জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় নেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন,‘পার্বত্য এলাকায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় ব্যর্থ সরকার, সরকারের বাহিনীর জাকজকম আছে, সুযোগ সুবিধা আছে, কিন্তু কাজের ব্যাপারে জবাবদিহিতা নেই। তাদের জবাবদিহিতা না থাকায় এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। শুধু সেখানেই নয়, দেশের সব খানেই একই অবস্থা, কোনো সেক্টরেরই জবাবদিহিতা নেই।
গতকাল রোববার (৭ এপ্রিল) বিকেলে পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে ৭ দিনের রংপুর সফরে এসে সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় তার সাথে দলটির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, উপদেষ্টাও জেলা আহ্বায়ক আলাউদ্দিন মিয়া, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদস্য সচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, কেন্দ্যীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক শাফিউল ইসলাম শাফি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লোকমান হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, হাসানুজ্জামান নাজিমসহ জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এর আগে সার্কিট হাউজে পৌছলে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ডিসি মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান, এসপি ফেরদৌস আলী চৌধুরী ছাড়াও দলীয় নেতাকর্মীরা।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জিএম কাদের বলেন,‘সেখানে ব্যাংক লুট করা হলো, অপহরণ করা হলো। সব থেকে বড় কথা হলো থানা আক্রমন করা হলো। সেখান থেকে অস্ত্র লুট করা হলো। সেটা শুধু একদিনই শেষ হলো তা নয়, আবার পরবর্তীতে হলো। আমার কথা হলো কেউ এটা করতে পারে, কিন্তু করার সময় বাধাগ্রস্ত হওয়ার কথা। সেটা না হলেও করে যাওয়ার সময় বাধাগ্রস্ত হয়ার কথা। অথবা ২/১ দিন পরে যখন আসলো তখন ডেফেনিটলি বাধাগ্রস্ত করার প্রিপারেশন থাকা উচিৎ ছিল। কিন্তু সেটার কিছুই আমরা দেখলাম না। এর মাধ্যমে বুঝা যায়, সরকারের বাহিনীর জাকজকম আছে, সব কিছুই আছে। সুযোগ সুবিধাও আছে। কিন্তু কাজের ব্যপারে জবাবদিহিতা নেই। সার্বিকভাব এই সরকারের আগা-গোড়া আমরা দেখছি কারো কোন জবাবদিহিতা নেই। যে যার ইচ্ছা তাই করে বেড়াচ্ছে। দায়িত্বের ব্যাপারে উদাসীন পাওয়া যাচ্ছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি যে, এই সামান্য ঘটনাই যদি সরকারকে এরকম হিমশিম খেতে হয় তাহলে বড় ধরনের কোনো বিপদ হলে আমরা কোথায় গিয়ে দাড়াবো। ‘
দলের ভাঙ্গন প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, আমাদের দল অনুমোদিত দল। এবং কিভাবে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছে সেটাও সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এবং এখন যেভাবে চলছে সেটাও সরকার কর্তৃক অনুমোদিত। এর বাইরে কেউ যেকোনো লোক যেকোনো দল করতে পারেন। তারা রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন করা জাতীয় পার্টি নামের যে দল সেটার মালিক আমরা। আর অন্য যারা এই নামে করছেন তাদের আইনগতকোন ভিত্তি নেই। এই নামে কোনো দল রেজিষ্ট্রেশন দেয়ারও সুযোগ নেই।‘ জিএম কাদের বলেন,‘কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো এই বিষয়গুলো জাতীয় পার্টির মধ্যে বিভেদ তৈরি করা, দ্বন্দ্ব তৈরি করার বিষয়ে সরকারের একটা ভূমিকা আমরা সব সময় লক্ষ্য করি। এবং সরকারপন্থী কিছু মিডিয়া সেটা আবার বিশেষ ভাবে প্রচার করার ব্যবস্থাও করা হয়। এটা আমাদের দলকে দুর্বল বা বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করা হয়। এবারও দেখলাম সেই বিষয়। এটা একটা মীমাংসিত বিষয়। সেখানে যদি আমাদের দলের নাম ব্যবহার করে অন্য কিছু করতে চায়, সভা সমাবেশ করতে চায়, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নাই। কিন্তু আমাদের নাম এবং একই ধরনের লোগো ব্যবহার করে যখন নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে বা সরকারের কাছে আবেদন করে সভা সমাবেশ করতে চান। এবং সরকার ও নির্বাচন কমিশন যখন জানে যে এই আবেদনটি আইনগতভাবে বৈধ আবেদন নয়। তারপরেও যদি সরকার এটাকে অনুমতি দেন। তাহলে সরকারের সংশ্লিষ্টতা এখানে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হবে। যা হবে দুঃখজনক।‘সার্কিট হাউজে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। পরে তিনি সেনপাড়ার পৈত্রিক নিবাস স্কাইভিউতে যান। ৭ দিনের কর্মসূচিতে জিএম কাদের বিভিন্ন ইফতার মাহফিল, দলীয় কর্মসূচি ছাড়াও ঈদ-উল ফিতর উদযাপন শেষে ১৪ এপ্রিল ঢাকা ফিরবেন।