স্বাধীনতার পর থেকে চরফ্যাশনবাসীর প্রাণের দাবী ছিল বেতুয়া টু ঢাকা নৌরুটে লঞ্চযাত্রা চালু। ২০০৮সালের পর স্থানীয় সন্তান আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি হবার বহু প্রচেষ্টার পর বেতুয়া টু ঢাকা নৌরুটে ৩টি লঞ্চ চালু করেন। এ যাবৎ ৩টি কোম্পানির ৩টি লঞ্চ চললেও যাত্রীদের কাছে থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কৌশলে রোটেশন প্রথা চালু করে যাত্রীদেরকে জিম্মি করে দুর্ভোগে পোহাচ্ছে। এতে কেবিনসহ ডেগে জায়গার সংকট দেখা দিয়েছে। ঝুকি নিয়ে হলেও যাত্রীদেরকে যাত্রায়াত করতে বাধ্য করছে লঞ্চ মালিকপক্ষ। এই রুটেশন প্রত্যাহারের দাবী করছেন এলাকাবাসী। স্থানীরা জানান, আবদুল্যা আল ইসলাম জ্যাকব এমপি’র প্রচেষ্টায় জনগনের দুর্ভোগ কমাতে একাধিক কোম্পানীর লঞ্চ নিয়মিত চলাচলের কারণে তখন থেকেই ঘাটটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সম্প্রতি লঞ্চ মালিকরা রোটেশন সিন্ডিকেট করে দৈনিক একটি লঞ্চ বেতুয়া থেকে ঢাকায় ছাড়েন। যাত্রী খালেক বলেন, এক মালিকের লঞ্চ হওয়ায় যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ খারাপ আচরণ করছে। লঞ্চ কর্তপক্ষের খামখেয়ালীপনা বেতুয়াঘাট ছেড়ে অন্যস্থান দিয়ে যাত্রা করছে। ঢাকাগামী অধিকাংশ যাত্রী বাধ্য হয়ে এখন অতিকষ্টে ঘোষেরহাট, পার্শ্ববর্তী উপজেলা লালমোহন, জেলা সদর ভোলা ঘাটের লঞ্চ যোগে যাতায়াত করছেন। ঘাটের দায়িত্বশীল একাধিক সুত্রে জানাযায়,ঢাকা টু বেতুয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শুরু পর পর্যায়ক্রমে এই রুটে তিনটি লঞ্চ কোম্পানি যুক্ত হয়। সরকারি অনুমোদন অনুযায়ী প্রত্যেক কোম্পানির একটি করে লঞ্চ দৈনিক যাতায়াতের কথা থাকলেও রোটেশন অনুযায়ী প্রথমে তিন কোম্পানির দৈনিক ৩টি লঞ্চ নিয়মিত যাতায়াত করতো। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ৩টি লঞ্চের পরিবর্তে এক মালিকের দৈনিক ২টি লঞ্চ যাতায়াত করে। বর্তমানে ১টি লঞ্চ যাতায়াত করছে। কবির হোসেনসহ একাধিক যাত্রী জানান, মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যাত্রীদের হয়রানি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন, হাতে বহনকারী ব্যাগ বা বস্তা থেকেও তারা ভাড়া নিচ্ছেন। একসময় প্রতিযোগীতায় লঞ্চ চালিয়ে ঢাকা ঘাটে যেত এসব লঞ্চ। তখন যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারতো। কিন্তু এখন আর ঠিক সময়ে পৌছতে পারেনা। বেতুয়া ঘাটের চা দোকানদার ফজলু বলেন, আগে এই ঘাটে অনেক যাত্রী হত। আমরা অনেক টাকার বেচাকেনা করতাম। এখন বেচাকেনা অনেক কমে গেছে। ঘাট লেবার শ্রমিক সর্দার এছাক বলেন, আগে প্রতিদিন ৩-৪ টি লঞ্চ এঘাট থেকে ছাড়ত। আমরা যাত্রীদের সেবা দিয়ে পরিবার নিয়ে ডাইল ভাত খাইতাম। এখন দৈনিক ১টা লঞ্চ চলে আগের মত কামাই নাই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক লঞ্চের সুপারভাইজার বলেন, এভাবে লঞ্চ চালিয়ে মালিকরা অনেক লাভবান হয় কিন্তু লঞ্চ স্টাফদের অনেক লোকসান হয়, দুই তিন দিন পর পর একটা ট্রিপ পাই, আমরা কি করব? মালিকরা যেভাবে সিদ্ধান্ত দেয় আমরা তাদের কথা মেনে সেভাবেই লঞ্চ চালাতে হয়। কর্ণফুলী লঞ্চ মালিক মো.সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এরুটে যাত্রী কিছুটা কম থাকায় এখন একটি লঞ্চ চলে। যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সকল লঞ্চ মালিকরা খুব শিগগিরই আলোচনা করে চলমান সমস্যা সমাধান করবো। চরফ্যাশন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার মোঃ সালেক মূহিদ বলেন, এবিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিআইডব্লিও টিএ এর সঙ্গে কথা বলে সমস্যাটি নিরেশনের চেষ্টা করা হবে।