গাজীপুরের কালীগঞ্জে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সেই সেন্ট্রাল হাসপাতালকে সাময়িকভাবে সিলগালা করেছে উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাফছা নাদিয়া পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান করে কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালকে সিলগালা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এসএম মনজুর-এ-এলাহী। তিনি জানান, এ ঘটনায় এর আগে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সানজিদা পারভিনকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির বাকীরা হলেন ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সৈয়দ মো. শহিদুল ইসলাম (সদস্য সচিব) ও এনেসথিসিয়া বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ মো. ইমরান খান (সদস্য)। কমিটিকে তিন কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযানে অন্যদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সৈয়দ মো. শহিদুল ইসলাম, কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুন, বেঞ্চ সহকারী মাহবুবুল ইসলাম, পুলিশ ও আনসার সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক উম্মে হাফছা নাদিয়া বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসককের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও মৃত্যুর ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মৃত্যুর বিষয়টি স্বাভাবিক কোন বিষয় ছিলনা। যে কারণে আমরা সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে হাসপাতালটির হালনাগাদ কাগজপত্র না থাকার কারণে আপাতত হাসপাতালটিকে সাময়িকভাবে সিলগালা করে দিয়েছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনস্বার্থে উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের চুয়ারিয়াখোলা গ্রামের বাসিন্দা ও কালীগঞ্জ মহিলা ডিগ্রী কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মুক্তা দে(৩২) প্রসব বেদনা নিয়ে কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে ডাক্তার মো. মাইনুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রপাচার হয়। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে অন্য হাসপাতালে রেফার্ড করলে পথিমধ্যে মুক্তার মৃত্যু হয়। এছাড়াও একই বিচারক ভোক্তা অধিকার আইনে স্থানীয় শাপলা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৫ হাজার টাকা এবং কালীগঞ্জ বাজারের সুজন সরকার নামে এক হাতুরে ডাক্তারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তার দোকানে করা চেম্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।