শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন

রাস্তার বেহাল দশায় আগুনে পুড়ল বাড়ি

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার লক্ষীগঞ্জ-উচাখিলা সড়ক থেকে বড় ডাংরী গ্রামে প্রবেশ করতে ভোগান্তির শেষ নেই এলাকাবাসীর। শনিবার সন্ধ্যার পর বড় ডাংরী গ্রামের মোড়ল বাড়ির একটি বসতঘরে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো ঘরে। আগুন নেভাতে সাথে কথা কল দেওয়া হয় ঈশ্বরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত তাদের টিম নিয়ে রওয়ানা দেয় ঘটনাস্থলে। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে বেহাল রাস্তায়। বড় ডাংরী গ্রামে প্রবেশ করতে কসুমদ্দিন মাস্টারের বাড়ি হতে চৌরাস্তা মোড় হয়ে নওশতি রোড পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় প্রবেশ করতে পারে না জরুরি সেবার কোনো গাড়ি। যে কারণে শনিবার রাতে ভয়াবহ আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসলেও ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। তাই পুড়েছে শহিদ মিয়ার বাড়ি। এতে জরুরী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা। এমনকি মসজিদ বা হাটবাজারে যেতেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীর। কাঁদা মাড়িয়েই স্কুল-কলেজে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে , বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার মুহুর্তের মধ্যে পুরো ঘরে আগুন ছড়িয়ে পরে। রাস্তা খারাপ থাকায় আসতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, যেকারণে পুড়েছে বাড়ি। পরে স্থানীয়রা প্রায় ১ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আগুনে পুড়ে সব ছাঁই হয়ে যায় শহিদ মিয়ার। শহীদ মিয়া পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। তিনি ওই গ্রামের মৃত তমিজ উদ্দিন ফকিরের ছেলে। রবিবার সরজমিনে দেখা যায়, শহিদ মিয়ার সারাজীবনের উপার্জিত সম্বল দিয়ে একটু একটু জমানো সংসার পুড়ে ছাই। ঘরের এক কোনায় পড়ে আছে আধাপোড়া ধান- চাল। এর পাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দশ, বিশ, একশ, পাঁচশ ও হাজার টাকার বেশ কয়েকটি ঝলসানো নোট। আর অনেক নোট পুড়ে ছাই। রয়েছে গৃহস্থালীর নানান কিছু। তার পাশেই বসে আহাজারি করছে শহিদ ও তার স্ত্রী। পরিবারের দাবি, তাদের প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কান্না জড়িত কন্ঠে ভুক্তভোগী শহিদ মিয়া ও তার স্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সংসার জীবনের তিল তিল করে জমানো আমাদের সব সঞ্চয় আর গৃহস্থালীর পণ্য এক রাতের আগুনে মাত্র আধা ঘন্টায় পুড়ে গেছে। বিলাপ করতে করতে তারা আরো বলেন, চোখের সামনে সব শেষ অইতাছে কিন্তু কিচ্ছু করতাম পারছি না। খালি নিজের জান লইয়া বাইর অইছি। ওয়ার্ড মেম্বার মো. রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, বর্ষাকালে রাস্তার অবস্থা খারাপ থাকে। বরাদ্দ পেলে রাস্তা মেরামত করা হবে। আগুনে লাগার ঘটনাটি খুব মর্মান্তিক।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক মিলন বলেন, গতকাল আমি বাড়িতে ছিলাম না। আগুন লাগার ঘটনা শুনেছি, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো। স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছি। শুনেছি আগুনে পুড়ে পরিবারটি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে। রাস্তার বেহাল অবস্থায় আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যেতে না পারার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নের অনেকগুলো রাস্তা এখনও কাঁচা রয়েছে, সেগুলো পর্যায়ক্রমে করা হবে। ঈশ্বরগঞ্জ ফায়ার স্টেশন অফিসার দেলোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমাদের টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে রওনা হই। পাকা রাস্তা থেকে কাঁচা রাস্তায় নামতেই গাড়ি কাঁদায় আটকে যায়। পাকা সড়ক থেকে ঘটনাস্থল পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা খারাপ থাকায় অনেক চেষ্টা করেও গাড়ি নিয়ে যেতে পারিনি। পরে স্থানীয়রা খবর দেয় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তখন আমরা ফিরে আসি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com