শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৩ অপরাহ্ন

৩ হাজার পরিবারের তালিকা করেছি, ত্রাণ এসেছে ৩০০ পরিবারের

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২০

আমাগো কাছ থাইকা ভোটার কার্ডের ফটোকপি নিছে কিন্তু আমাগো এহন পর্যন্ত কোনো খাওন দেয় নাই। চাইতে গেছি কয় নাই শেষ হইয়া গেছে। আমরা এহন কই যামু। আমাগো সরকারের কাছে প্রার্থনা আমরা বাঁচার মতন বাঁচতে চাই। বৃহস্পতিবার (০৯ এপ্রিল) সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ঢাকাইয়া পট্টি এলাকায় ত্রাণের দাবিতে এভাবে বলছিলেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন যাবৎ এ এলাকার মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে। করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন দিনমজুর মানুষেরা গত কয়েকদিন বন্দী জীবনযাপন করছেন। এর মধ্যে স্থানীয় মেম্বার ও জনপ্রতিনিধিদের নাম করে তাদের কাছ থেকে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি নেয়া হয়েছে ত্রাণ দেয়া হবে বলে। কিন্তু ত্রাণ তারা পায়নি। বাংলা বাজার (শাবানা সিনেমা) এলাকার জাকির হোসেন জানান, কাজ না থাকায় কোনো আয়ও নাই ঘরে খাবারও নাই। সরকার তো কইছে আমাগো ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছায় দিব। মেম্বার চেয়ারম্যানরা ভোটার লিস্টও নিয়া গেছে কিন্তু আমাগো কাছে তো খাবার পৌঁছায় দেয় নাই। এমনকি একটা খবর নেয় নাই যে আমরা বাঁইচা আছি নাকি মইরা গেছি। আবার আমাগো বাসায় আটকাইয়া রাখছে। ঘনিমহেষপুর (ওয়াবদা কলোনি) এলাকার বাসিন্দা ভ্যান চালক পোকা মিয়া জানান, আমরা এখন কোথায় যাব? আমাদের কি কেউ নাই? আমরা দিন আনি দিন খাই। ঘর থেকে বাহির হওয়া বন্ধ করে দিছে। বাহির হইলেই পিটায়। আমাদের খাবার কে দিবে? অন্যদিকে, সত্তরার্ধ্ব এক বৃদ্ধা জানান, আমার স্বামী নাই সন্তান নাই আমাকে কে খাবার দিবে? সরকার কেনো আমাদের জন্য খাবার পাঠাবে? গতকয়েক দিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ০৯ হাজার পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল, আলু, ডাল ত্রাণ হিসেবে দেওয়া হয়। যা উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষের তুলনা খুবই কম। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রশাসন হতে চাহিদা চাওয়া হলে রুহিয়া ইউনিয়ন হতে ২৭’শ, ১৪ নং রাজাগাঁও ইউনিয়ন হতে ১৩’শ কর্মহীনের ত্রাণের চাহিদা দেয়া হয় বলে জানান, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানরা। সব মিলিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলাধীন ২১টি ইউনিয়ন ও ঠাকুরগাঁও পৌর সভায় প্রায় ৮৩ হাজার জনের চাহিদা দেয়া হলেও গতকাল বুধবার পর্যন্ত সারা উপজেলা মিলে প্রায় ০৯ হাজার জনকে এ সাহায্য প্রদান করা হয়। ফলে অবশিষ্ট ত্রাণ প্রত্যাশীদের সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনকে। তবে, ঠাকুরগাঁও জেলায় এ পর্যন্ত ২২ হাজার ৬শ ৩৩ টি পরিবারের মধ্যে ২২৬ দশমিক ৩৩ মে:টন খাদ্য সহায়তা বিতরন করা হয়। অপর দিকে ২ হাজার ৩৩৫ টি পরিবারের মাঝে মোট ৯ লাখ নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। আরও ১৮৭ দশমিক ২১৪ মে: টন খাদ্য ও ৩ লাখ ৪ হাজার নগদ অর্থ মজুদ আছে এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম। এদিকে ত্রাণ বরাদ্দ কম এসেছে জানিয়ে রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মোঃ আ. মান্নান জানান, ২৭শ পরিবারের তালিকা করছি, ত্রাণ আসছে ৩০০ পরিবারের। আগামী শুক্র শনিবারের মধ্যে আরো ৫০০ মতো পাব। ওগুলো তখনি আমরা দিয়ে দিব। আমরা যেভাবে পাচ্ছি সে ভাবেই দিচ্ছি। কেউ বাদ পড়বে না জানিয়ে রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুল হক বাবু জানান, আমরা যে তালিকা তৈরী করে দিয়েছি সে অনুযায়ী ত্রাণ খুব কম আসছে। বিষয়টি আমরা জানিয়েছি। তারা শীঘ্রই পাঠাবে বলে আমাদের জানিয়েছে। একটা কথা শুধু বলতে পারি কেউ বাদ পড়বে না।

ই-খ/খবরপত্র




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com