সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন

স্বতন্ত্র প্রার্থী একাই চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রাচারণা

জাজিরা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পালং-জাজিরা তথা শরীয়তপুর-১ আসনে লড়বেন মো. গোলাম মোস্তফা হাওলাদার। আসনটিতে তার প্রতীক ঈগল পাখি। গোলাম মোস্তফার প্রচারণায় নেই কোনো নেতাকর্মী বা সমর্থক। তাই একাই চালাচ্ছেন নিজের প্রচারণা। নির্বাচন আসলে দেখা যায় ভোটের প্রচারণা মানেই দলবদ্ধ ভাবে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়া পোষ্টার লাগানো থেকে শুরু করে সকল যায়গায় জনসভার আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে ব্যতিক্রম। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গোলাম মোস্তফা হাওলাদার একাই নিজের প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রচার-প্রচারণায় যখন এ আসনের অন্য প্রার্থীরা দলবল নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফা হাওলাদার নিজের প্রচারণায় রয়েছে ভিন্নতা। অটো গাড়িতে মাইক লাগিয়ে একাই ছুটে চলেছেন নিজের পক্ষে ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে। আবার প্রার্থীরা যেখানে ভোটারদের চা খাওয়ান, সেখানে ভোটাররা এই প্রার্থীকে চা খাওয়ান। জানা যায়, তপশিল ঘোষণার পরই শরীয়তপুর-১ আসনে প্রথম মনোনয়ন কেনেন জাজিরা উপজেলার নাওডোবার গোলাম মোস্তফা। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ সাড়ে ৭ লাখ টাকা। আওয়ামী লীগের দুর্গ খ্যাত জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শরীয়তপুর-১ (সদর-জাজিরা) আসনে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাঁচ প্রার্থীর সঙ্গে লড়ছেন এই মোস্তফা হাওলাদার। মোস্তফার এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রচারণায় এলাকায় সাড়া ফেলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। ভাড়ায় নেওয়া একটি অটোরিকশা নিয়ে প্রতিদিন তিনি অন্তত ৫ থেকে ৬টি ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণা করে থাকেন। নির্বাচনী কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন অটোরিকশা চালক ও দুই সহযোগী। এই অটোরিকশায় দুইটি মাইক লাগানো রয়েছে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পোস্টার ও লিফলেট নিয়ে যান। সঙ্গে মইও রাখেন। নিজেই মই দিয়ে বিভিন্ন স্থানে উঠে নিজ হাতে পোস্টার টানিয়ে দেন। এলাকায় ভোট চাইতে গিয়ে কাউকে সঙ্গে না রাখার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কর্মীবান্ধব আমাদের যেই নেতৃত্ব, সেখানেই মূল সমস্যা । ভোটের আগে কেউ যদি আমার জন্য কাজ করে, তাহলে আমি নির্বাচিত হলে আমার কাছে তার একটা চাহিদা থাকবে। একজন এমপি যত ভালো হোকনা কেনো, কর্মী ভালো হবে; এটা আশা করা যায় না। কর্মী আসে তার স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে নয়। নায্য চাহিদা হলে হয়তো আমি পূরণ করতে পারব। কিন্তু যদি কোনো অবৈধ সুবিধা নিতে চায়, তাহলে আমি তা দিতে পারব না। এজন্য আমি সঙ্গে কাউকে রাখছি না। মানুষ আমার প্রচারণা দেখে নয়, সততা দেখে ভোট দেবে। আমি ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। নির্বাচিত হলে ভোটের প্রতিদানে উন্নয়নের কাজ করে যাব। গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, কর্মী সঙ্গে রাখতে হলে অনেক টাকার দরকার। সেই টাকা আমার কাছে নেই। নির্বাচনের আগে আমার কাছে ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা শেষ। ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দিয়ে যে তাদের সম্মানী দিব, সেই টাকাও নেই। কেউ যদি স্বেচ্ছায় এজেন্ট হয় তাহলে হতে পারে। স্থানীয় ভোটাররা বলেন, গোলাম মোস্তফা হাওলাদার একজন নতুন প্রার্থী। তার নিজের প্রচারণা দেখি, তিনি নিজেই করছে, আবার তিনি নিজেই গাছে উঠে পোস্টারও টানাচ্ছেন। শুনেছি, তার তেমন টাকা-পয়সাও নাই। এজন্য কর্মী ও রাখতে পারছে না। এমন প্রার্থীকে ডাক দিয়ে আমরা তাকে চা খাওয়াচ্ছি, তার কাছ থেকে আমরা কেন চা খাব। তিনি পাশ করবেন কিনা, তা জানিনা। তবে এমন মানুষ নির্বাচনে জয়ী হলে, দেশের জন্য ভাল হবে। জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর-১ আসনে রয়েছে দুইটি পৌরসভা ও ২৩টি ইউনিয়ন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৩৪৯ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯০ হাজার ৪০৮ জন, নারী ১ লাখ ৭২ হাজার ৯১০ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ১১ জন রয়েছেন। এসব ভোটাররা ১৩৫টি ভোটকেন্দ্রের ৪৭৮টি কক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আসনটিতে অস্থায়ী ভোটকক্ষের সংখ্যা ৪৪টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে ৬৭ হাজার ৩৩০ জন ভোটার বেড়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com