ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার মুক্তি এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।
আজ বুধবার ‘খাদিজার মুক্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্যের সামনে এই সমাবেশ হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যকে দেওয়া স্মারকলিপির সঙ্গে খাদিজার মুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবির পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হাজার শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরও জমা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার জন্য উপাচার্য ইমদাদুল হক দেশের বাইরে থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কামালউদ্দীন আহমদের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় খাদিজাতুল কুবরাকে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয়। তখন তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। এক বছর পার হয়ে গেলেও তাঁর জামিন হয়নি।
প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে খাদিজার ক্রিয়াকলাপ কোনোক্রমেই অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে না। খাদিজার সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যে আইনে খাদিজা আজ কারাবন্দী, সেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যে কতটা নিবর্তনমূলক, তার প্রমাণ, তীব্র সমালোচনার মুখে এর নাম পরিবর্তন করতে সরকার বাধ্য হয়েছে। কিন্তু নাম পরিবর্তন হলেও নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন একই রকম নিবর্তনমূলক বৈশিষ্ট্যের।
উপাচার্য বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক অঙ্গনের লেখক-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীরা এই সময়ে খাদিজার পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হাজার শিক্ষার্থীও খাদিজার মুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবির পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন। খাদিজা সম্পূর্ণ নির্দোষ। তিনি যেন আর এক দিনও কারাবন্দী না থাকেন, এটাই শিক্ষার্থীদের দাবি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে অবিলম্বে খাদিজাতুল কুবরার নিঃশর্ত মুক্তির জন্য যথাযথ ভূমিকা রাখবেন, এই প্রত্যাশা করছি।’
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নাট্যকলা বিভাগের সুমাইয়া, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শারমিন, আইন বিভাগের ফারিহা তাসনিম, মোহাম্মদ মারুফ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ইভান তাহসীর প্রমুখ।