জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ (সদর) আসনে ১৪৪টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ আসনে টানা পাঁচ বারের এমপি ও দুই বারের হুইপ আতিউর রহমান আতিক একটি ইউনিয়নের ৪টি কেন্দ্রে পেয়েছেন ২ ভোট। দুই কেন্দ্রে একটি করে এবং দুটি কেন্দ্রে কোনো ভোট পাননি তিনি।
গত রোববার (৭ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শূন্য ভোট পাওয়া কেন্দ্র দুটি হলো, সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের বামনের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও বাঘেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। ওই ইউনিয়নের নাগপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও দড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একটি করে ভোট পেয়েছেন তিনি।
জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাঘেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩ হাজার ১৭৮ জন ভোটার ভোট দেন। এতে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানুয়ার হোসেন ছানু পেয়েছেন ২ হাজার ৯৩২ ভোট। বাকি ভোট অন্যান্য প্রার্থীরা পেলেও নৌকা প্রতীকের আতিক কোনো ভোট পাননি।
বামনের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৩ হাজার ৩৮৫ জন ভোটার। এর মধ্যে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানুয়ার হোসেন ছানু পেয়েছেন ৩ হাজার ৫৫ ভোট। এখানেও বাকি ভোট অন্যান্য প্রার্থীরা পেয়েছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিক কোনো ভোট পাননি।
শেরপুর সদরের এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ২৩ হাজার ৬৬৪ জন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪১ জন ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু ট্রাক প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আতিউর রহমান আতিক নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯৩ হাজার ১৭৫ ভোট। এতে ৪৩ হাজার ১০৩ ভোটে হারেন আতিক। এ আসনে জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক মনি লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৩০৭ ভোট, তৃণমূল বিএনপির থেকে ফারুক হোসেন সোনালি আঁশ প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১৯২টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ নোঙ্গর প্রতীকে পেয়েছেন ১৭২ ভোট, বিএসপির প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ একতারা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭৪ ভোট এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বারেক বৈদেশি গামছা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২০৫টি। শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিউর রহমান আতিক টানা সপ্তম জাতীয় সংসদ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত পাঁচ বার আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার বিপক্ষে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী এর আগে নির্বাচন করলেও তাকে কেউ হারাতে পারেনি। তবে জেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা এবার তার প্রতি মনঃক্ষুণ্ন হয়ে তার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণে তার ভরাডুবি হয়েছে বলে মনে করেন তারা।