মাধ্যমিক স্তরের অষ্টম ও নবম শ্রেণির ৮৫ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ‘প্রাইভেট টিউটর’ বা ‘কোচিং’-এর ওপর নির্ভর বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযানের উইং এডুকেশন ওয়াচ। করোনা পরবর্তী ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
গতকাল শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘এডুকেশন ওয়াচ-২০২২’ শীর্ষক সমীক্ষা প্রতিবেদনের ওপর প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাইভেট টিউটর বা কোচিংয়ে নির্ভরতার চিত্র শহর ও গ্রামা লসহ সব ক্লাস্টারে একইরকম দেখা গেছে। অভিভাবকদের তথ্য অনুযায়ী, অষ্টম শ্রেণির প্রায় ৬৪ শতাংশ এবং নবম শ্রেণির ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাইভেট টিউটরিংয়ের জন্য প্রতি মাসে ১ হাজার ১০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় করেছে।
প্রাইভেট টিউটর ও কোচিং নির্ভরতা ছাড়াও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠ ও পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গাইড বইয়ের অনুসরণের চিত্রও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২২ সালে শ্রেণি পাঠ এবং পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য প্রাথমিক ৭৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিক স্তরের ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বাণিজ্যিক গাইডবই অনুসরণ করেছে। গেলো বছরের প্রথম ৯ মাসে গাইড বই সংগ্রহে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর গড়ে ৬৬৯ টাকা এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ২ হাজার ৬৫ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে বলেও অভিভাবকরা জানিয়েছেন।
তবে এই বছর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এবং খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে যুক্ত থাকার একটি ইতিবাচক চিত্র লক্ষ্য করা গেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এ বিষয়ে স্কুলের পারফরম্যান্সের ব্যাপারে অভিভাবকগণ সন্তুষ্ট ছিলেন। সমীক্ষার সকল ক্লাস্টারে একই রকম চিত্র পাওয়া গেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তবে তাদের সন্তুষ্টি থেকে অবশ্যই এটা বোঝা যায় না যে, স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশিত শিখনফল অর্জনে সহায়তা করতে সক্ষম হয়েছে। কারণ শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট কোচিং এবং বাণিজ্যিক গাইডবইয়ের ওপর অধিক নির্ভরতাও লক্ষ্য করা গেছে।
প্রেস ব্রিফ্রিংয়ে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী, গবেষণা দলের পক্ষ থেকে এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনষ্টিটিউটের গবেষক ও অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাহাদাৎ হোসেন, এডুকেশন ওয়াচের সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ এবং এডুকেশন ওয়াচের উপরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।