ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মহাসড়কে অবাধে চলছে এক্সেল লোডের চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ ওজন বহনকারী ট্রাক। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মহাসড়ক। মহাসড়কে কোনো ওজনস্কেল না থাকায় এমনটি হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে শিগগিরই সড়কে ওজনস্কেলের ব্যবস্থা করা হবে। সড়ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, একটি ট্রাক ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ ওজন বহন করলে মহাসড়কের ক্ষতি হয় ১৬ গুণ। আর হাইওয়ে পুলিশের দাবি, প্রতিমাসে ট্রাকের ওভারলোডের কারণে দুই শতাধিক মামলা দিচ্ছে পুলিশ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থেকে বিজয়নগর উপজেলার সাতবর্গ পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। আবার খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড় থেকে কসবা উপজেলার কুটিচৌমুহনীর কালামুড়িয়া সেতু পর্যন্ত ৪৩ কিলোমিটার এলাকা কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক। এই ৭৬ কিলোমিটার মহাসড়ক খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার অধীনে। মাঝে ঘাটুরা থেকে কাউতুলী পর্যন্ত অংশ শুধুমাত্র যানযট নিরসনের দেখভাল করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ট্রাফিক বিভাগ।
এসব সড়ক দিয়ে অবাধে চলাচল করে ওভারলোড করা ট্রাক। সিলেট থেকে ঢাকা এবং সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী ট্রাকগুলো বিভিন্ন প্রকার মালামাল বহন করে চলাচল করে। প্রায়সময় দেখা যায় ট্রাকগুলো নির্দিষ্ট এক্সেল লোডের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ মালামাল বহন করছে। সরকার প্রণীত এক্সেল নীতিমালা অনুযায়ী, মহাসড়কে চালাচলকৃত ছয় চাকাবিশিষ্ট মোটরযানের সর্বোচ্চ ওজনসীমা (যানবাহন ও মালামালসহ) সাময়িক সময়ের জন্য ২২ টন, ১০ চাকাবিশিষ্ট মোটরযানের সর্বোচ্চ ওজনসীমা (যানবাহন ও মালামালসহ) সাময়িক সময়ের জন্য ৩০ টন এবং ১৪ চাকাবিশিষ্ট মোটরযানের সর্বোচ্চ ওজনসীমা (যানবাহন ও মালামালসহ) সাময়িক সময়ের জন্য ৪০ টন নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এ নীতিমালা একেবারেই মানা হচ্ছে না। ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানগুলোতে দ্বিগুণ পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে। এতে সড়কের আয়ুষ্কাল দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। আবার সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজন বহনকারী যানবাহন সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, পরিবহনের এক্সেল লোড দ্বিগুণ হলে সড়কের ক্ষতি হয় ১৬ গুণ। মানে একটি ট্রাকের এক্সেল লোড যদি ১০ টন হয় আর এটি যদি ২০ টন মাল পরিবহন করে তাহলে সড়কের ক্ষতি হবে ১৬ গুণ। এক্সেল লোডের ওপর ভিত্তি করে সরকারিভাবে নির্দেশনা দেওয়া আছে। বিষয়টি সবাই অবহিত। ওভারলোড নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন জায়গায় স্কেল লাগানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রাক-পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন খোকন জাগো নিউজকে বলেন, জেলার কোনো মহাসড়কে ওজন মাপার স্কেল নেই। শুধু চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে স্কেল আছে। ফলে তখন পরিমাপ অনুযায়ী মালামাল বহন করে। খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, মহাসড়কের নীতিমালা অনুযায়ী এক্সেল ওজনের বেশি কোনো ট্রাক মালামাল বহন করলে আমরা নিয়মিত মামলা এবং জরিমানা করছি। ট্রাকে প্রতিমাসে গড়ে অতিরিক্ত মালামাল বহনের কারণে ২০০টি মামলা এই হাইওয়ে থানায় দায়ের হয়। তবে মহাসড়কে স্কেল স্থাপন করলে ট্রাকগুলো এক্সেল লোডের চেয়ে অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে চলতে পারবে না।-জাগোনিউজ২৪.কম