রংপুরে বিএনপি নেতা আলহাজ্ব কাওছার জামান বাবলার সংবাদ সম্মেলন। গতকাল বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল ১১টা রংপুর মহানগরীর প্রেসক্লাব সংলগ্ন সুমি কমিউনিটি সেন্টার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা কাওছার জামান বাবলা বলেন, আমি বিগত ২০২২ সাল রংপুর ৩ আসন থেকে সংসদ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নির্বাচন না করার প্রেক্ষিতে আমি নির্বাচন করা থেকে বিরত থাকি। ঠিক একই ভাবে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ২০১২ ও ২০১৭ সালে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেন। আমি ওই নির্দেশনাকে মেনে নির্বাচন করা থেকে বিরত থাকি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সুদিন এবং দুর্দিনে আমি দলের সাথে ছিলাম এবং অছি আগামীতেও থাকবো। আমার বিরুদ্ধে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়ে বহুবার জুলুম, নির্যাতন হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পটপরিবর্তনের আগে এবং পরে আমি জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত আছি। একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা যড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমার পৈতৃক বাড়ী রংপুরের পুরাতন শহর মাহিগঞ্জে। দীর্ঘদিন থেকে এখন পর্যন্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে আমাদের রয়েছে সুসম্পর্ক। ঈদ-পূজা পার্বন আমরা সবাই মিলেমিশে একসাথে পালন করে থাকি। কোন হিন্দু সম্প্রদায় বলতে পারবে না, আমি কখনো তাদের উপর জুলুম, নির্যাতন করেছি। গত ৫ই আগস্ট বৈষমা বিরোধী হাত জনতার আন্দোলনে যারা দেশের জন্য আত্মহুতি দিয়ে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি আমি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানাই। যারা এখনো দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের সকলের সু-স্বাস্থ্য কামনা করছি এবং তাদের দীর্ঘায়ু কামনা করছি। এই আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগসহ শরীকদল বারা নির্বিচারে ছাত্র জনতার প্রতি গুলি চালিয়েছে, আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি। যারা অন্যায়কারী তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। গত ১৩ নভেম্বর ২০২৪ মাহিগঞ্জ থানা বিএনপির নেতা মামুনুর রহমান কর্তৃক থানায় ১৮১ জনের নামে যে মামলাটি করেছে তাতে করে অনেকেই এই মামলার সাথে জড়িত নয়। উক্ত আসামীদের হয়রানি ও প্রতিশোধমূলক মামলাটি করেছে তা ন্যাক্কারজনক। এই বিএনপি রাজনীতির কারণে আমার বৃহত্তর এজাক্স জুট মিলস লিঃ, খুলনা সিটি কর্পোরেশন এর মধ্যে ৮১ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত সেই মিলে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমার মিলে আমাকে ঢুকতে দেওয়া মনুনাই। খুলনার প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা মুন্নিজান সুফিয়ানের লোকজন দখল করে নেয়। পরে আমি মিল ফেরত পাই। আমাকে মামলার বাদী তিনি বলেছেন আমি ২৫ জনের নাম দিয়েছি। কিন্তু সেখানে ১৮১ জনের নাম কিভাবে হলো তা আমি জানিনা। গত ১৮ই নভেম্বর ২০২৪ সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি রংপুর মহানগর কমিটির আহবায়ক সামদুজ্জামান সামু সংবাদ সম্মেলন করে আমাকে নিয়ে যে ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দিয়েছে তা উদ্দেশ্যে প্রনোদিত ও বানোয়াট।
মামলার বাদী মামুনুর রহমান স্বীকার করেছেন তাকে দিয়ে মামলাটি করানো হয়েছে। সত্য ঘটনাটি তা রংপুরের জনগণ, সাংবাদিক, গণমাধ্যম কর্মী, সোস্যাল মিডিয়ায় দেখেছেন তার বক্তব্য তিনি বলেছেন তাকে দিয়ে মামলা করানো হয়েছে। আপনারা জেনে রাখবেন রাজনৈতিকভাবে আমার রাজনৈতিক মামলা রংপুরে ৩টির মধ্যে খুলনা থানায় ২টি মামলা। ঢাকা পল্টন থানায় ২০১৬ সালে বিস্ফোরক ও জঙ্গী মামলাসহ আমার বিরুদ্ধে মোট ৭টি মামলা হয়েছে। কোটা আন্দোলনের সময় ২২ জুলাই ২০২৪ আমাকে গ্রেফতার করে রংপুর কারাগারে প্রেরণ করে। ৫ই আগস্ট স্বৈরাচার ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার বিদায়ের পর ৬ই আগস্ট আমি রাত ১০ টায় কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পাই। মাহিগঞ্জের হিন্দু সমাজ ভয়ভীতি ও অবস্থান করছে এটা মোটেও সত্য নয়। গত শনিবার মাহিগঞ্জ পরেশনাথ মন্দিরে ১৫দিন ব্যাপী রাসমেলার উদ্বোধন করেছি আমরা। এখানে শত শত মানুষ উপস্থিত ছিল হিন্দু সমাজের সুধীজন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সুদিনে আমার আগমন ঘটেছে এটা কি সত্য। আমার বিরুদ্ধে ৭টি মামলা চলমান তাহলে আপনারাই বলুন আমি কি দলের কেউ নই। বিগত দিনে এবং বর্তমান পেক্ষাপটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নীতি আদর্শ ও জাতীয়তাবাদী শক্তির সাথে আছি এবং থাকবো। আমাকে রাজনীতি করতে দিবেনা সেটি আমার ব্যাপারে দল সিদ্ধান্ত নিবে। পাটপরিবর্তন ও দেশের মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করবো ইনশাল্লাহ।