সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন

সুদ অমার্জনীয় পাপ

মুফতি মোহাম্মদ এনামুল হাসান:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩

ইসলাম ধর্মে যেসব বিষয়াদি অত্যন্ত কঠোরভাবে নিষিদ্ধ তার মধ্যে সুদ অন্যতম। সুদকে আরবিতে ‘রিবা’ বলা হয়। এর অর্থ অতিরিক্ত, সম্প্রসারণ ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় মূল সম্পদের এক জাতীয় কিছু হাতে হাতে লেনদেন করে সময়কে উপলক্ষ করে কিছু অতিরিক্ত গ্রহণ করা। প্রদেয় কিছু ঋণ হিসেবে গ্রহণের সময় মূলের অতিরিক্ত নেয়াকে সুদ বলা হয়। আল্লাহ তায়ালা সুদ নিষিদ্ধ করে বলেছেন, ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল করেছেন। রাসূল সা: বলেন, ‘যার গোশত সুদের দ্বারা বর্ধিত হলো তার জন্য জাহান্নামই হলো যথাযথ বাসস্থল।’
সুদ প্রসঙ্গে ইসলামের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যে অংশ বাকি আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হও। যদি তোমরা তা না করো তা হলে আল্লাহ ও তার রাসূল সা:-এর পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে রাখো।’ (সূরা বাকরাহ : ২৭৮-৭৯)
সুদের লেনদেন ও সুদের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি কঠোর ও সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বিখ্যাত সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: বলেন, যারা সুদ খায়, সুদ দেয়, সুদের হিসাব লেখে ও সুদের সাক্ষ্য দেয়, রাসূলুল্লাহ সা: তাদের ওপর লানত করেছেন এবং অপরাধের ক্ষেত্রে এরা সবাই সমান।’ (মুসলিম, মিশকাত হা-২৮০৭) সুদ অত্যন্ত জঘন্যতম পাপ। সুদের পাপের বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘সুদের (পাপের) ৭০টি স্তর রয়েছে। যার নি¤œতম স্তর হলো মায়ের সাথে যেনা করার পাপ।’ (ইবনে মাজাহ-২২৭৪, মিশকাত-২৮২৬) সুদের বিষয়ে কম বেশির কোনো তারতম্য নেই। সুদের সাথে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র সংশ্লিষ্ট থাকা ও মহাপাপ।
এ বিষয়ে বিখ্যাত সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে হানজালা রা: বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি এক দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা) রিবা বা সুদ জ্ঞাতসারে গ্রহণ করে, তাতে তার পাপ ৩৬ বার ব্যভিচার করার চেয়েও অনেক বেশি হয়।’ (আহমাদ, মিশকাত-২৮২৫) আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা: বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, ‘সুদের দ্বারা সম্পদ যতই বৃদ্ধি পাক না কেন তার শেষ পরিণতি হলো নিঃস্বতা।’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত-২৮২৭) এই হাদিসসমূহ থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায়, সুদ ইসলামে সম্পূর্ণরূপে হারাম এবং এর শেষ পরিণতি চিরস্থায়ী জাহান্নাম। তাই কম হোক বেশি হোক সব প্রকার সুদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকা একান্ত জরুরি। সুদ সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করে। সুদ গরিবকে আরো গরিব করে দেয়। সুদ অর্থনৈতিক ভারসাম্য বিনষ্ট করে। সুদ নিকৃষ্টতম হারাম।
সুদের অভিশাপে চিরস্থায়ী জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হবে। তাই আসুন, সুদের মতো জঘন্যতম অপরাধ পরিহার করে আল্লাহ তায়ালার কাছে তাওবা করে জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেকে বাঁচাতে সচেষ্ট হই। লেখক : পরিচালক, ফখরে বাঙ্গাল ইসলামিয়া মাদরাসা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com