ইসরাইলের মন্ত্রিসভা গতকাল বুধবার সকালে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যুদ্ধবিরতি এবং বন্দীমুক্তির চুক্তিটি অনুমোদন করেছে। ফলে আজ বৃহস্পতিবার গাজায় আটক বন্দীদের মুক্তি প্রদান শুরু হতে পারে। সেইসাথে কার্যকর হবে চার থেকে পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতি। ইসরাইলের মন্ত্রিসভায় চুক্তিটি অনুমোদিত করায় এখন তা মধ্যস্ততাকারী কাতারকে জানিয়ে দেয়া হবে। কাতার তা জানাবে হামাসকে। তখনই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। ইসরাইলি মন্ত্রীদের কতজন চুক্তির প্রতি সমর্থন দিয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে যে ৩৮ জন মন্ত্রীর বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই তা সমর্থন করেছে।
চুক্তি অনুযায়ী, আগামীকাল বৃহস্পতিবার গাজায় আটক বন্দীদের প্রথম দলটি মুক্তি পেতে পারে। তবে নানা জটিলতার কারণে তা শুক্রবারও গড়াতে পারে। চুক্তির সাথে সংশ্লিষ্টদের উদ্ধৃতি দিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, গাজায় বন্দী প্রায় ৫০ জনকে মুক্তি দেয়া হবে। এর বিনিময়ে চার থেকে পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতি হবে। এছাড়া ইসরাইলের কারাগারে আটক ১৫০ থেকে ৩০০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে। এরা হবে মূলত নারী ও শিশু। তারা পশ্চিম তীর এবং জেরুসালেমের বাসিন্দা। অধিকন্তু চুক্তি অনুযায়ী গাজায় আরো বেশি জ্বালানি এবং অন্যান্য সামগ্রী প্রবেশ করতে দেয়া হবে। এই সময় গাজার আকাশে ইসরাইলের কোনো ড্রোন বা বেলুন থাকতে পারবে না। চুক্তিতে বলা হয়েছে, মোট পাঁচটি পর্বে গাজা থেকে বন্দীদের মুক্তি দেয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে প্রায় ১২ জনকে মুক্তি দেয়া হবে। এভাবে প্রতি দিনই বন্দীরা মুক্তি পাবে। তবে ইসরাইলি মন্ত্রিসভা চুক্তিটি অনুমোদন করলেও আরো কিছু সমস্যা থেকে যাবে। ইসরাইলি নাগরিকদের ২৪ ঘণ্টা সময় দেয়া হবে। তারা এই সময়ের মধ্যে চুক্তিটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে যেতে পারবে। এই সময়ে কোনো কারাবন্দী বা পণবন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে না।
বন্দী বিনিময়ের সময়ও কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকবে। হামাস প্রথমে বন্দীদের রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করবে। রেড ক্রস তাদেরকে ইসরাইলি প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করবে। এরপর তাদের প্রাথমিক মেডিক্যাল চেকআপ করা হবে। সেখান থেকে তাদেরকে বিশেষ মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তারা তাদের পরিবারের সাথে সাক্ষাত করতে পারবে। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে হামাস এবং অন্যান্য গ্রুপ এসব লোককে গাজায় নিয়ে আসে। হামাস জানিয়েছে, প্রায় ২৪০ জন বন্দীর মধ্যে তাদের কাছে আছে ২১০ জন। এদের মধ্যে প্রায় ৪০ জন শিশু। গাজার ইসলামিক জিহাদ বলেছে, তাদের কাছে বাকি বন্দীদের বেশ কয়েকজন রয়েছে।