ঘূর্ণিঝড় রিমাল তান্ডবে বরিশাল জেলার দশ উপজেলার ১৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে প্রায় দুই কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার ৫৪৮ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের স্থপনার ক্ষতি হলেও পাঠদানে কোন সমস্যা হচ্ছেনা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের তালিকা অনুযায়ী, জেলায় ১ হাজার ৫৯০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে ১৭০ বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর ওপর গাছ পড়ে ছাদ, ছাউনির টিন, ফ্লোর, দরজা-জানালা ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। সেইসাথে অধিকাংশের টয়লেটও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত তালিকা অনুযায়ী, বরিশাল সদরে পাঁচটি, বাবুগঞ্জে ১১টি, আগৈলঝাড়ায় পাঁচটি, উজিরপুরে ১২টি, গৌরনদীতে ১৯টি, বাকেরগঞ্জে ৩৪টি, বানারীপাড়ায় আটটি, মুলাদীতে ৩১টি, মেহেন্দিগঞ্জে ৪১টি এবং হিজলা উপজেলায় চারটি বিদ্যালয় ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ে বরিশাল নগরীর সিসটার্স ডে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর হেলে পড়েছে। এছাড়াও পানি পানের জন্য বসানো নলকূপ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক মাহফুজা খানম জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সময় সেপটিক ট্যাংক পানিতে ভরে গেছে। দরজা-জানালা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সীমানা দেয়ালও হেলে পরেছে। হিজলা উপজেলার ৪৮ নম্বর চর বাউশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, ঝড়ে বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘরের চালা ও বেড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্য অবকাঠামো থাকায় সেখানে আপাতত ক্লাশ নেয়া হচ্ছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামোর এখনো সংস্কার কাজ শুরু করা না হলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। এ বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে জেলার বেশ কিছু বিদ্যালয়ের স্থপনার ক্ষতি হলেও পাঠদানে কোনভাবে ব্যাহত হয়নি। আর্থিক ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে ঘাট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বিশালাকৃতির পল্টুনের আঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবন। স্কুলের প্রধানশিক্ষক মোঃ হারুন-অর রশিদ জানান, রিমালের আঘাতে উলানিয়া কালিগঞ্জ লঞ্চঘাটের বিশালাকৃতির লোহার পল্টুনটি ছুটে যায়। সেটি নদী তীরবর্তী উলানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবনে এসে আঘাত করে। এতে ভবনের ওই অংশের দেয়ালসহ দুটি কলম ভেঙে যায়। ভাঙা কলম দুটির মধ্যে একটির রড বেঁকে গেছে, আর একটির রড বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আনিসুল ইসলাম।