয়ার কথা। অথচ অপরাধের মধ্য দিয়েই সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে এবং একটি সাজার ঘটনাও দেখাতে পারেনি। আইনসভার মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগ যেভাবে দায়বদ্ধতা দেখানোর কথা, তা দেখায় না। সব কাঠামো ভেঙে গেছে। মানুষ ভোট দিতে না পারার কারণেই সব ভেঙে গেছে।
প্রশ্ন : আঁধার কাটবে না?
বদিউল আলম মজুমদার: আমরা যদি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন, জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে না পারি তাহলে আঁধার আরও ঘনীভূত হবে। সামনের নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে ভয়ানক বিপদ ঘটবে।
প্রশ্ন : যেমন?
বদিউল আলম মজুমদার: দিন যাচ্ছে সংকট বাড়ছে। এই সংকট আওয়ামী লীগের জন্যও। সরকার কিন্তু ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো নির্বিঘেœ একতরফা নির্বাচন করতে পারছে না।
প্রশ্ন : কেন এমন মনে করছেন?
বদিউল আলম মজুমদার: দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে প্রচ- চাপ তৈরি হয়েছে। বিরোধী জোটও মাঠে নামছে।
প্রশ্ন : বিরোধী জোট আগেও মাঠে নেমেছিল?
বদিউল আলম মজুমদার: এখন চাপ চরমে। মূল্যস্ফীতি, বিদ্যুৎ না থাকা, জ্বালানি সংকট মানুষকে অনিশ্চয়তায় ফেলে দিচ্ছে। দুর্নীতি, লুটপাট, ভুল প্রকল্প সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়িয়েছে। বৈশ্বিক চাপ যুক্ত হয়েছে এখানে।
প্রশ্ন : ২০১৪ সালে বিরোধী জোটের চাপ আরও বেশি ছিল। সরকার আমলে নেয়নি?
বদিউল আলম মজুমদার: প্রেক্ষাপট বদলে যাচ্ছে। তখন সরকার প্রশাসনের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছে।
প্রশ্ন : এখন তো এই সমর্থন আরও বাড়ার কথা?
বদিউল আলম মজুমদার: আমার তা মনে হয় না। বৈশ্বিক চাপের কারণে অনেকের বোধদয় হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কোনো সদস্যকে। অনেকের জন্য এটি ভয়ঙ্কর বার্তা বলে মনে করি।
প্রশ্ন : আপনি ভয়ঙ্কর বলছেন। সরকারপ্রধান তো আটলান্টিকের ওপারে যাওয়ার ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন।
বদিউল আলম মজুমদার: সরকারপ্রধানের কথায়ই ভয়াবহ বার্তা মিলছে। নইলে এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারেন না। মুখে অনেক কথাই বলা যায়। ভেতরের বিষয় আলাদা।
অনেকেই অনিচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচনী অপরাধের সঙ্গে জড়িয়েছিল। তারা এমন অপরাধ করে সরকারকে টিকিয়ে রাখতে চাইবে না।
প্রশ্ন : প্রশাসনের কেউ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি?
বদিউল আলম মজুমদার: গাজীপুরের নির্বাচনে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা লক্ষ্য করার মতো ছিল। বিরোধীদলের কেউ বাড়িতে থাকতে পারেনি। এখন কিন্তু বাড়িতে থাকতে শুরু করেছে।
প্রশ্ন : নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা ক্রমাগতভাবে সরকারের, নির্বাচন ব্যবস্থার সমালোচনা করছেন। মার্কিন ভিসানীতির জন্য নাগরিক সমাজও দায়ী বলে সরকারপক্ষ মনে করছে।
বদিউল আলম মজুমদার: যারা এ অভিযোগ করেন, তারা নাগরিক সমাজের ভূমিকা সম্পর্কে কোনো ধারণা রাখেন না। নাগরিক সমাজের কাজ হচ্ছে সরকারের অন্যায়ের সমালোচনা করা। নাগরিক সমাজ নাগরিকের হয়ে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মানুষকে সচেতন করে তোলাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের কাজ।
প্রশ্ন : এই সচেতন করার নামে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আছে।
বদিউল আলম মজুমদার: সরকারের সমালোচনা করা, নাগরিককে সচেতন করে তোলা আইনবিরোধী কোনো কাজ নয়। প্রত্যেক নাগরিকের এ অধিকার আছে। সরকার চাইলে ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার করতে পারে, সাজা দিতে পারে। তা তো করে না।
প্রশ্ন : আপনাদের সমালোচনা বিশ্বমহলকে নাক গলাতে সুযোগ করে দিচ্ছে?
বদিউল আলম মজুমদার: এদেশ আমাদের সবার। আমাদের বন্ধুরা মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছে। এদেশকে মানুষের জন্য বাসযোগ্য করে তোলা সবার দায়িত্ব। কেউ যদি এখানে ষড়যন্ত্র খোঁজে, এটি তাদের সমস্যা। আমরা দায়িত্ব পালন করছি।
প্রশ্ন : যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিপরীতেও দায়িত্ব পালন করার কথা। নতুন ভিসানীতি আমাদের জন্য অপমানের অবশ্যই?
বদিউল আলম মজুমদার: অবশ্যই নাগরিক হিসেবে আমার জন্য চরম অবমাননাকর। আমি লজ্জিত। কিন্তু এর দায় কার? সরকার লজ্জিত কি না সেটা দেখার বিষয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি মহাবিপদের ঘণ্টাধনী। আমরা সংশোধন হয়ে গেলে তো আর ভয়ের কারণ নেই।
প্রশ্ন : আপনি কি মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসানীতি সামনের নির্বাচনে অপরাধ কমাতে সহায়তা করবে?
বদিউল আলম মজুমদার: আমি সঠিক বলতে পারছি না। তবে আমাদের নিজেদের স্বার্থেই অপরাধের পথ পরিহার করা উচিত। জনগণের ক্ষমতায়নে নিরপেক্ষ ভোট ব্যবস্থা জারি করা জরুরি।
প্রশ্ন : ফের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কী ঘটবে আসন্ন নির্বাচনে?
বদিউল আলম মজুমদার: আমি আসলে জ্যোতিষী হলে আপনার এ প্রশ্নের উত্তর ভালো করে দিতে পারতাম। রাজনীতি নিয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। তবে আমার মনে হয়, মানুষের মধ্যে এক প্রকার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে শাসনকার্য পরিচালনা করা। মানুষ তার নিজের নিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। কিন্তু সেই অধিকার মানুষ হারিয়ে ফেলছে বলে মনে করে। বিশেষ করে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এমন এক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, যেখান থেকে মানুষ বেরিয়ে আসতে চায়।
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মোট ১১টি সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে। আর চারটি নির্বাচন হয়েছে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থায় এবং এই চারটি নির্বাচনের মধ্য দিয়েই ক্ষমতাসীন দলের পরিবর্তন হয়েছে। এই চারটি নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছিল এবং নির্বাচন অধিক নিরপেক্ষ হয়েছিল বলেই প্রমাণিত।
প্রশ্ন : সামনের নির্বাচনে কী ঘটবে? কীভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন?
বদিউল আলম মজুমদার: সুষ্ঠু নির্বাচন নির্ভর করে তিনটি বিষয়ের ওপর। নির্বাচন প্রক্রিয়া আসলে একদিনের বিষয় নয়। এটি একটি প্রক্রিয়া। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঠিকতা, প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা এবং সাংবিধানিক কাঠামো যথাযথ কি না- এ তিনটি বিষয় নির্বাচনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন হচ্ছে প্রক্রিয়াটা সঠিক করবে কে? নির্বাচন কমিশনের ওপরই অনেক কিছু নির্ভর করে। নির্বাচন কমিশন যদি নিরপেক্ষ ও নির্ভিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে তাহলে সুষ্ঠু হতে পারে। একইভাবেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারকেও নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে হবে। সরকার পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করলে কেউ আর নিরপেক্ষ আচরণ করতে পারে না।
নির্দলীয় সরকার নির্বাচনী মাঠ সমতল করছিল বলেই চারটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছে এবং ক্ষমতার পালা বদল হয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে এমন নিরপেক্ষ মাঠ তৈরি করা সম্ভব নয়, এটি সাতবার প্রমাণিত। দলীয় সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচনে পর্বতসম বাধা।
ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে ফল ঘোষণা পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়াই দলীয় সরকার প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে এবং আমরা এখন তাই দেখছি। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চরমভাবে দলীয়। চরম দলীয় প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আর নির্বাচন কমিশন তো পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে আসছে আগে থেকেই। মনে রাখা দরকার বিশেষ সমঝোতার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছিল এবং সেই সমঝোতা এখন ভেঙে গেছে। সংবিধান সংশোধনের আগে গণভোট করার বিধান রয়েছে। তা করা হয়নি। আর এ কারণেই সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করি।
প্রশ্ন : তত্ত্বাবধায়ক সরকারই তো সংবিধানপরিপন্থি।
বদিউল আলম মজুমদার: আমার মতো অনেকেই মনে করেন সংবিধান লঙ্ঘন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা হয়েছে। এ কারণেই সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও সরকার নৈতিকভাবে পরাজিত বলে মনে করি। মধ্যরাতে ব্যালটবক্স ভর্তি করা হয়। ভোটাররা তাদের ভোট দিতে পারেনি।
প্রশ্ন : মধ্যরাতে ভোট হয়েছে এটি আসলে সঠিক প্রমাণ মেলে নাৃ
বদিউল আলম মজুমদার: বহু প্রমাণ আছে। বিবিসি ছবি প্রকাশ করেছে। টিআইবি ৫০টি আসনে দেখিয়েছে কীভাবে রাতে ভোট হয়েছিল। আমরা তথ্য নিয়ে দেখিয়েছি ২১৩টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে। ১২শ কেন্দ্রে বিএনপি শূন্য ভোট, দুটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের শূন্য ভোট, ৬শরও অধিক কেন্দ্রে আওয়ামী লীগে শতভাগ ভোট পড়েছে। আমার মতো অনেকেই মনে করেন সংবিধান লঙ্ঘন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে। এ কারণেই সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও সরকার নৈতিকভাবে পরাজিত বলে মনে করি।
প্রশ্ন : ৪০ হাজারের অধিক কেন্দ্র। সেখানে এমন ত্রুটি থাকতেই পারে?
বদিউল আলম মজুমদার: এই তথ্যগুলোই একটি নির্বাচনের সব দিক তুলে ধরে। অবিশ্বাস্য চিত্র এটি। নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে আমরা এই চিত্র পেয়েছি। মামলা হয়েছে। বহু অভিযোগ পড়েছে। পাঁচবছর শেষ হতে যাচ্ছে। একটি অভিযোগেরও তদন্ত করেনি নির্বাচন কমিশন। মানুষ তো জানে ভোট নিয়ে আসলে কী ঘটেছে দেশে।
প্রশ্ন : আপনারা নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে নানা অভিযোগ করছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো অভিযোগ নেই। মানুষ কিন্তু মেনে নিলো।
বদিউল আলম মজুমদার: মানুষের অভিযোগ করার ক্ষেত্র সীমিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দলীয় বাহিনীর মতো কাজ করছে। মানুষ কথা বলতে পারছে না বলেই তো আপনি একটি চরম ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলতে পারবেন না। আদালতেও তো মামলা হয়েছে। আদালতও কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। আদালতের রায় অমান্য করে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন করে সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এ কারণেই এই সরকার অবৈধ বলে মনে করা হয়। এই সরকার আইনসিদ্ধ প্রক্রিয়ায়ও বৈধ নয়। মানুষ সরকারকে মেনে নিয়েছে, মনে নেয়নি।
প্রশ্ন : মেনে নেয়নি এর প্রমাণ কী?
বদিউল আলম মজুমদার: প্রমাণ হচ্ছে সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছে। ভয় না পেলে সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করতো, মানুষের দাবি মেনে নিতো।
প্রশ্ন : সরকার তো যে কোনো উপায়ে ক্ষমতায় থাকতে চাইবে। জনচাপ না থাকলে ক্ষমতা কেউ হারাতে চায় না। সরকার তো সেই অর্থে চাপে নেই?
বদিউল আলম মজুমদার: জনচাপ আছে। সরকার, দল আর আমলারা একাকার হয়েছে। মানুষের দাবিকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি একটি রাষ্ট্র, সমাজের জন্য ভয়ঙ্কর।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com