বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, ইসলাম মালিক ও শ্রমিকের মাঝে কোনো বৈষম্য সৃষ্টি করেনি। বরং তাদের উভয়ের মাঝে এক চমৎকার ভারসাম্য দিয়েছে। এই ভারসাম্যের নাম ইসলামী শ্রমনীতি। আজকের সমাজে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করা অত্যাবশ্যকীয়।
তিনি গতকাল সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি আয়োজিত ফেডারেশনের কার্যকরী পরিষদের প্রথম অধিবেশন-২০২৪ এ সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে মূলমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, গোলাম রব্বানী, লস্কর মো: তসলিম, কবির আহমেদ, মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া ও মনসুর রহমান প্রমুখ।
আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, মালিক ও শ্রমিকের দায়িত্বের ব্যাপারে ইসলামের বক্তব্য সুস্পষ্ট। ইসলাম বলেছে শ্রমিককে হতে হবে কর্মদক্ষ, যোগ্য, শক্তি-সামর্থ্যবান, আমানতদার ও সততার অধিকারী। অপরদিকে মালিককে বলা হয়েছে শ্রমিককে কর্মে নিয়োগ করার আগে তার কাজ ও মজুরি নির্ধারণ করতে। শ্রমিককে এমন কাজ করতে দেয়া যাবে না যা শ্রমিকের সামর্থ্যরে বাইরে। শ্রমিকের থেকে জোর করে কাজ আদায় করা যাবে না। শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বে তার মজুরি পরিশোধ করতে হবে। শ্রমিকের মজুরি তার কর্ম ও বাস্তবতার নিরিখে নির্ধারিত হবে। তাকে কোনোভাবেই ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। মালিক ও শ্রমিকের মধ্যকার সম্পর্ক হবে ভ্রাতৃত্বের। আল্লাহর রাসুল সা: বলেছেন, অধীনরা তোমাদের ভাই। যারা অধীনদের সাথে দুর্ব্যবহার করবে তারা জান্নাতে যেতে পারবে না। ইসলাম ছাড়া আজ পর্যন্ত অন্যকোনো মতবাদ শ্রমিকদের এতটা সম্মানিত করতে পারেনি।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে শ্রমিকরা অবহেলিত ও নির্যাতিত-নিষ্পেষিত। এই মেহনতি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য সংঘবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই। বাংলাদেশে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য প্রতিষ্ঠার পর থেকে অসহায় শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার আন্দোলন করে যাচ্ছে। এই আন্দোলনকে আরো দুর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই লক্ষ্যে সারাদেশের জেলা-মহানগরী হতে শুরু করে ট্রেড ইউনিয়নের কাজকে আরো গতিশীল করতে হবে। প্রতিটি ইউনিটকে মজবুত ভিত্তি দান করতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। যেখানে শ্রমিকরা নির্যাতিত ও শোষণের শিকার হবে সেখানেই সততার সাথে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কোনো পক্ষের উস্কানিতে পা না দিয়ে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
সর্বোপরি মালিকদের সাথে দ্বন্দ্ব নয় ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। তাদের কাছে ইসলামী শ্রমনীতির অনুপম আদর্শ তুলে ধরতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পূরণ করলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বরং লাভবান হবে। শ্রমিকরা সন্তুষ্ট হলে মালিকদের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। তাদের ব্যবসার পরিসর বাড়বে। এতে মালিক ও শ্রমিক উভয়ে লাভবান হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি