বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মাদ তাহের বলেছেন, সময় ও পরিবেশ-পরিস্থিতির সাথে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের চ্যালেঞ্জ সামনে আসে এবং বর্তমানে তা সংখ্যায় অনেক বেশি। রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক চ্যালেঞ্জসহ অতীতের চেয়ে বর্তমান সময়ে নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জ অনেক বৃদ্ধি পেলেও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। তাই বর্তমান নেতৃত্বকে সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। গত রোববার (২৩ জুন) রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৪ সেশনের ২য় সাধারণ অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের পরিচালনায় অধিবেশনে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম। এতে সারাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অধিবেশন উদ্বোধন করেন ছাত্রশিবিরের ২৯৯তম শহীদ মহিউদ্দিন সোহানের বাবা। এতে ষাণ্মাসিক বিদায়ী কার্যকরী পরিষদের সদস্যবৃন্দও তাদের বিদায়ী বক্তব্য প্রদান করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা: তাহের বলেন,‘আধুনিক যুগে এসে তথ্যপ্রযুক্তিকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। তবে প্রযুক্তির আগ্রাসন বুদ্ধিবৃত্তিক কৌশলে মোকাবেলা করতে হবে। বিশেষ করে সংগঠেনের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নৈতিকতার ভিত্তিতে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে; যাতে সংগঠনের জনশক্তিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাবতীয় আগ্রাসন, অনৈতিকতা ও অন্যায় বিরোধী হিসেবে গড়ে উঠবে।’
তিনি আরো বলেন,‘প্রত্যেক জনশক্তিকে স্বপ্নচারী হতে হবে। নিজ জনপদ নিয়ে স্বপ্ন দেখতে হবে। নিজেদেরকে সৎ ও দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি আগামীর নেতৃত্ব তথা ছাত্র সমাজকে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করতে হবে। অতীতের চেয়ে চলমান সময়ে সৎ মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। জনসাধারণ সৎ নেতৃত্বের জন্য মুখিয়ে আছে। ছাত্রশিবিরেকে সেই সৎ নেতৃত্ব সাপ্লাই করতে হবে।’
প্রধান বক্তার আলোচনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন,‘সংগঠনের সকল কাজে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। জনশক্তি, শুভাকাংখী, অভিভাবক ও সাধরণের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। সংগঠনকে গণমুখী করতে এর বিকল্প নেই।’
তিনি আরো বলেন,‘জনশক্তিদের মসজিদমূখী তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করার পাশাপাশি মসজিদের মুসল্লিদের সাথে সখ্যতা বৃদ্ধি করতে হবে। জনপদের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হলে তাদের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি অতীব জরুরী।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন,‘দাওয়াতী ময়দান ছাত্রশিবিরের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। বাংলার এ জমিন শহীদের রক্তে সিক্ত হয়েছে। এখন প্রতিটি জনপদে দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে দ্বীন কায়েমের শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে হবে। সর্বস্তরের সকল জনশক্তিকে দাওয়াতি কাজকে প্রাধান্য দিতে হবে। এ জমিনের এক ইঞ্চি জমিনও যেন দাওয়াতি কাজের আওতার বাইরে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন,‘আজ এ অধিবেশন থেকে ইসলামী আন্দোলনের জন্য শহীদ, আহত, জীবন্ত শহীদ, কারাবরণকারী ও জুলুমের শিকার সকলের কুরবানি কবুলের জন্য মহান রবের কাছে দোয়া করছি। দেশ আজ গভীর সঙ্কটে নিপতিত। বর্তমার পরিস্থিতি ইসলামী আন্দোলনের জন্য সুখকর নয়। এই পরিস্থিতি পরিবর্তন অতীব জরুরি। তাই আমদের দাওয়াতী ময়দানে বিচরণ আরো বাড়াতে হবে। সংগঠনকে গতিশীল করতে ব্যাপকভিত্তিক দাওয়াতের বিকল্প নেই।’
তিনি আরো বলেন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নৈতিকতা ও জ্ঞানের ভিত্তিতে সংগঠন পরিচালনা করা। আধুনিক বিশ্বের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। সর্বস্তরের জনশক্তিদের ইসলামের সঠিক জ্ঞানার্জন ও সে অনুযায়ী আমলের দিকে বিশেষ নজর দেয়া দরকার। সমৃদ্ধ জ্ঞান, নৈতিকতা, সাহসিকতা ও ঈমানের শক্তির বলে বলিয়ান হয়ে দেশ ও ইসলামের জন্য কাজ করতে পারলে আমাদের এই মাতৃভূমি একটি কল্যাণময় রাষ্ট্রে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ । প্রেস বিজ্ঞপ্তি