আল্লাহ তায়ালা মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন, বিধি-বিধানের বাস্তবায়ন তথা তাঁর ইবাদত-বন্দেগি করার জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা (সূরা আল বাইয়্যিনা :৭) তিনি কুরআনে মানুষ সৃষ্টির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরেছেন, ‘আমি জিন ও মানবজাতিকে শুধুমাত্র আমার ইবাদত ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি। অর্থাৎ ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি’ (সূরা যারিয়াত : ৫৬)।
এখন তাঁর এবাদত বন্দেগি করার জন্য আমাদেরকে ইলম অর্জন করতে হবে। তাঁর বিধি-বিধান সম্পর্কে জানতে হবে। শরিয়তের বিধি-বিধান সম্পর্কে জানার আগ্রহে আজ বহু মানুষ মাদরাসার শিক্ষার্থী। এলম যে শুধু মাদরাসায় গিয়েই শিখতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। বরং মাদরাসা, শিক্ষার একটি মাধ্যম মাত্র। দ্বীনি ইলম অর্জনের সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে, আলেমদের কাছ থেকে ইলম অর্জন করা।
হজরত আবু উমামা রা: থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা: সাহাবিদের বললেন, ইলম অর্জন করো তা বিদায় নেয়ার আগে। সাহাবিরা আরজ করলেন, হে আল্লাহর নবী! ইলম কীভাবে বিদায় নেবে, আমাদের মাঝে তো রয়েছে আল্লাহর কিতাব?
বর্ণনাকারী বলেন, এ কথায় তিনি রুষ্ট হলেন। এরপর বললেন, তোমাদের মরণ হোক! বনি ইসরাইলের মাঝে কি তাওরাত ও ইঞ্জিল ছিল না, কিন্তু এতে তো তাদের কোনোই উপকার হলো না! ইলমের প্রস্থানের অর্থ তার বাহকগণের প্রস্থান (মুসনাদে আহমদ ৫/২৬৬)।
এ হাদিসে আল্লাহর রাসূল সা: ইলমের বাহক তথা আলেমদের কাছ থেকে ইলম গ্রহণ করতে বলেছেন। রাসূল সা: এ শিক্ষার প্রতিধ্বনি আমরা শুনতে পাই তাঁর সাহাবিগণের কণ্ঠে। হজরত আবুদ দারদা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হায়! তোমাদের আলেমগণ বিদায় নিচ্ছেন কিন্তু তোমাদের বে-ইলম শ্রেণী ইলম অর্জন করছে না। ইলম উঠিয়ে নেয়ার আগেই ইলম হাসিল করো। ইলম উঠিয়ে নেয়ার অর্থ আলেমদের প্রস্থান (আদ দারেমি ২৫১)। বর্তমানে অনেক বড় বড় আলেম রয়েছেন। যারা মাদরাসায় পড়েননি। বরং উলামায়ে কেরামের সংস্পর্শে থেকে জ্ঞান অর্জন করেছেন। ইসলামের বিধি-বিধান সম্পর্কে অবগত হয়ে অনেক দ্বীনি কাজ আঞ্জাম দিচ্ছেন। তাই যুবক কিংবা বৃদ্ধাবস্থায় নিজেকে গড়ে তোলার জন্য আলেমদের সংস্পর্শে ইলম অর্জন করা উচিত। লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়া, বসিলা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা