বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত মাইলস্টোন কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ভোট নাটক যতই করেন আখেরে কাজে হবে না : সরকারকে রিজভী

শাহজাহান সাজু:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩
সরকার গণতান্ত্রিক বিশ্বকে দেখানোর জন্য এতো নাটক করছেন সবই তো তারা দেখছেন এমন মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বের চোখে ধুলো দিতে এতো আয়োজন, আখেরে কোনো কাজে আসবে না। ভোট নাটক যতই করেন, কোন লাভ নেই। ‘সকলি গরল ভেল’।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি ‘আমরা আর মামুদের’ একদলীয় ডামি নির্বাচন ঘিরে একদিকে চলছে রীতি মতো রঙ-তামাশা আর অন্যদিকে নৌকা-ডামির কামড়া-কামড়ি, গোলাগুলি, খুনোখুনি, সঙ্ঘাত-সহিংসতায় জনপদগুলো বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে সর্বত্রই।
বিরোধীদলহীন পূর্বনির্ধারিত ফলাফলের এই নির্বাচনে ভোটারদের ন্যূনতম আগ্রহ না থাকলেও গণতান্ত্রিক বিশ্বকে তথাকথিত ভোটের উৎসব দেখানোর জন্য অত্যাচার নিপীড়ন থেকে তাদের রেহাই নেই। সাধারণ মানুষকে জোর করে মিছিলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। এলাকা ছাড়া করার ভয় দেখানো হচ্ছে। নৌকার প্রচার মাইকের আওয়াজ শুনলেই লোকজন সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটের উৎসবের বদলে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা সর্বত্রই। তারা দেশটাকে যুদ্ধাবস্থায় নিয়ে যেতে চায়। সারাদেশে এখন আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে নামানো হয়েছে আমি আর ডামি’র ভোটরঙ্গে। সরকারি কর্মকর্তারাও নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী-ডামি মিছিল বের হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলছেন, এই নৌকা নুহ নবীর। আর তার ডামি পক্ষ বলছেন, নৌকা পাগলদের মার্কা। বিভন্ন স্থানে ভোট কিনতে প্রকাশ্যে টাকা বিলি করা হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে আইন-বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক ভোটার না আসার আশঙ্কায় কেন্দ্রে ভোটার আনতে তার লোকজন লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় প্রচারণায় বলছেন, বিগত ১৫ বছর উন্নয়ন উন্নয়ন বলে তাদের নেতারা গলা ফাটিয়েছে। সব মিথ্যা। উন্নয়নের নামে নৌকার লোকেরা পকেটের উন্নয়ন করেছেন। যা হয়েছে সব লুটপাটের জন্য।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যে বক্তব্যে স্বীকার করছেন যে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছি। আইয়ামে জাহেলিয়াতের মতো এক প্রার্থী আরেক প্রার্থীর কল্লা কেটে নেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। আর নির্বাচন কমিশন বসে বসে তামাশা দেখছে। সারাদেশে বন্দুক-দা-চাপাতির যুদ্ধ লেগেছে সেদিকে ইসির ভ্রূক্ষেপ নেই। তাদের কাজই হলো বিএনপিকে শায়েস্তা করার হুমকি দেয়া। ইসির কাছে নির্বাচন গৌণ। তারা চাচ্ছেন মেরে কেটে হুমকি-ধমকি দিয়ে যে যেভাবে পারে ভোটকেন্দ্রে নাবালক-সাবালক-ভোটার-অভোটার জোগাড় করে লোকারণ্য দেখাও। এটাই গণভবনের নির্দেশ, শেখ হাসিনার উৎসবমুখর নির্বাচনী মডেল। কিন্তু এই মাফিয়াচক্রের বোঝা উচিত আপনারা যে গণতান্ত্রিক বিশ্বকে দেখানোর জন্য এতো নাটক-এতো তামাশা করছেন সবই তো তারা দেখছেন। গণতান্ত্রিক বিশ্বের চোখে ধুলো দিতে এতো আয়োজন আখেরে কোনো কাজে আসবে না। ভোট নাটক যতই করেন কোনো লাভ নেই। সকলি গরল ভেল।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাস্তবে দেশকে স্থায়ীভাবে একটি নির্বাচনবিহীন রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। এ দেশের নাগরিকরদের মানুষ আওয়ামী লীগের মূলশক্তি প্রশাসন আর সন্ত্রাসীদের পরোয়া করে না। ভোট নাটক জনগণ বানচাল করে আপনাদের পতন ঘটাবেই। জনগণের সম্মিলিত শক্তির কাছে আওয়ামী পরিকল্পনা তছনছ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ সকল দলকে বাদ দিয়ে এই পাতানো নির্বাচনের অন্যতম মদদদাতা হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশের নাম সর্বজনবিদিত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসে একদলীয় নির্বাচনের পক্ষে সাফাই গাইছেন। ভারতীয় কূটনীতিকরা বাংলাদেশে এসে বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থিতিশীলতা চান বাংলাদেশের গনতন্ত্র-মানুষের অধিকার চান না। এখন তাদের থলের বিড়াল বেরুতে শুরু করেছে। ভারত মনোনীত প্রার্থীরা বীরদর্পে বলছেন-‘আমাকে ভারত মনোনয়ন দিয়েছে। আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’
মেহেরপুর-১ (মুজিবনগর, সদর উপজেলা) আসনের সাবেক দুই মেয়াদের অটোপাস সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেছেন, আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ তাহলে বাংলাদেশ কি পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ এমন প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, তলে তলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভোমত্ব কি বিকিয়ে দেয়া হয়েছে? ভারত এখন তাদের এ দেশীয় অনুচরদের নমিনেশনও দিচ্ছে? প্রফেসর আব্দুল মান্নানের এই বক্তব্য চরম রাষ্ট্রদ্রোহিতা। অথচ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা প্রতিবাদেরও সাহস পায় না সরকার বা নির্বাচন কমিশন। তার মানে তারা স্বীকার করে নিয়েছে ভারত তাদের অনুগত বহু সংখ্যককে মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা জানতে চাই প্রফেসর আব্দুল মান্নানের মতো আর কে কে ভারতের প্রার্থী তার তালিকা প্রকাশ করা হোক। দেশের জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বান গণতন্ত্র হত্যার জন্য ভারতের প্রার্থীদের বিজয়ী করার এই পাতানো নির্বাচনে কেউ ভোট দেবেন না। দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে না চাইলে ভোট বর্জন করুন। তারা নির্বাচিত হলে দেশকে ভারতের হাতে তুলে দেয়াটা অসম্ভব কিছু না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com