খালের মধ্যে সাজানো সারি সারি নৌকা। ছোট ছোট ঢেউয়ের তালে দুলছে সেগুলো। শুধুমাত্র খাল নয় কূলেও সাজানো রয়েছে দৃষ্টি নন্দন নৌকার সারি। এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর সাপ্তাহিক নৌকার হাঁটে। পারিবারিক পর্যায়ে বিলাঞ্চলের মানুষের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয় এ নৌকার। বর্তমানে চলছে বাজার থেকে ছোট ছোট নৌকা ক্রয়ের মৌসুম। আর তাই ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েইভৌগোলিকভাবে পিরোজপুরের নেছারাবাদ ও নাজিরপুর, পার্শবর্তী ঝালকাঠির সদর এবং বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বেশ কিছু এলাকা বিলাঞ্চল। এসব এলাকায় শুকনো মৌসুমে সহজে লোকজন চলাচল করতে পারলেও, বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়ার কোন উপায় থাকে না। বিলাঞ্চলে পর্যাপ্ত রাস্তাঘাট না থাকায় এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াত কিংবা গবাদিপশুর জন্য ঘাস সংগ্রহ, মাছ শিকার এবং বাগান থেকে পেয়ারা ও আমড়া সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করা হয় ছোট ছোট নৌকার যার একটিতে দুই জন থেকে সর্বোচ্চ ৪-৫ জন যাতায়াত করতে পারে। বিলাঞ্চল দিয়ে বেষ্টিত চার উপজেলার মানুষের নৌকা সংগ্রহের সবচেয়ে বড় উৎস নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর খালে অবস্থিত জেলার একমাত্র সাপ্তাহিক নৌকার হাঁট। এ হাঁটে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা আসেন নৌকা ক্রয়ের জন্য। আর নৌকাগুলোর বেশিরভাগই তৈরি হয় নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। এ উপজেলায় কাঠের সহজলভ্যতার জন্যই অনেকে নৌকা তৈরিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। মূলত মেহগনি, চম্পল ও রেইনট্রি গাছ দিয়েই নৌকাগুলো তৈরি হয় যেগুলো কাঠের মান ভেদে ২,৫০০-৮,০০০ টাকায় বিক্রি হয়। একটি নৌকা স্বাভাবিকভাবে ২-৩ বছর ব্যবহার করা যায়। নৌকার পাশাপাশি সাপ্তাহিক এ হাঁটে বৈঠাও বিক্রি হয়। বাংলা বৈশাখ মাস থেকে শুরু হওয়া এ হাঁট চলে আশি^ন মাস পর্যন্ত। আর প্রতি হাঁটে ২৫০-৩০০ নৌকা বিক্রি হয়।