রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান যেসব বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয় তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপ্রধান স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ সংশ্লিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সেখানে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান।
বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সামনে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
দেশের কাক্সিক্ষত বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে ৫২ বছর আগে এই দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামসরা তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য চক্রান্তে এসব বুদ্ধিজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত অধ্যাপক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, শিল্পী, প্রকৌশলী ও লেখকসহ দেশের প্রায় দুই শতাধিক কৃতি সন্তানকে নিজ নিজ বাসভবন থেকে অপহরণ করে জিম্মি করে রাখে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র। তাঁদের চোখ বেঁধে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগসহ শহরের বিভিন্ন স্থানের টর্চার সেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রায়েরবাজার এবং মিরপুরের বিভিন্ন স্থানে তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর যেসব বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয় তাদের মধ্যে রয়েছেন ডা. আলীম চৌধুরী, ডা. ফজলে রাব্বি, সাংবাদিক শহীদুল্লাহ কায়সার, সিরাজুদ্দিন হোসেন, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এস এ মান্নান, সাংবাদিক ও কবি সেলিনা পারভীন, সাহিত্যিক মুনির চৌধুরী, অধ্যাপক অনোয়ার পাশা, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ সহ আরো অনেকে। সেই থেকে এই দিনটি ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। বুদ্ধিজীবী হত্যার ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।