মেরিন একাডেমিতে ৩৫তম স্থান অধিকারী সাতক্ষীরার সেই শামীম কবির নিরবের ভর্তির দায়িত্ব নিয়েছেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে শামীম ও তার মায়ের হাতে ভর্তির প্রয়োজনীয় টাকা তুলে দেন পুলিশ সুপারের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সজিব খান। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সজিব খান বলেন, সাতক্ষীরা শহরের সিটি কলেজ এলাকার চা বিক্রেতা সিদ্দিক মোড়লের ছেলে শামীম কবির নিরব ২০২০ সালে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন্স স্কুল থেকে মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ এবং ২০২২ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছে না শামীম এমন একটি খবর জেলা পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসে। অর্থের অভাবে এমন একজন মেধাবী ছাত্র ভর্তি হতে না পারার বিষয়টি দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী শামীমের ভর্তির সব খরচ বহনের সিদ্ধান্ত নেন। রোববার বিকালে শামীম এবং তার মায়ের হাতে টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তার সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এসব মেধারীরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সম্মিলিতভাবে এগিয়ে এলে এসব মেধাবী ছাত্ররা অভাবের কারণে হারিয়ে যাবে না।’ ওরা বিকশিত হয়ে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে অবদান রাখবে। এদিকে, ভর্তির টাকা পেয়ে শামীম কবির নিরব জানায়, পুলিশ সুপার স্যার আমার ভর্তির টাকা তুলে দিয়েছেন। এজন্য পুলিশ সুপার স্যার ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতাজ্ঞতা জানাচ্ছি। এছাড়া অনেক মানুষ আমার সহযোগিতা করতে চেয়েছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি ভর্তি হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারি সবার কাছে সেই দোয়া চাচ্ছি। শামীমের মা আঞ্জুমান আরা বলেন, ছেলের ভর্তির টাকা দিয়ে আমাদের পাশে দাড়ানোর জন্য পুলিশ সুপার স্যারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের ছেলে মানুষের মতো মানুষ হয়ে দেশের সেবায় কাজ করতে পারে সবার কাছে সেই দোয়া চাচ্ছি। তার পিতা সিদ্দিক মোড়লও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং একইসঙ্গে সবার কাছে তার ছেলের জন্য দোয়া চেয়েছেন। প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরার শহরের কাসেমপুর গ্রামের চায়ের দোকানদার সিদ্দিক মোড়লের মেধাবী ছেলে শামীম কবির নিরব চট্টগ্রামের মেরিন একাডেমিতে মেধায় টিকেও টাকার জন্য ভর্তি হতে পারছিলো। অনিশ্চিয়তায় দিন কাটছিল তার। মেরিন একাডেমি নটিক্যালে ভর্তি হতে তার প্রয়োজন ছিল এককালীন এক লাখের বেশি টাকা। কিন্তু গরিব পিতার পক্ষে এককালীন এত টাকা যোগাড় করা সম্ভব হয়নি। তাই ভর্তি নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ছিল নিরবের পরিবার। এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হলে ভর্তি ও অন্যান্য খরচের টাকার ব্যবস্থা করে দেন সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী।