শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::

জনগণ পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে উঠেছে: মান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

দেশের জনগণ সরকারের পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, মানুষ এই সরকারের ওপর এতটাই ক্ষুব্ধ যে, তিন মাস ব্যবধানে একটা কর্মসূচি দিলেও মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ছে। জনগণ পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে উঠেছে। মানুষকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে একটা সঠিক কর্মসূচির ভিত্তিতে আন্দোলন করলে এই সরকারের পতন ঘটানো যাবে।
গতকাল রোববার দুপুরে গণতন্ত্র ম আয়োজিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন: বাকস্বাধীনতা হরণের হাতিয়ার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের সমালোচনা করে মান্না বলেন, সরকার যে একটা প্রতারক, বাটপার এই কথা বারবার বলার দরকার নেই। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট থেকে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের দূরত্ব বড়জোর প্রেস ক্লাবের দোতলা থেকে নিচতলা। কিছুই করা হয়নি। দুটি ধারা পরিবর্তন করেছে। তারমধ্যে প্যাঁচ লাগিয়ে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, তারা যে আইনটা করেছে সেখানে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।
আইনে একজন মামলা কেন দিয়েছে তার কোন স্পষ্ট ব্যাখ্যা নাই, তাই এর যেকোনো ব্যাখ্যা করা যাবে। জাতিসংঘ থেকে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের দুটি ধারা বাতিলের জন্য সরকারকে বলা হয়েছিল।
মান্না বলেন, আমরা একটা সত্যিকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। সম্পূর্ণ স্বাধীনতা চাই। এই স্বাধীনতার মধ্যে কেউ আঘাত করতে পারবে না। কেউ বিধিনিষেধ দিতে পারবে না। এই স্বাধীনতাকে কেউ নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করতে পারবে না। যেমনটা এই সরকার ব্যাখ্যা করে। গণতন্ত্র মানে উনারা উন্নয়নের গণতন্ত্র বিশ্বাস করে। উন্নয়ন মানে উড়াল সড়ক। কিন্তু এত ফ্লাইওভার করার পরও যানজট কমেনি। ক্ষমতায় গেলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট কিংবা সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করা হবে জানিয়ে মান্না বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল আন্দোলন বলেন, আর যাই বলেন শেষ পর্যন্ত সরকারের লেজ ধরে টান দিতে হবে, এর কোনা বিকল্প নেই। আমরা তাই করবো।
সাইবার নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক বলেন, সরকার জাতীয় নির্বাচনের আগে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের খোলস পরিবর্তন করেছে। কারণ তারা বিদেশিদের একটি বিষয় বোঝানোর চেষ্টা করছে- সাইবার নিরাপত্তা আইনের দমনমূলক ধারাগুলোকে কিছুটা সহজ করছি। কিন্তু এই আইনে অপরাধের সংজ্ঞা একই রয়েছে। এবং অনেকটা অস্পষ্ট। পুলিশ যদি কাউকে মনে করে রাষ্ট্র বা সরকারের নিরাপত্তার জন্য তিনি হুমকি স্বরূপ কোন কারণ ছাড়া যে কোনো মানুষকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। আমাদের আপত্তিটা এখানেই। এটা জঙ্গলের শাসন। এটা কোনো আইনের শাসনের নমুনা নয়।
তিনি আরও বলেন, আজকে যে সরকার দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করেছে এর জবাবদিহিতা চাওয়াটাও সাইবার নিরাপত্তা আইনের অপরাধের মধ্যে পড়ে। এটা কোনো গণতন্ত্রের ভাষা হতে পারে না। এটা সরকারের নিরাপত্তা আইন।
আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা যদি একজোট হয়ে আইনটি বাতিলের দাবি জানাতেন তাহলে এই সরকারের সাহস ছিল না এই আইনটি করার। গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী বলেন, সরকার ১৮ কোটি মানুষ ও সারাবিশ্বকে বোকা ভাবতে পারেন। আজকে যে ধরনের শাসন তারা কায়েম করেছে তার জন্য আইনটি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। সে কারণে কোনো অবস্থাতেই তারা আইনটি বাতিল করতে পারবেন না। যতক্ষণ তারা ক্ষমতায় আছে ততক্ষণ আইনটি টিকিয়ে রাখবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার একটা ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করেছে। এরজন্য তারা দুটো কাজ করছে। একদিকে পুরো আইনি ব্যবস্থাকে ফ্যাসিস্ট করে ফেলেছে। আরেকদিকে ফ্যাসিস্ট শাসন আদর্শিকভাবে জায়েজ করার চেষ্টা করছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ছিল দুটির একটি সমন্বয়। সরকারের বিরুদ্ধে বললেই মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি। তাদের ওপর দমননিপীড়ন শুরু হয়। এবং সেটা আইনিভাবে বৈধ করার জন্য এই আইনটি করেছে। তাই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের আন্দোলন মানে সরকারকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের আন্দোলন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com