মাঘের হাড় কাঁপানো শীতে যেখানে ঘরের বাইরে বের হওয়াই কষ্টের। কুয়াশার দাপট ও হিমেল বাতাসে মানুষ ও প্রাণিকুলের যেখানে স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ পতন ঘটছে। সেখানে মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহ করে জীবনকে স্বচল রাখছেন কৃষকরা।
হাড় কাঁপানো শীতের সাথে লড়াই করেই টাঙ্গাইলের গোপালপুরে চাষীরা মাঠে ছুটছেন ধানের চারা রোপণ করতে। এখানকার কৃষকের এখন প্রধান লক্ষ্য বোরো ধানের আবাদ। মাঘের প্রথম সপ্তাহটি বোরো ধানের চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। তাইতো সাধারণ মানুষ ঘরবন্দি হয়ে থাকলেও কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠেই কৃষকরা ছুটছেন জালা (ধানের চারা) উঠাতে।
কুয়াশায় ঢাকা ধানের চারা তুলতে তুলতে হাত জমে আসে। তারপরও কৃষকদের কেউ নিজের জমিতে আবার কেউবা দৈনিক ৬০০ টাকা মুজুরিতে কাজ করছেন ধানক্ষেতে। ধানের চারা উঠানোর পর তা রোপণ করতে নামতে হচ্ছে প্রস্তুতকৃত জমির বরফ শীতল পানিতে।
উপজেলার চতিলা গ্রামের ষাটোর্ধ্ব কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, সকালে ধানের চারা তুলতে গিয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে শরীর কাঁপতে থাকে। বাধ্য হয়ে জমি থেকে উঠে বাড়ি চলে আসি। প্রতিবছর বোরো ধান রোপণের সময় এলে এ রকম ঠান্ডা পড়ে। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়েই কাজ করতে হয় জমিতে।
কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, হাড় কাঁপানো শীতের সাথে লড়াই করে বাধ্য হয়েই কাজ করতে হয়। নিজের জমিতে পাওয়া ধান দিয়েই সারাবছর সংসার চলে। কৃষক হাছেন আলী জানান, আমাদের আবাদ করা ফসলেই দেশের মানুষ বেঁচে আছে। অথচ কৃষকের কোথাও মূল্যায়ন নাই। কৃষকরা যেন সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে ও প্রকৃত চাষীরা সমাজে সম্মান পায় সেজন্য সরকারের উচিৎ কৃষকদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা এবং কৃষিপণ্যের দাম কমানো।
গোপালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন, গোপালপুর উপজেলায় এবার ১৪ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।