পার্শ্ববর্তী দেশের গোলাম হয়ে আমরা থাকতে চাই না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার এবং সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে’ এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা একটা স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে চাই। আমরা কেউ পার্শ্ববর্তী দেশের গোলাম হয়ে থাকতে চাই না। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা আবার যে স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি, সেটিকে হেলায় হারাতে চাই না। ১৭ বছর ধরে এমন এক স্বৈরাচার শাসক আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছিল ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সেই স্বৈরাচার ভারতে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন, ১৭ বছর ধরে নির্যাতন ও জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন, তাদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন। দেখবেন, রাতে যারা মিছিল করে ‘বারবার দরকার শেখ হাসিনা সরকার’, তারা আর বের হওয়ার সাহস পাবে না। অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টাম-লীতে অনেক দুর্বল লোক আছে, আওয়ামী প্রীতির মানুষও আছে, এদের সরিয়ে দিন। শুধু পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা মানুষ দিয়ে দেশ পরিচালনা করা যায় না, এরা মানুষের সঙ্গে কখনো মেশেনি। মানুষের জন্য কখনো কাজ করেনি। এরা ক্ষমতা ভোগ করতে এসেছে। একটি সুন্দর সরকার গঠন করে বাংলাদেশকে আবার ট্র্যাকে নিয়ে আসুন। বাংলাদেশ লাইনচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
মেজর হাফিজ বলেন, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এদেশের কৃতি সন্তান, তাকে সম্মান করি। বিএনপি ও জনতার তার প্রতি সমর্থন আছে। সংস্কারের জন্য বেশিদিন সময় নেওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার হলেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সব বিষয় সংস্কার করবে। আর আমরা চাই না এই সরকার ব্যর্থ হোক। এই সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়ে যাবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র সফলকাম হয়ে যাবে। আমরা কারও গোলাম হতে চাই না, আমরা সিকিম হতে চাই না। আমরা অবশ্যই চাইবো, ড. ইউনূসের সরকার সফল হোক। আনুপাতিক নির্বাচন চাওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশের সংবিধান ৭১ ও ৭২ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আজ পর্যন্ত কনস্টিটিউশন ভিত্তিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া রয়েছে। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কোনটি হবে। কোনোভাবেই কোনো ব্যক্তির ওপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না। জনগণের মত ও অধিকারকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। বিএনপি মনে করে কনস্টিটিউশন ভিত্তিক যে নির্বাচন প্রক্রিয়া তা অব্যাহত থাকবে। ৩১ দফায় বলা আছে আমরা কী ধরনের সংস্কার চাই।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।