বাংলাদেশে রুই মাছের ৩য় প্রজন্ম সংক্ষেপে জি-৩ নামে একটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে বেসরকারী গবেষনা সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশ। এ জাতের রুই প্রচলিত জাতের চেয়ে ৩৭ শতাংশ দ্রুত বড় হয়। এই মাছের নেতিবাচক কোনো দিক নেই। রুই মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের জন্য বিখ্যাত হালদা, পদ্মা ও যমুনা নদী। এসব নদী থেকে সংগ্রহ করা রুই মাছের ডিমের জিনগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের মাধ্যমে উন্নত জাত উদ্ভাবনে ওয়ার্ল্ডফিশ প্রক্রিয়া শুরু করে ২০১২ সালে। পরে দেশের মৎস্য খামারগুলোর সবচেয়ে বড় খুলনা বিভাগের ১০টি ও রাজশাহী বিভাগের ৯টি খামারে পরীক্ষামূলকভাবে জি-৩ জাতের রুই মাছের রেনু ছাড়া হয়। এসব নদীর রুই থেকে ওয়ার্ল্ডফিশের বিজ্ঞানীদের ১০ বছরের গবেষনার ফলে উদ্ভাবিত জেনেটিক্যালি ইমপ্রুভড জি-৩ রুই। এই মাছ হাইব্রিড জাতের নয় সম্পূর্ণ দেশীয়। মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারন রুই মাছের চেয়ে অনেক বেশি। এটি প্রতিকুল পরিবেশেও ভালো বাড়ে। সাধারন রুই যেখানে বছরে ১ থেকে দেড় কেজি হয় সেখানে জি-৩ রুই আড়াই থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী গ্রামের মৎস চাষী সাইফুল ইসলাম বলেন, ১৯৮৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন মাছের রেনু পোনা চাষ করে আসছি। কিন্তু ২০২৩ সালে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী থেকে জি-৩ জাতের রুই মাছের রেনু মাত্র ৩ কেজি সরবারহ করেন। ওই রেনু থেকে প্রায় ৩ লাখ পোনা হয়েছে। খরচ হয়েছে মাত্র ৩০-৩৫ হাজার টাকা আর বিক্রি হবে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা। দীর্ঘ মাছ চাষের জীবনে এমন বেশি বর্ধনশীল মাছ কখনও দেখিনি। জেলায় আমি প্রথম এ মাছ চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছি। চাষী ও তরুন উদ্যক্তারা বলেন, জেলার কোথাও আর এ মাছ চাষ হয়নি। দেখতে খুব সুন্দর। ৩ কেজি মাছ থেকে এতো মাছের পোনা হবে আমরা কোনদিন ভাবিনী। জি-৩ রুই মাছ চাষ করে সাইফুল বেশ লাভবান হয়েছেন। তাই তরুন তরুন উদ্যাক্তারা এ মাছ চাষ করতে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মৌসুমীর মৎস্য কর্মকর্তা শাহরিয়া হোসেন বলেন, জেলায় প্রথম সমন্বিত কৃষি ইউনিট মৎস্যখাতের আওতায় মৎস্য সৃজনশীল প্রকল্পের অধীনে মৌসুমি ও পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগীতায় জি-৩ জাতের রুই মাছ চাষ করা হয়েছে। মৎস্যচাষীদের স্বাবলম্বী করতে কাজ করছে মৌসুমী। নওগাঁ সদর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা বায়েজিদ আলম বলেন, ৩য় প্রজšে§র জি-৩ রুই মাছ চাষি পর্যায়ে সম্প্রসারনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। নওগাঁ জেলার মধ্যে প্রথম মৌসুমী নিয়ে এসেছে এ মাছ। সরকারীভাবে আমরাও নিয়ে আসার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। অধিক বর্ধনশীল ও লাভজনক হওয়ায় কৃষক পর্যায়ে বেশ সাড়া ফেলেছে।